Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪

শাস্তি কমে মুক্তির অপেক্ষায় ছত্রধর

পুলিশি সন্ত্রাস বিরোধী জনগণের কমিটির নেতা ছত্রধরের সঙ্গেই ওই সংগঠনের অন্য পাঁচ নেতার শাস্তি কমিয়ে দিয়েছে হাইকোর্ট।

ছত্রধর মাহাতো। ফাইল চিত্র।

ছত্রধর মাহাতো। ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ অগস্ট ২০১৯ ০৪:০৫
Share: Save:

স্বাধীনতা দিবস কার্যত মুক্তির বার্তা নিয়ে এল ছত্রধর মাহাতোর কাছে। দেশদ্রোহের দায় থেকে অব্যাহতি তো পেলেনই। জেল থেকেও ছত্রধরের মুক্তি আসন্ন। কারণ, কলকাতা হাইকোর্ট বুধবার তাঁর যাবজ্জীবন কারাবাসের মেয়াদ কমিয়ে ১০ বছরের সাজা দিয়েছে। ২০০৯ থেকে জেলে থাকার সুবাদে সেই ১০ বছর কারাবাসের মেয়াদও প্রায় শেষ। তাই তাঁর মুক্তি এখন সময়ের অপেক্ষা।

পুলিশি সন্ত্রাস বিরোধী জনগণের কমিটির নেতা ছত্রধরের সঙ্গেই ওই সংগঠনের অন্য পাঁচ নেতার শাস্তি কমিয়ে দিয়েছে হাইকোর্ট। মেদিনীপুরের কাঁটাপাহাড়িতে পুলিশকে লক্ষ্য করে বিস্ফোরণের মামলায় ২০১৫ সালে ছত্রধর-সহ ছ’জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয় নিম্ন আদালত। হাইকোর্ট এ দিন ছত্রধর-সহ চার জনের শাস্তির মেয়াদ কমিয়ে ১০ বছর করেছে। বেকসুর মুক্তি দিয়েছে রাজা সরখেল ও প্রসূন চট্টোপাধ্যায়কে। তাঁদেরও বছর দশেক জেল খাটা হয়ে গিয়েছে। বিচারপতি মহম্মদ মুমতাজ খান ও বিচারপতি জয় সেনগুপ্তের ডিভিশন বেঞ্চ ছত্রধর ছাড়াও সাগুন মুর্মু, সুখশান্তি বাস্কে ও শম্ভু সোরেনকে দেশদ্রোহের দায় থেকে মুক্তি দিয়েছে।

রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল (এজি) কিশোর দত্ত এবং পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) শাশ্বতগোপাল মুখোপাধ্যায় জানান, ২০০৯ সালের সেপ্টেম্বরে গ্রেফতার হন ছত্রধর। পরে ধরা পড়েন অন্য পাঁচ জন। তাঁদের বিরুদ্ধে ইউএপিএ বা বেআইনি কার্যকলাপ প্রতিরোধ আইনের বিভিন্ন ধারায় এবং ষড়যন্ত্র, অস্ত্র ও বিস্ফোরক মজুত এবং দেশদ্রোহের অভিযোগে মামলা হয়। নিম্ন আদালতের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ২০১৫-য় হাইকোর্টে আপিল করেন ছত্রধরেরা। তাঁদের কৌঁসুলি শেখর বসু ও শৌভিক মিত্রের যুক্তি, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ইউএপিএ-তে মামলা করার আগে রাজ্য সরকার নিরপেক্ষ কোনও সংস্থার অনুমোদন নেয়নি।
অনুমোদন না-নেওয়ার বিষয়টি নজর এড়িয়ে যায় নিম্ন আদালতেরও। তাই পুলিশের আনা অভিযোগের ভিত্তি নেই।

রাজ্য প্রশাসন সূত্রের খবর, ছত্রধর এখন প্যারোলে আছেন। হাইকোর্টের কৌঁসুলিদের একাংশ জানান, জেল হেফাজতে থাকাকালীন কোনও বন্দির বিচার চললে বিচারাধীন সময়টাও কারাবাসের মেয়াদের সঙ্গে যুক্ত হয়। সেই হিসেবে ছত্রধরদের ১০ বছরের কারাবাস প্রায় শেষ। কারণ, ২০০৯ সালের সেপ্টেম্বর থেকে তাঁরা জেল খাটছেন। তাঁদের স্থায়ী মুক্তি কবে হবে, সেটা ঠিক করবে রাজ্য প্রশাসন।

ছত্রধরের মুক্তি আসন্ন জেনেও তাঁর স্ত্রী নিয়তি মাহাতো এ দিন বলেন, ‘‘আইনের চোখে আমার স্বামী তো সেই অপরাধীই থেকে গেলেন!’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE