নাগরিকপঞ্জি-বিরোধী যুক্ত মঞ্চের মিছিল। ফাইল চিত্র।
পুলিশের নিষেধ এড়িয়েই ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্টের (আইএসএফ) বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকী ও ধৃত অন্যদের মুক্তির দাবিতে নাগরিক মিছিল হল কলকাতায়। পতাকা ছাড়া প্রতিবাদে মিলে গেল কার্যত সব বিরোধী পক্ষই। শাসক তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে অবশ্য পাল্টা বলা হয়েছে, আইনকে ‘চ্যালেঞ্জ’ না করে প্রতিবাদীরা বরং আইন-আদালতের উপরেই ভরসা রাখুন!
শিয়ালদহ থেকে বুধবার মিছিলের ডাক দেওয়া হয়েছিল নাগরিকপঞ্জি-বিরোধী যুক্ত মঞ্চের তরফে। পুলিশ সকাল থেকেই শিয়ালদহ স্টেশন চত্বরের কার্যত দখল নিয়েছিল। বিপুল পুলিশি পাহারার মধ্যেই এ জে সি বোস রোড, এস এন ব্যানার্জি রোড হয়ে মিছিল যায় রানি রাসমণি অ্যাভিনিউ পর্যন্ত। মিছিলে ছিলেন প্রসেনজিৎ বসু, সায়রা শাহ হালিম-সহ নাগরিক আন্দোলনের বহু মুখ। নওশাদ-সহ ধৃতদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবির পাশাপাশি পুলিশের ভূমিকার বিরুদ্ধেও স্লোগান ওঠে মিছিল থেকে। পুলিশের সঙ্গে তর্কাতর্কি হলেও কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা অবশ্য ঘটেনি। মিছিল শেষে রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ে মিছিল শেষে পুলিশের করা ব্যারিকেডের সামনের রাস্তায় বসে সভা করেন প্রতিবাদকারীরা। ঘটনাস্থলে ছিলেন একাধিক ডিসি, এসি এবং বিশাল পুলিশ বাহিনী। নওশাদদের মুক্তির দাবিতে দলের রাজ্য দফতরের সামনে বিক্ষোভ-সভা করেছে বিজেপির সংখ্যালঘু মোর্চাও।
নওশাদদের মুক্তির দাবিতে সরব হয়েছে সব বিরোধী দলই। সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীর বক্তব্য, ‘‘অনুমতি না দিলেও পুলিশকে শেষ পর্যন্ত পিছু হটতে হয়েছে। আমাদের কর্মী-সমর্থকেরাও মিছিলে গিয়েছিলেন। প্রমাণ হল, গোলমাল করার জন্য ওঁরা মিছিল করেননি। ওই দিনও গোলমাল করা ওদের উদ্দেশ্য ছিল না। আরাবুল ইসলামকে ধরা হবে না, অনুব্রত মণ্ডল জেলেও আদর পাবেন আর বিরোধী বিধায়ক নওশাদকে হেফাজতে থাকতে হবে, তাঁর সঙ্গে দেখাও করা যাবে না— এটা কী ভাবে চলতে পারে?’’ নওশাদের মুক্তির দাবি জানিয়ে বহরমপুরে এ দিন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীও বলেছেন, ‘‘তৃণমূলের জন্য আইন আর বিরোধীদের জন্য সব বেআইনি, এটা তো হতে পারে না! বিরোধীদের জন্যই শুধু অনুমতির দরকার পড়ে? আইএসএফের সঙ্গে কংগ্রেসের নির্বাচনী সমঝোতা নিশ্চয়ই হয়নি। তাদের মতবাদ নিয়ে একমত নই। তার মানে এই নয়, বিরোধী হিসেবে তাদের অধিকার কেউ কেড়ে নেবে আর কংগ্রেস তা সমর্থন করবে।’’ বিরোধী হিসেবে আইএসএফের প্রতিবাদের অধিকারের পক্ষে ফের সওয়াল করেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও।
রাজ্যের মন্ত্রী ও তৃণমূল নেতা ফিরহাদ হাকিম পাল্টা বলেছেন, ‘‘আন্দোলনের নামে শহর অচল করে, অবরোধ করে অরাজকতা তৈরি হলে পুলিশকে তো পদক্ষেপ করতেই হবে। আর নওশাদের মুক্তির বিষয়টি তো আদালতের হাতে। যাঁরা পথে নেমেছেন, তাঁরা আইন-আদালতে ভরসা রাখুন। আমাদের বিরুদ্ধে তো আইন-আদালতের কথা বলেন! এখন আইনকে চ্যালেঞ্জ করছেন কেন?’’
মিছিল ঘিরে কলকাতায় কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটলেও ওই মিছিলে যোগ দিতে ভাঙড়, মিনাখাঁ, হাড়োয়া- সহ বিভিন্ন এলাকা থেকে যে কর্মী-সমর্থকেরা রওনা দিয়েছিলেন, গাড়ি তল্লাশির নামে পুলিশ তাদের বাধা দিয়েছে বলে অভিযোগ আইএসএফের। দলের দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা সভাপতি আব্দুল মালেক মোল্লার অভিযোগ, গাড়িতে তল্লাশি চালানোর নামে তাঁদের লোকজনকে বাধা দেওয়ার পাশাপাশি সাধারণ মানুষকেও হয়রানি করা হয়েছে। তাঁর আরও অভিযোগ, তাঁদের শান্তিপূর্ণ সব কর্মসূচিতেই পুলিশ বাধা দিচ্ছে। পুলিশের অনুমতি এবং রাজ্য নেতৃত্বের সম্মতি না থাকায় ভাঙড়ে এ দিন আরাবুল ইসলামদের শান্তি মিছিলের কর্মসূচিও বাতিল হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy