শুভেন্দুর ক্লাবের দুর্গাপুজোর অনুমতি বাতিল
পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথি শহরের চৌরঙ্গী রিক্রিয়েশন ক্লাবের দুর্গাপুজোর অনুমতি দিতে অস্বীকার করছে প্রশাসন। এমনই অভিযোগ তুলেছেন পুজো কমিটির কর্তারা। শুধু এটুকুই নয়, তাঁদের দাবি, রাজ্যের বিরোধী দলনেতা এই ক্লাব কমিটির সভাপতি হওয়ার জন্যই প্রশাসন এক বার অনুমতি দিয়েও তা বাতিল করেছে। তবে হাল ছাড়তে রাজি নয় ওই ক্লাব। ইতিমধ্যেই কলকাতা হাই কোর্টে পুজোর অনুমতি বাতিলের অভিযোগ নিয়ে মামলা দায়ের করেছে কমিটি। শাসক দল তৃণমূলের চক্রান্তেই অনুমতি বাতিল করা হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন ওই ক্লাবের সম্পাদক তুষারকান্তি দাস।
কাঁথি শহরের প্রাণকেন্দ্র চৌরঙ্গীর যে জমিতে ওই দুর্গাপুজোটি হয় তা রাজ্যে সেচ দফতরের অধীন। ওই ক্লাব ২২ বছর ধরে এই পুজো করে এলেও আগে তা অন্যত্র হত। পরে যদিও রাজ্যের প্রাক্তন সেচমন্ত্রী শুভেন্দুর ক্লাবের পুজো সেচ দফতরের ওই জমিতেই হয়ে আসছে। তুষারকান্তি বলেন, ‘‘শুভেন্দুবাবুর আমলে নয়, ওই জমিতে পুজো হচ্ছে বাম আমলে যখন সুভাষ নস্কর সেচমন্ত্রী ছিলেন সেই সময় থেকে।’’ তাঁর দাবি, গত ১৬ অগস্ট যাবতীয় নিয়ম মেনে সেচ দফতরের কাছে অনুমতি চেয়ে চিঠি দেয় কমিটি। এর পরে ১৯ অগস্ট অনুমতি দিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু সে দিনই সেচ দফতরের এক কর্তা অনুমতিপত্রটি চেয়ে নেন কয়েকটি বিষয় যুক্ত করা দরকার, এই কথা বলে। অভিযোগ, এর পরেই নাকি জানানো হয়েছে, শুভেন্দুকে ক্লাবের সভাপতি পদ থেকে না সরানো হলে পুজোর অনুমতি দেওয়া যাবে না। তুষারকান্তির বক্তব্য, ‘‘কেউ চাইলেই তো আর সভাপতি বদলে দেওয়া যায় না। আর ক্লাবের সাধারণ সভা হবে জানুয়ারি মাসে। তার আগেই শুভেন্দুবাবুকে সরিয়ে দেওয়াটাও তো অনৈতিক এবং অবৈধ।’’
চক্রান্ত করেই যে এই অনুমতি বাতিল তা দাবি করে তুষারকান্তি বলেন, ‘‘আমরা দীর্ঘ দিন ধরে এই পুজো করছি। সেরা পুজোর পুরস্কারও পেয়েছি বহু বার। গত বছরে পুজো কমিটিগুলিকে রাজ্য সরকার যে সাহায্য করেছিল সেই অর্থও আমরা পেয়েছি। কিন্তু আচমকা অনুমতি বাতিলের পিছনে চক্রান্ত ছাড়া আর কী কারণ থাকতে পারে?’’ তিনি জানিয়েছেন, সেচ দফতর এমন শর্ত দেওয়ার পরে শুভেন্দুই তাঁকে আইনের পথে হাঁটার পরামর্শ দেন। ২০২০ সালেও শুভেন্দু যে ওই ক্লাবের সভাপতি ছিলেন এবং সরকারি সাহায্য এসেছিল এবং ওই জমি ব্যবহারের অনুমতি মিলেছিল তার নথিও আদালতে জমা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন তুষারকান্তি। ওই ক্লাবেরই আর এক সদস্যের বক্তব্য, ‘‘ক্লাবের পুজো হলেও কাঁথিতে সকলেই এটাকে শুভেন্দুদার পুজো বলে চেনে। আজ তিনি দলবদল করেছেন বলেই এত সমস্যা হচ্ছে। আমরা প্রতি বছর ধুমধাম করে পুজো করি। স্থানীয় বাসিন্দারাও এই পুজোকে ঘিরে আনন্দ করেন। এ বছর সকলেই চিন্তায়, পুজো আদৌ হবে তো!’’
এই প্রসঙ্গে তুষারকান্তি বলেন, ‘‘এই পুজো এলাকার সকলের। ক্লাবের সঙ্গে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই। সব দলের সমর্থকই আছেন আমাদের সঙ্গে। ২০২০ সালে আমাদের উপদেষ্টা মণ্ডলীতে রামনগরের তৃণমূল বিধায়ক অখিল গিরিও ছিলেন।’’ প্রসঙ্গত, ক্লাবের যে দুর্গাপুজো কমিটি রয়েছে ২০২০ সালেও তার সভাপতি ছিলেন শুভেন্দুর ভাই তথা স্থানীয় তৃণমূল সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারী। এমনটাই রয়েছে ক্লাবের স্মারকপত্রে। সেখানে কৃতজ্ঞতা স্বীকারে শুভেন্দুর বাবা শিশির অধিকারী এবং আর এক ভাই দিব্যেন্দুর নামও ছিল। সেই সঙ্গে ছিল রাজ্যের মৎস্য মন্ত্রী অখিল গিরির নামও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy