প্রতীকী ছবি।
উদয়পুরে সর্বভারতীয় সঙ্কল্প শিবিরে গৃহীত নীতিতে স্পষ্ট ইঙ্গিত ছিলই। রাজ্যের সঙ্কল্প শিবিরের পরে প্রদেশ কংগ্রেসের নেতৃত্বে পরিবর্তনের হাওয়া আরও জোরালো হল!
কলকাতায় প্রদেশ কংগ্রেসের সঙ্কল্প শিবিরে উপস্থিত ছিলেন এআইসিসি-র চার জন নেতা। শিবির আয়োজন ঘিরে অব্যবস্থা, প্রথম সারির বেশ কিছু নেতার অনুপস্থিতি তাঁদের নজরে এসেছিল। শিবিরের অবসরে রাজ্য দলের কয়েক জন নেতার সঙ্গে একান্তে কথাও বলেছিলেন তাঁরা। শিবির শেষে এআইসিসি-র তিন পর্যবেক্ষক নিজেদের মধ্যে গোটা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনায় বসেন। কংগ্রেস সূত্রের খবর, রাজ্যের শিবিরের পরে কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষকদের তরফে য়ে রিপোর্ট এআইসিসি-র সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) কে সি বেণুগোপালের কাছে জমা পড়েছে, সেখানে বাংলায় দ্রুত নেতৃত্ব বদলের কথাই বলা হয়েছে।
এআইসিসি-র নির্ধারিত ‘এক ব্যক্তি, এক পদ’ নীতি মানলে বাংলায় প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি পদে বদল অবধারিতই। কারণ, লোকসভায় বিরোধী দলের নেতার পাশাপাশি প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি পদে রয়েছেন অধীর চৌধুরী। সেই সঙ্গে রয়েছেন সংসদের পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির (পিএসি) চেয়ারম্যানের দায়িত্বেও। কংগ্রেস সূত্রের বক্তব্য, সাম্প্রতিক কয়েকটি ঘটনা ‘এক ব্যক্তি, এক পদ’ নীতি কার্যকর করার পরিস্থিতির সঙ্গে আরও নতুন মাত্রা যোগ করেছে। ‘এক ব্যক্তি, এক পদ’ প্রসঙ্গে স্বয়ং অধীরবাবু অবশ্য বলে রেখেছেন, ‘‘এটা এআইসিসি-র ব্যাপার। এআইসিসি যেমন চাইবে, তেমনই হবে।’’
প্রদেশ কংগ্রেসে নেতৃত্ব বদলের জন্য দু’রকম পরিকল্পনার সূত্র দলীয় হাই কম্যান্ডের সম্মতির জন্য জমা দিয়েছেন এআইসিসি-র পর্যবেক্ষকেরা। প্রথম সূত্র, বর্ষীয়ান কোনও নেতাকে প্রদেশ সভাপতির দায়িত্ব দিয়ে অন্তত পাঁচ জন কার্যনির্বাহী সভাপতি নিয়োগ করা। ওই কার্যনির্বাহী সভাপতিদের মধ্যে অন্তত এক জন করে মুসলিম ও মহিলা মুখ রাখার প্রস্তাব দিয়েছেন তাঁরা। আর দ্বিতীয় সূত্র, তুলনায় কম বয়সের নেতার হাতে প্রদেশ কংগ্রেসের দায়িত্ব তুলে দেওয়া। কারণ, বিধানসভায় শূন্য হয়ে যাওয়ার পরে এখন রাজ্যে কংগ্রেসের নতুন করে বিশেষ কিছু হারানোর নেই। নতুন এবং তুলনায় পরবর্তী প্রজন্মের কাউকে এনে পরীক্ষা চালানোর এটাই উপযুক্ত সময় হতে পারে।
যুব কংগ্রেসে এখন সদস্য সংগ্রহ এবং নির্বাচন প্রক্রিয়া চলছে। যুব কংগ্রেসের এই প্রক্রিয়ায় মূল দলের কেউ হস্তক্ষেপ করবেন না বলে এআইসিসি-র নীতি-নির্দেশিকা আছে। কিন্তু যুব কংগ্রেসের প্রদেশ সভাপতি পদে প্রার্থী শাহিনা জাভেদকে অনলাইনে ভোট দেওয়ার জন্য মুর্শিদাবাদ জেলা কংগ্রেস মুখপাত্রের লিখিত ‘নোট’ বেরিয়ে যাওয়ার পরে দলের অন্দরে বিতর্ক বাধে। বিতর্কের প্রেক্ষিতে আবার ওই চিঠি প্রত্যাহারও করে নেওয়া হয় বলে কংগ্রেস সূত্রের খবর। অন্য দিকে, আবার প্রদেশ কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদকের (সংগঠন) মাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি জারি করে মালদহ জেলা কংগ্রেসে তিন জনকে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নিয়োগের সিদ্ধান্ত ঘিরেও বিতর্ক বাধে। সাংগঠনিক পুনর্গঠন ও নির্বাচন প্রক্রিয়া চলাকালীন এমন নিয়োগে এআইসিসি সম্মতি দিয়েছে কি না, সেই প্রশ্নও জমা পড়েছে দিল্লিতে। এই সব ঘটনাই পরিবর্তনের পালে আরও বাতাস দিয়েছে।
দলের এক বর্ষীয়ান নেতার কথায়, ‘‘পরিবর্তন হলে যিনিই দায়িত্ব পান, লোকসভা নির্বাচনের আগে তাঁকে কিছু সময় দিতে হবে। তাই এই প্রক্রিয়া দ্রুত মিটে গেলেই ভাল। আর যদি পরিবর্তন একান্তই না করার হয়, তা হলে সেটাও দ্রুত স্পষ্ট করে দেওয়া প্রয়োজন।’’ প্রসঙ্গত, কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গান্ধী হাসপাতালে ভর্তি হলেও তাঁর পূর্ব সম্মতির ভিত্তিতে চণ্ডীগড় আঞ্চলিক কংগ্রেসের ( টেরিটোরিয়াল কংগ্রেস কমিটি) নতুন সভাপতির নাম ঘোষণা করে দিয়েছে এআইসিসি।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy