Advertisement
২২ ডিসেম্বর ২০২৪
Cjandernagar

বিসর্জনের যাত্রায় সংযত চন্দননগর, বিতণ্ডা কৃষ্ণনগরে

সাঙে বিসর্জনই ‘ঐতিহ্য’ দাবি করে কৃষ্ণনগরের বাসিন্দাদের একাংশ গোঁ ধরে বসেছিলেন।

কৃষ্ণনগর রাজবাড়ির জগদ্ধাত্রী পুজো। সোমবার। ছবি: সুদীপ ভট্টাচার্য

কৃষ্ণনগর রাজবাড়ির জগদ্ধাত্রী পুজো। সোমবার। ছবি: সুদীপ ভট্টাচার্য

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ নভেম্বর ২০২০ ০৩:৫০
Share: Save:

‘আলোর শহর’ চন্দননগরে এ বার জগদ্ধাত্রীর ভাসান বাহারি আলোকে সরিয়ে রেখেই। কিন্তু রাজ্যের যে আর এক শহরে জগদ্ধাত্রী পুজোই প্রধান উৎসব, নদিয়ার সেই কৃষ্ণনগরে সাঙে (‌বেহারাদের কাঁধে) বিসর্জনের দাবি নিয়ে টানাপড়েন চলল শেষ পর্যন্ত। তবে সোমবার রাত পর্যন্ত যা পরিস্থিতি তাতে বড় কোনও অঘটন না ঘটলে আজ, মঙ্গলবার কৃষ্ণনগরের বিসর্জনে কোনও সাং বেরচ্ছে না।

কথিত যে, কৃষ্ণনগর রাজবাড়ি থেকেই জগদ্ধাত্রী পুজো পৌঁছেছিল ভাগীরথীর পশ্চিম পাড়ে তদানীন্তন ফরাসডাঙায় (এখন চন্দননগর)। তবে হুগলির এই শহরে পুজো চার দিনের, সেখানে কৃষ্ণনগরে এক দিনের পুজো। গোড়া থেকেই করোনা সুরক্ষা বিধি মানার বিষয়ে নিয়ন্ত্রণ দেখিয়ে এসেছে চন্দননগর। সোমবার কৃষ্ণনগরেও পুষ্পাঞ্জলি থেকে ঠাকুর দেখা, সব কিছুতেই নাগরিকদের সুরক্ষা বিধি মেনে চলা এবং ভিড় না করার প্রবণতা ছিল চোখে পড়ার মতো।

কিন্তু সাঙে বিসর্জনই ‘ঐতিহ্য’ দাবি করে কৃষ্ণনগরের বাসিন্দাদের একাংশ গোঁ ধরে বসেছিলেন। এঁদের মতো তরুণ প্রজন্মই সংখ্যাগুরু, যাঁদের চাপে বারোয়ারি কর্মকর্তারাও শোভাযাত্রা না করার বিষয়ে হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করতে উদ্যত হয়েছিলেন। রবিবার সকালে এই নিয়ে প্রশাসনের ডাকা বৈঠক ভেস্তে দিয়ে বেরিয়েও যান তাঁরা। কিন্তু বিকেল থেকে হাওয়া ঘুরে যেতে শুরু করে। পুলিশের তরফে বারোয়ারি কর্মকর্তাদের ডেকে আলাদা আলাদা করে কথা বলা হতে থাকে। আদালতের নির্দেশ অমান্য করলে কী ধরনের আইনি পদক্ষেপ করা হতে পারে, ,তা জানিয়ে দেওয়া হয়।

আরও পড়ুন: টিকা দিতে তৈরি রাজ্য, সরব মমতা, আজ মোদীর করোনা-বৈঠক

প্রতিটি বারোয়ারির কর্মকর্তাদের হাইকোর্টের নির্দেশের প্রতিলিপি দিয়ে ‘রিসিভ’ করিয়েও নেওয়া হয়। এর পরেই বড় বারোয়ারিগুলি জানিয়ে দেয়, তারা সাং বার করবে না। তবে কয়েকটি ছোট বারোয়ারি সোমবার রাত পর্যন্ত এই নিয়ে কথা চালিয়ে গিয়েছে বলে পুলিশ সূত্রের খবর।

এর কার্যত উল্টো ছবি হুগলিতে। চন্দননগর এবং ভদ্রেশ্বর মিলিয়ে দেড়শোরও বেশি পুজো কমিটি রয়েছে কেন্দ্রীয় কমিটির অধীনে। ওই কমিটির সম্পাদক শুভজিৎ সাউ বলেন, ‘‘চন্দননগরে আলোকসজ্জা সংবলিত শোভাযাত্রা বন্ধ, এটা ভাবতেই অবাক লাগছে। কিন্তু মানুষের ভালর কথা ভেবে আমরা সমবেত ভাবে আবেগ সংবরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’’ শহরের গোন্দলপাড়ার বাসিন্দা, অবসরপ্রাপ্ত কলেজ শিক্ষক তথা আঞ্চলিক ইতিহাসের চর্চাকার তপনকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মানুষ কতটা সচেতন হলে এমন সিদ্ধান্ত সহজে নিতে পারেন, পুজো উদ্যোক্তারা তার স্বাক্ষর রেখে গেলেন।’’

আরও পড়ুন: জোড়া কাটা হাত জুড়ে নজির রাজ্যে

রাতে কৃষ্ণনগর পুলিশ জেলার সুপার বিশ্বজিৎ ঘোষ বলেন, “প্রায় সমস্ত বারোয়ারিই বলেছে যে সাং বের করবে না। দু’একটি বারোয়ারি এখনও নিমরাজি। তাদের সঙ্গে কথাবার্তা চলছে। আশা করছি, পরিস্থিতি বিচার করে কেউই সাং‌ বের করবেন না।”

অন্য বিষয়গুলি:

Chandernagar Krishnanagar Idol Immersion
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy