মৃত সুমন খিলার। নিজস্ব চিত্র
সাতসকালেই যমজ সদ্যোজাতের বাড়িতে হাজির হয়েছিলেন তিন বৃহন্নলা। অভিভাবকদের সঙ্গে দরাদরি করে দু’হাজার টাকা ‘নজরানা’ রফার পরে শুরু হয়েছিল শিশু কোলে নাচ। ঘুরে ঘুরে নাচের সময়ই ঘটল বিপত্তি। অসুস্থ হয়ে মৃত্যু হল এক শিশুপুত্রের।
শুক্রবার ঘটনাটি ঘটেছে ঝাড়গ্রাম জেলার বিনপুর থানার শিলদায়। মৃত শিশুর বাবার অভিযোগে তিন বৃহন্নলাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। অনিচ্ছাকৃত মৃত্যু ঘটানোর মামলায় আজ, শনিবার তাঁদের ঝাড়গ্রাম আদালতে হাজির করানো হবে।
শিলদার বাসিন্দা পেশায় গাড়ি চালক চন্দন খিলারের স্ত্রী তনিমা গত ৪ ডিসেম্বর ঝাড়গ্রাম জেলা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে যমজ পুত্রসন্তান প্রসব করেন। বড় ছেলের নাম রাখা হয় সুমন, ছোটর শোভন। তবে জন্মের পরেই সুমনের হৃদ্যন্ত্রে সমস্যা ধরা পড়ে। চন্দনের অভিযোগ, শুক্রবার সকাল সাড়ে ন’টা নাগাদ তিন জন বৃহন্নলা জোড়া পুত্রসন্তানের জন্য ১২ হাজার টাকা দাবি করেন। চন্দনের কথায়, ‘‘ওঁরা এমন অশালীন আচরণ করছিলেন যে বাধ্য হয়ে টাকা দিতে রাজি হই। দু’হাজার টাকা এ দিন। আর বাকি টাকা পরে দেব বলেছিলাম।’’
চন্দন বলেন, ‘‘সুমনকে কোলে নিয়ে এক জন বৃহন্নলা এক পাক ঘুরতেই ওর শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। প্রথমে শিলদা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র, সেখান থেকে ঝাড়গ্রাম সুপার স্পেশ্যালিটিতে আনা হয়। তবু বাঁচানো গেল না।’’
‘অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রান্সজেন্ডারস্ / হিজড়া ইন বেঙ্গল’-এর সম্পাদক রঞ্জিতা সিংহের প্রতিক্রিয়া, ‘‘শিলদার ঘটনা অত্যন্ত নিন্দনীয়। জুলুম কোনও ভাবেই সমর্থন করা যায় না। তবে সরকারি উদ্যোগের অভাবে বৃহন্নলারা বিকল্প পেশায় যেতে পারছেন না। সমাজের মূলস্রোতের থেকেও বিচ্ছিন্ন থেকে যাচ্ছেন। এতে সমস্যা বাড়ছে।’’
পশ্চিমবঙ্গ বৃহন্নলা সম্প্রদায়ের তরফে রুমির আবার ব্যাখ্যা, ‘‘সদ্যোজাতের শুভকামনায় নাচ-গান একটা পরম্পরা। একাংশ বৃহন্নলা হয়তো জুলুম করেন। কিন্তু তাঁদের জন্য গোটা সম্প্রদায়কে এক বন্ধনীতে ঢুকিয়ে দেওয়া কাম্য নয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy