কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার রদবদলের পর কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পদ পান বাঁকুড়ার সাংসদ সুভাষ। ফাইল চিত্র।
কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী এ বাংলারই মানুষ। তাই তাঁর হাতে বাংলার শতাব্দী প্রাচীন কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব ইঞ্জিনিয়ারিং সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির (আইআইইএসটি) সমস্যার সুরাহা হবে বলেই মনে করেছিলেন অনেকে। কার্যক্ষেত্রে দেখা গেল সব সমস্যা শুনেও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুভাষ সরকার পাশ কাটিয়ে গেলেন। উপরন্তু ‘শিবপুর যেমন চলছে, ভালই চলছে’ ধরনের একটি বার্তাও দিলেন প্রতিষ্ঠানে দাঁড়িয়ে। যা শুনে রীতিমতো হতাশ শিবপুর ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অধ্যাপক, শিক্ষক এবং অশিক্ষক কর্মীদের একাংশ।
দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির বার্ষিক মান নির্ণয়ে এ বছর অনেকটাই পিছিয়ে গিয়েছে শিবপুর আইআইইএসটি। যাদবপুর, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়, প্রেসিডেন্সির শিক্ষার মান যখন নির্ণয় তালিকায় ক্রমশ উপরের দিকে উঠছে, তখন শিবপুরের স্থান ১৭ নম্বর থেকে নেমে এসেছে ২৭ নম্বরে। এই অবনতি ঠেকাতে কী পদক্ষেপ করা উচিত তা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিদর্শনে আসা কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জানাবেন বলে আশা করেছিলেন অনেকেই। পাশাপাশি শিবপুরের হস্টেলে নিযুক্ত অশিক্ষক কর্মীদের বেতন কাঠামো কেন্দ্রীয় স্কেলের আওতায় আনার ব্যাপারে যে আন্দোলন চলছে, মন্ত্রী তারও সমাধান করতে পারেন বলে ভাবা হয়েছিল। বাস্তবে দেখা গেল কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুভাষ এগুলির কোনওটাই করলেন না। শনিবার শিবপুর আইআইইএসটি এসে সুভাষ বললেন, ‘‘শিবপুর আইআইইএসটি শিক্ষার মান এখন যথেষ্ট ভাল। অনেক দফতরে এ বারও প্রায় ১০০ শতাংশ প্লেসমেন্ট হয়েছে। বেশির ভাগ শাখাতেই ৯০ শতাংশের বেশি।’’
দীর্ঘ দিন ধরেই শিবপুর ইঞ্জিনিয়ারিং প্রতিষ্ঠানের ছাত্রাবাসের ৫০ জন অশিক্ষক কর্মী তাঁদের পাওনাগণ্ডা নিয়ে এবং কেন্দ্রীয় স্কেলে বেতন দেওয়ার দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। সেই প্রসঙ্গে জানতে চাওয়া হলে আইআইইএসটি অধিকর্তা পার্থসারথী চক্রবর্তীকে পাশে বসিয়ে সুভাষ জানিয়ে দেন, এঁদের কেন্দ্রীয় স্কেল অনুযায়ী নিয়োগ করার কোনও আইন নেই। তবুও কী ভাবে বিষয়টি সমাধান করা যেতে পারে তা আমরা দেখছি। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর এই মন্তব্যের পরেই ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে অশিক্ষক কর্মীদের মধ্যে।
শিবপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ এখন বেশ কিছু সমস্যার মধ্যে দিয়ে চলেছে। আইআইইএসটি সূত্রে খবর, এখনও সমস্ত পড়ুয়ার জন্য ছাত্রাবাসের ব্যবস্থা করা যায়নি। বহু শিক্ষক ও কর্মীর পদ শূন্য হয়ে পড়ে রয়েছে। কমেছে গবেষণার সংখ্যা, মেধাবী পড়ুয়ার সংখ্যাও। এই পরিস্থিতিতে জাতীয় স্তরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির মান পড়ে যাওয়া নিয়ে বাংলার কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রীর কাছে কিছু সমাধানের আশা করেছিল শিবপুর আইআইইএসটি। কিন্তু দেখা গেল সুভাষ এই পরিস্থিতির কারণ অনুসন্ধানের চেষ্টাই করলেন না। বদলে শিবপুর আইআইইএসটি নতুন হস্টেল তৈরি সহ একাধিক কাজের ফিরিস্তি তুলে ধরেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী।
উল্লেখ্য, কেন্দ্রে নরেন্দ্র মোদী সরকারের মন্ত্রিসভায় নতুন রদবদলের পর কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পান বাঁকুড়ার সাংসদ সুভাষ। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে তিনি রাজ্যের তৎকালীন মন্ত্রী প্রয়াত সুব্রত মুখোপাধ্যায়কে এক লক্ষেরও বেশি ভোটে হারিয়েছিলেন বাঁকুড়া কেন্দ্রে। সুভাষ বাঁকুড়ারই মানুষ। পেশায় স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ। ২০২১ সালের ৮ জুলাই কেন্দ্রের শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy