সব ঠিক থাকলে আগামী মকর সংক্রান্তির আগেই রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোট সেরে ফেলতে পারেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই ভোট-বছরেই একশো দিনের কাজ প্রকল্পে বাংলার জন্য শ্রম বাজেট এক ধাক্কায় প্রায় ৩০% বাড়িয়ে দিল মোদী সরকার। চলতি আর্থিক বছরে ওই প্রকল্পের আওতায় রাজ্যকে ১৮ কোটি শ্রম দিবস তৈরির সুযোগ দিয়েছিল কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক। ২০১৭-১৮ অর্থবর্ষের জন্য তা বাড়িয়ে ২৩ কোটি করতে রাজ্যকে অনুমোদন দিয়েছে কেন্দ্র। যার অর্থ, ওই পরিমাণ কাজের সুযোগ তৈরি করতে পারলে একশো দিনের প্রকল্পে আগের বছরের তুলনায় অন্তত ১ হাজার কোটি টাকা অতিরিক্ত বরাদ্দ পেতে পারে বাংলা।
লক্ষ্যণীয়, কেন্দ্রের এই পদক্ষেপের সঙ্গে সাউথ ব্লক-নবান্ন সাম্প্রতিক রাজনৈতিক সম্পর্কের সঙ্গতি নেই। বৃহস্পতিবারও কলকাতায় মিছিল করে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বঞ্চনার অভিযোগ তুলেছে তৃণমূল। প্রশ্ন হল, তা সত্ত্বেও কেন শ্রম বাজেট বাড়াল কেন্দ্র? বিশেষত, পঞ্চায়েত ভোট যখন আসন্ন!
কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের যুগ্ম সচিব অপরাজিতা সারেঙ্গির বক্তব্য, ‘‘চলতি আর্থিক বছরে একশো দিনের প্রকল্পে অন্যদের তুলনায় ভাল কাজ করেছে পশ্চিমবঙ্গ। প্রকল্পের টাকায় ভাল সম্পদ তৈরি হয়েছে। বর্ধমান, বাঁকুড়া, নদিয়ায় পরিদর্শনে গিয়ে আমি নিজেও তা দেখেছি। তাই শ্রম বাজেট উল্লেখযোগ্য ভাবে বাড়ানো হল।’’ তাঁর কথায়, ‘‘কোনও রাজ্যের জন্য শ্রম বাজেট এতটা বাড়ানো এক প্রকার নজিরবিহীন।’’ তবে সঙ্গে কেন্দ্রের সতর্কতা, প্রকল্পের বাড়তি টাকায় একই পুকুর যেন দু’বার খুঁড়ে না দেখানো হয়!
বাস্তব হল, প্রকল্পের বাস্তবায়ন পর্যালোচনা করে দেখতে ৭ দিন আগে বৈঠক ডেকেছিল গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক। শ্রম বাজেটে বৃদ্ধির খবর সে দিনই পায় নবান্ন। তার পরেও এই ‘সাফল্যের’ কথা রাজ্য সরকার কেন প্রচার করেনি, সেটা রহস্য বৈকি! তবে এ ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় এ দিন বলেন, ‘‘পঞ্চায়েত দফতরের সব কর্মীদের এই সাফল্যের জন্য অভিনন্দন জানাচ্ছি। এ বার আমাদের চ্যালেঞ্জ আরও বেড়ে গেল। প্রকল্প রূপায়ণে গোটা দেশের মধ্যে প্রথম স্থানে থাকতে হলে লক্ষ্যমাত্রার (২৩ কোটির) ৫% বেশি শ্রম দিবস তৈরি করে দেখাতে হবে।’’ কিন্তু এর পরেও কি বলা যাবে একশো দিনের প্রকল্পে বাংলার সঙ্গে বঞ্চনা করছে দিল্লি? জবাব কিছুটা এড়িয়ে সুব্রতবাবু বলেন, ‘‘প্রকল্প বাবদ কেন্দ্র টাকা দেয় ঠিকই। তবে আকছার টাকা দিতে দু-তিন মাস দেরি করে। এ বার যেন তা না হয়, তার জন্য কেন্দ্রের সঙ্গে কথা বলব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy