ছবি: সংগৃহীত।
আশির দশকের শেষে সুন্দরবনের কুমিরের সংখ্যা বাড়াতে ভগবতপুরে কুমির প্রকল্প চালু করেছিল রাজ্যের বন দফতর। এত দিন পরে সেই প্রকল্পের আধুনিকীকরণের উদ্যোগ শুরু হয়েছে। কেন্দ্র এতে সায় দিয়েছে। উল্লেখযোগ্য ভূমিকাও থাকছে তাদের। বন দফতরের এক আধিকারিক জানাচ্ছেন, আধুনিকীকরণ প্রকল্পের জন্য কেন্দ্রীয় সরকার ইতিমধ্যেই এক কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। কুমির প্রজননের বাকি সব আর্থিক দায়দায়িত্ব নেবে রাজ্য সরকারই।
সুন্দরবনে নোনা জলে যে-কুমির থাকে, সংরক্ষণের ক্ষেত্রে তাদের ‘বিপন্ন’ প্রজাতির প্রাণী হিসেবেই দেখা হয়। বনকর্তাদের দাবি, বিপন্ন বলেই ওই কুমিরের সংখ্যা বাড়ানোর কাজে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভগবতপুরের প্রকল্প অনেকাংশে সফল। ওই প্রকল্পে জন্মানো কুমির বড় হয়ে গেলে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয় সুন্দরবনের বিভিন্ন খাঁড়িতে। ওই প্রজনন কেন্দ্রের জন্যই সুন্দরবনে কুমিরের সংখ্যা বেড়েছে।
সমস্যাও আছে কিছু কিছু। বন দফতরেরই একাংশ বলছেন, দীর্ঘদিন ধরে ওই প্রজনন কেন্দ্রে পরিকাঠামোর কোনও রকম উন্নয়ন হয়নি। প্রজনন কেন্দ্রে তো শুধু কুমিরের সংখ্যা বাড়িয়ে গেলেই হয় না। চিকিৎসা-সহ তাদের যথাযথ তত্ত্বাবধানেরও প্রয়োজন হয়। বন দফতরের বন্যপ্রাণ শাখার এক আধিকারিক জানান, চিকিৎসা-সহ ঠিকঠাক দেখভালের জন্য আধুনিকীকরণ প্রকল্পের মধ্যে প্রজনন কেন্দ্রের উন্নয়ন ছাড়াও কুমিরের চিকিৎসার জন্য আলাদা জায়গা তৈরি করা হবে। অসুস্থ কুমিরদের জন্য পৃথক জায়গা প্রয়োজন। দীর্ঘদিন ধরেই এই বিষয়ে ভাবনাচিন্তা চলছিল। এই বিষয়ে কয়েকটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাও নানান পরামর্শ দিয়েছিল। সেই সব মিলিয়েই কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে আধুনিকীকরণের সবিস্তার পরিকল্পনা রিপোর্টের আকারে পাঠানো হয়। সম্প্রতি তাতে ছাড়পত্র দিয়েছে কেন্দ্র।
কুমিরের বংশবৃদ্ধিতে এত উদ্যোগ কেন? বনকর্তাদের বক্তব্য, সুন্দরবনের জীববৈচিত্রে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয় কুমির। জল-বাস্তুতন্ত্রের ভারসাম্য বজায় রাখতে তাদের ভূমিকা অনস্বীকার্য। তাই কুমিরের সংখ্যা বাড়ানোর দায়বদ্ধতা আছে। ‘কোর’ এলাকার খাঁড়িতে কুমিরের সংখ্যা বাড়িয়ে রক্ষী হিসেবে তাদের ব্যবহার করে চোরাশিকার আটকানোর রাস্তাও খুঁজছেন তাঁরা। বন্যপ্রাণ শাখার এক কর্তা বলেন, ‘‘খাঁড়িতে কুমির থাকলে সেখান দিয়ে গভীর বনে ঢুকে চোরাশিকার সম্ভব নয়।’’
চোরাশিকারিরা যদি কুমিরদেরই শিকার করে, তা হলে কী হবে? ‘‘কুমির শিকার করা খুব কঠিন,’’ বললেন ওই বনকর্তা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy