Advertisement
E-Paper

বোতল নিয়ে বাড়ি থেকে বেরোচ্ছেন এক ভাই, পা টলছে কিশোরের, আর কী ছিল হাতে? দেখছে পুলিশ

পাশের বাড়ি থেকে পাওয়া সিসিটিভি ফুটেজ থেকে পুলিশ জানতে পেরেছে, রাত ১২টা ৫১ মিনিটে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন প্রণয়, প্রসূন এবং ১৪ বছরের প্রতীপ। বেরোনোর সময়ে এক জনের হাতে ছিল বোতল।

(বাঁ দিকে) বোতল হাতে বাড়ি থেকে বেরোচ্ছেন এক ভাই। টলমল পায়ে গাড়ির দিকে হেঁটে যাচ্ছে কিশোর (ডান দিকে)।

(বাঁ দিকে) বোতল হাতে বাড়ি থেকে বেরোচ্ছেন এক ভাই। টলমল পায়ে গাড়ির দিকে হেঁটে যাচ্ছে কিশোর (ডান দিকে)। ছবি: সিসিটিভি ফুটেজ থেকে পাওয়া।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৭:৩৫
Share
Save

মঙ্গলবার গভীর রাতে ট্যাংরার বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন তিন জন— প্রণয় দে, প্রসূন দে এবং ১৪ বছরের কিশোর প্রতীপ দে। পাশের বাড়ি থেকে পাওয়া সিসি ক্যামেরার ফুটেজ থেকে পুলিশ জানতে পেরেছে, রাত ১২টা ৫১ মিনিটে বেরিয়েছিলেন তাঁরা। সেই ফুটেজেই দেখা গিয়েছে, বাড়ি থেকে বেরোনোর সময়ে এক ভাইয়ের হাতে ছিল একটি বোতল। সেটি কিসের বোতল, তা এখনও স্পষ্ট নয়। ফুটেজে কিশোরকে কিছুটা টলমল পায়ে গাড়ির দিকে হেঁটে যেতে দেখা গিয়েছে। তবে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করে জেনেছে, কিশোরের কিছু শারীরিক অসুস্থতা ছিল। সেই কারণেও সে টলতে পারে।

জানা গিয়েছে, মাঝেমধ্যেই শারীরিক অসুস্থতায় ভুগত কিশোর। দুই ভাইয়ের বয়ান অনুযায়ী, বাকিদের সঙ্গে সোমবার রাতে তাকেও পায়েসের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে খাওয়ানো হয়েছিল। ফলে তার উপর দিয়ে যে শারীরিক এবং মানসিক ধকল গিয়েছে, তা স্পষ্ট। হয়তো সেই কারণেই গাড়ির দিকে যাওয়ার সময়ে তার পা টলছিল। কিশোরের হাতেও কাটা দাগ পাওয়া গিয়েছে।

বুধবার ট্যাংরার অটল শূর রোডের ওই বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয় তিন জনের দেহ। বাড়ির দুই বধূ রোমি দে এবং সুদেষ্ণা দে ছাড়াও মৃত্যু হয়েছে কিশোরী কন্যা প্রিয়ম্বদার। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট থেকে স্পষ্ট যে, তাঁদের তিন জনকেই খুন করা হয়েছে। খুনের পরেই কি বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন প্রণয়, প্রসূনরা?

সিসিটিভিতে দেখা যাচ্ছে, প্রথমে বাড়ি থেকে বেরোলেন এক ভাই। তাঁর পরনে নীল রঙের টি-শার্ট। তিনি গ্যারাজের দিকে এগিয়ে গেলেন। গাড়ি বার করলেন। তার পর গাড়ি থেকে বেরিয়ে আবার বাড়িতে ঢুকলেন। কিছু ক্ষণ পরে বাড়ি থেকে বেরিয়ে আবার গাড়িতে উঠে পড়লেন তিনি। এর পর বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসে কিশোর। তার পরনে ছিল সাদা রঙের একটি জ্যাকেট (হুডি)। ভিডিয়ো থেকে স্পষ্ট যে, তার পা কিছুটা টলছিল। গাড়ির সামনের আসনে উঠে বসল সে। তার পর বাড়ি থেকে বেরিয়ে এলেন আর এক ভাই। তাঁর পরনেও সাদাটে পোশাক। তাঁর ডান হাত বুকের কাছে ভাঁজ করে রাখা। সেই হাতেই ধরা একটি বোতল। তিনি গাড়ির পিছনের আসনে গিয়ে ওঠেন। তার কিছু ক্ষণ পর গাড়িটি বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়।

কিসের বোতল নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন এক ভাই, তাতে পানীয় ছিল কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়। দুর্ঘটনার পর গাড়ি থেকে তেমন কিছু পাওয়াও যায়নি। সেই রাতে দুই ভাই মদ্যপান করেছিলেন কি না, তা-ও এখনও জানায়নি পুলিশ।

ট্যাংরার দে বাড়িতে ভিতর এবং বাহির মিলিয়ে প্রায় ২০টি সিসি ক্যামেরা বসানো রয়েছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত একটি ফুটেজও দেখতে পারেননি তদন্তকারীরা। ফুটেজগুলি পাসওয়ার্ড দ্বারা সুরক্ষিত। পুলিশের অনুমান, ঘটনার দিন সব সিসি ক্যামেরা ইচ্ছাকৃত ভাবে বন্ধ করে রাখা হয়েছিল। ওই ফুটেজ উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। প্রণয়, প্রসূন এবং প্রতীপ গুরুতর জখম অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। বুধবার ভোর ৩টে নাগাদ তাঁদের গাড়ি বাইপাসের ধারে মেট্রোর পিলারে ধাক্কা মারে। তার পরেই ট্যাংরার বাড়িতে তিন দেহ উদ্ধার করা হয়।

সংক্ষেপে
  • ১৯ ফেব্রুয়ারি রাত ৩টের পরে অভিষিক্তা মোড়ের কাছে একটি স্তম্ভে ধাক্কা দিয়েছিল তাঁদের গাড়ি। প্রণয় এবং প্রসূন দাবি করেছিলেন, আত্মহত্যা করার জন্যই ওই পদক্ষেপ করেছিলেন তাঁরা। প্রণয়ের বয়ানও খতিয়ে দেখতে চায় পুলিশ।
  • সোমবার রাতে প্রসূনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাঁর দাদা প্রণয় দে এবং প্রণয়ের কিশোর পুত্র প্রতীপ এখনও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। প্রতীপ জানিয়েছে, কাকা তাকেও খুন করার চেষ্টা করেছিলেন। মঙ্গলবার প্রসূনকে আদালতে হাজির করানো হয়েছিল। ৬ মার্চ পর্যন্ত তাঁকে পুলিশি হেফাজতে থাকতে বলা হয়েছে।
Tangra Tangra Murder Case cctv footage unnatural death

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}