ফাইল চিত্র
মুখ ও কাঠামো— দুই ক্ষেত্রেই দলে আমূল পরিবর্তন আনল তৃণমূল কংগ্রেস। নতুন মুখে তরুন প্রজন্মকে জায়গা দেওয়ার বার্তার পাশাপাশি ‘এক ব্যক্তি এক পদ’ নীতি মেনে ছয় মন্ত্রী-সহ সাংগঠনিক দায়িত্ব থেকে সরানো হল বহু হেভিওয়েট নেতাকে। এই পরিবর্তনের ধাক্কায় মলয় ঘটক, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের মতো মন্ত্রীরা সাংগঠনিক পদ হারালেও ব্যতিক্রমী দলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। তাঁর জেলায় হাত পড়েনি।
বিধানসভা ভোটের পর পরই সংগঠনে এই রদবদল শুরু করেছিল তৃণমূল। দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক পদে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মনোনয়ন থেকে শুরু হয়ে তা এ বার পৌঁছল জেলা স্তরে। দলের তরফে সোমবার প্রকাশিত তালিকায় রাজ্য স্তরেও সহ-সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে একাধিক নতুন মুখ আনা হয়েছে। জেলার স্তরে সভাপতি বদলের পাশাপাশি ব্লক ও শহর স্তরেও বড় সংখ্যায় নুতন মুখ আনা হয়েছে। মলয়, জ্যোতিপ্রিয়ের মতো জেলা সভাপতি পদের দায়িত্ব থেকে বাদ পড়া মন্ত্রীদের মধ্যে আছেন হাওড়ার অরূপ পায়, পুলক রায়, সৌমেন মহাপাত্র ও বর্ধমানের স্বপন দেবনাথ। বাদ গিয়েছেন নদিয়ার জেলা সভাপতি, সাংসদ মহুয়া মৈত্র এবং কলকাতা উত্তরের সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়।
উত্তর ২৪ পরগনার সাংগঠনিক শক্তি নিয়ে দীর্ঘদিন চিন্তিত ছিলেন তৃণমূল নেতৃত্ব। এ বারের বিধানসভা ভোটেও হারানো জমির অনেকটাই অধরা তৃণমূলের। মন্ত্রিসভাতেও খাদ্যের বদলে জ্যোতিপ্রিয়ের হাতে এখন তুলনায় কম গুরুত্বপূর্ণ বন দফতর। জেলা সভাপতি পদ থেকেও বনমন্ত্রীকে সরিয়েছে তৃণমূল। জেলার সাংগঠনিক কাঠামোকে চার ভাগে ভাগ করে দমদম-ব্যারাকপুর লোকসভা কমিটির সভাপতি করা হয়েছে নৈহাটির বিধায়ক পার্থ ভৌমিককে। জেলার বাকি তিনটি লোকসভা আসনকেন্দ্রিক জেলা কমিটির দায়িত্বেও আনা হয়েছে নতুন মুখ। বনগাঁ লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত বিধানসভা আসনগুলিতেও এ বার খুব বেশি সুবিধা করতে পারেনি তৃণমূল। এই সাংগঠনিক জেলার দায়িত্ব পেয়েছেন বিধানসভা ভোটে পরাজিত আলোরানি সরকার। বসিরহাটেও পুরনো নেতাদের বদলে দায়িত্ব পান সরোজ বন্দ্যোপাধ্যায়। বারাসাতে সভাপতি হন অশনী মুখোপাধ্যায়।
কলকাতার দু’টি লোকসভা আসনে দু’টি জেলা কমিটি। উত্তরে সুদীপবাবুর জায়গায় সভাপতি করা হয়েছে বিধায়ক তাপস রায়কে। দক্ষিণে আগের সভাপতি দেবাশিস কুমারই দায়িত্বে থাকছেন। দক্ষিণ ২৪ পরগনার ডায়মন্ড হারবার-যাদবপুর জেলা কমিটির সভাপতি থাকছেন সাংসদ শুভাশিস চক্রবর্তী। তবে সুন্দরবন জেলা কমিটির সভাপতি করা হয়েছে বিধায়ক যোগরঞ্জন হলদারকে।
হুগলি জেলা কমিটিকে দু’ভাগে ভাগ করে দলের দুই পুরনো নেতা দিলীপ যাদব এবং তপন দাশগুপ্তের বদলে নতুন হাতে দায়িত্ব গিয়েছে। নতুন করে গঠিত হুগলি-শ্রীরামপুর জেলা সাংগঠনিক কমিটির সভাপতি হয়েছেন বিধায়ক স্নেহাশিস চক্রবর্তী। আর আরামবাগ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি রামেন্দু সিংহ রায়।
দার্জিলিং জেলাকে সাংগঠনিক ভাবে পাহাড় এবং সমতলে ভেঙেছে তৃণমূল। তবে কোনও কমিটিরই শীর্ষে রাখা হয়নি প্রাক্তন মন্ত্রী গৌতম দেবকে। পাহাড়ের সভাপতি হয়েছেন রাজ্যসভার তৃণমূল সাংসদ শান্তা ছেত্রী এবং সমতলে পাপিয়া ঘোষ। গোষ্ঠী-দ্বন্দ্বে জেরবার কোচবিহারেও পুরনো নেতাদের সরিয়েছে তৃণমূল। বিধানসভা ভোটে হারলেও এখানে চেয়ারম্যান করা হয়েছে উদয়ন গুহ ও সভাপতি করা হয়েছে গিরীন্দ্র বর্মণকে। নদিয়া জেলাকে দু’ভাগে ভেঙে উত্তরে (কৃষ্ণনগর লোকসভা) দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে জয়ন্ত সাহাকে। কৃষ্ণনগর দক্ষিণের (রানাঘাট) দায়িত্বে প্রাক্তন মন্ত্রী রত্না কর ঘোষ। গোষ্ঠী-দ্বন্দ্বের কারণে মুর্শিদাবাদ জেলাকেও দুই ভাগে ভেঙে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। জঙ্গিপুরে স্থানীয় সাংসদ খলিলুর রহমান ও বহরমপুরে শাওনি সিংহ রায় দায়িত্ব পেয়েছেন। বাঁকুড়া, দুই মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রাম শীর্ষ স্তরেও পরিবর্তন করা হয়েছে। দলের পাশাপাশি জেলা স্তরে তৃণমূলের মহিলা ও শ্রমিক সংগঠনেও রদবদল হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy