পশ্চিমবঙ্গে পঞ্চায়েতের চেয়ে লোকসভা নির্বাচনে ভাল ফল করাকেই পাখির চোখ করছেন বিজেপি নেতারা। প্রতীকী ছবি।
পশ্চিমবঙ্গে দলের যা পরিস্থিতি, তাতে আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে সব কেন্দ্রে প্রার্থী দেওয়া অসম্ভব বলেই স্বীকার করে নিচ্ছেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। দলের কেন্দ্রীয় এক নেতার কথায়, ‘‘বিধানসভা নির্বাচনের পরে সমর্থকেরা যে ভাবে বসে গিয়েছিলেন, তার থেকে পরিস্থিতি অনেকটাই ভাল হয়েছে। তবে পঞ্চায়েতে সব কেন্দ্রে প্রার্থী দেওয়ার অবস্থায় নেই দল। তবু আমাদের লক্ষ্য হল, আগামী ছ’মাসের মধ্যে রাজ্যে দলকে যথাসম্ভব গুছিয়ে নেওয়া।’’
বিধানসভা নির্বাচনে ভরাডুবির পর থেকেই রাজ্যে বুথ-ভিত্তিক কমিটি গড়ে তোলার উপরে জোর দিয়েছিলেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। সেই কাজের সময়সীমা ধার্য করা হয়েছিল গত ডিসেম্বর। কিন্তু কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের পর্যবেক্ষণ, এ পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গে কেবল মণ্ডল পর্যায়ের কমিটি তৈরি হয়েছে। কাজেই এখনও একাধিক বুথ নিয়ে ‘শক্তি কেন্দ্র’ এবং তার পরে বুথ-ভিত্তিক কমিটি গড়ার কাজ করতে হবে রাজ্য নেতৃত্বকে। প্রতি বুথে ২১ থেকে ২৫ জনের কমিটি গড়ার লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে এগোচ্ছে রাজ্য বিজেপি। কিন্তু বুথ কমিটিই যেখানে তৈরি হয়নি, সেখানে পঞ্চায়েতে প্রার্থী দেওয়া সম্ভব হবে না বলে স্বীকারই করে নিয়েছেন ওই কেন্দ্রীয় নেতা। তাঁর পর্যবেক্ষণ, সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকাগুলি বাদ দিলেও পশ্চিমবঙ্গে পঞ্চায়েতের সব কেন্দ্রে প্রার্থী দেওয়ার পরিস্থিতিতে নেই বিজেপি।
যদিও সূত্রের মতে, পশ্চিমবঙ্গে পঞ্চায়েতের চেয়ে লোকসভা নির্বাচনে ভাল ফল করাকেই পাখির চোখ করছেন বিজেপি নেতারা। গেরুয়া শিবিরের বক্তব্য হল, তৃতীয় বার নরেন্দ্র মোদীকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে জিতিয়ে আনতে হলে রাজ্যে লোকসভা নির্বাচনে ভাল ফল করা অনেক বেশি জরুরি। তাই লোকসভাকে মাথায় রেখে আগামী ছ’মাসের মধ্যে বুথ-ভিত্তিক কমিটি গড়ে ফেলার জন্য রাজ্য নেতৃত্বকে নির্দেশ দিয়েছেন বিজেপির কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষকেরা। তেমনই এক পর্যবেক্ষকের কথায়, ‘‘আমাদের লক্ষ্যই হল, আগামী ছ’মাসের মধ্যে রাজ্যে সংগঠনের পুরো কাঠামোকে শক্তিশালী করা, যা লোকসভা নির্বাচনে জিততে আমাদের সাহায্য করবে।’’
রাজ্য নেতৃত্বের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বও যে দলের চাপ বাড়াচ্ছে, তা ঘরোয়া ভাবে মেনে নিয়েছেন কেন্দ্রীয় নেতারা। বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির শীর্ষ নেতাদের প্রকাশ্য তরজা দলের কর্মী-সমর্থকদের মনোবল নষ্ট করছে এবং তাঁরা বিভ্রান্ত হয়ে পড়ছেন বলেই মত কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের। সম্প্রতি দিল্লিতে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নড্ডার সঙ্গে রাজ্য নেতৃত্বের বৈঠকে তাই অন্তর্কলহ সবার আগে থামানোর উপরে জোর দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় নেতারাও বুঝতে পারছেন, এক সুরে কাজ না করতে পারলে লোকসভায় পশ্চিমবঙ্গে ২৪টি আসন জেতার যে লক্ষ্যমাত্রা হাতে নেওয়া হয়েছে, তা ছোঁয়া অসম্ভব। বরং দুই অঙ্কের নীচে নেমে আসতে পারে আসন সংখ্যা। বিজেপির এক কেন্দ্রীয় নেতার দাবি, ‘‘রাজ্যে মতপার্থক্য ভুলে একসঙ্গে কাজ করার উপরে জোর দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব সবেতে নজর রাখছেন। প্রয়োজনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy