জাতীয় স্তরে নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহদের দিকে একের পর এক তির নিশানা করলেন। কিন্তু রাজ্য রাজনীতির জ্বলন্ত সব প্রশ্নে এ বার ২১শে-র মঞ্চে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সুর থাকল নিচু তারে বাঁধা।
তবে পাহাড়ে অশান্তি বন্ধ করতে তিনি যে বদ্ধপরিকর, তা অবশ্য এ দিনও বলেছেন মমতা। তাঁর কথায়, ‘‘বাংলাকে কিছুতেই ভাগ হতে দেব না। আমাদের ভয় দেখিয়ে লাভ হবে না। তবে পাহাড় নিয়ে দিল্লিকে খেলা বন্ধ করতে হবে!’’ যুব তৃণমূল সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার নাম না করে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, ‘‘একটা বন্ধ ডেকে যাঁরা ভাবছেন বাংলাকে দ্বিখণ্ডিত করে দেবেন, তাঁরা ভুল করছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জীবন দেবেন, ক্ষমতা দিয়ে দেবেন কিন্তু বাংলাকে ভাগ হতে দেবেন না।’’
কিন্তু সদ্যই বসিরহাটের ঘটনা ঘিরে উত্তপ্ত হয়েছিল রাজ্য রাজনীতি। পাহাড়ে অশান্তির আগুন এখনও নেভেনি। বিভিন্ন জেলার ব্লকে ব্লকে শাসক দলের গোষ্ঠী-সংঘর্ষের জেরে রক্তারক্তি ঘটছে। কলেজে কলেজে ছাত্র ভর্তির জন্য টাকা আদায়ের অভিযোগে বারবার হস্তক্ষেপ করতে হচ্ছে শিক্ষামন্ত্রীকে। তোলাবাজির থাবা থেকে রেহাই পাচ্ছেন না স্বয়ং তৃণমূলের সাংসদ সুগত বসু ও তাঁর মা, প্রাক্তন সাংসদ কৃষ্ণা বসুও। কিন্তু পাহাড় নিয়ে হুঁশিয়ারি ছাড়া শুক্রবার তৃণমূল নেত্রীর গলায় বাকি বিষয়ে তেমন কোনও বার্তা শোনা গেল না।
তৃণমূলের একটি সূত্রের ব্যাখ্যা, বিজেপি-র বিরুদ্ধে লড়াইকেই এ বার পাখির চোখ করে তুলতে চেয়েছেন মমতা। তাই গেরুয়া শিবিরের রাজনীতির মোকাবিলাই তাঁর বক্তৃতার সিংহভাগ জুড়ে ছিল। সেটা করতে গিয়ে সংগঠনের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে আর ঢোকেননি তৃণমূল নেত্রী। বরং, নিজে জাতীয় রাজনীতির দিকে মনোনিবেশ করে অভিষেককে দিয়ে রাজ্য সংক্রান্ত বিষয় বলিয়ে নিয়েছেন।
মুখ্যমন্ত্রী অবশ্য সার্বিক ভাবে আহ্বান জানিয়েছেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে কেউ যাতে উত্তেজনা না ছড়ায়, সে দিকে তৃণমূল কর্মীদেরও নজর রাখতে হবে। আপত্তিকর কিছু দেখলে পুলিশকে জানাতে হবে। আর ব্লকে ব্লকে শান্তি বাহিনীও সক্রিয় থাকবে।
বিরোধীরা দাবি করছেন, এ বার মুখ্যমন্ত্রীর ২১শে-র ভাষণ থেকে রাজ্যের প্রকৃত পরিস্থিতি সম্পর্কে কোনও বার্তাই পাওয়া যায়নি। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্রের কথায়, ‘‘সারদা-নারদ,পাহাড়, বসিরহাট, শিল্প বা টেট— সব কিছু থেকেই মুখ্যমন্ত্রী হাত ধুয়ে ফেললেন! কোথায় শিল্প, কর্মসংস্থান? শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে টেট-এ ব্যাপক দুর্নীতি। সে সব নিয়ে কোনও কথা নেই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy