কলকাতার প্রাক্তন নগরপাল রাজীব কুমার। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
রাজ্যের গোয়েন্দা প্রধান রাজীব কুমারের নাগাল পেতে মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছে সিবিআই। এক দিকে যেমন আইনি লড়াইয়ের জন্যে তৈরি কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা, তেমনই রাজীবকে পেতে শহরের বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশিও চালানো হচ্ছে। একই সঙ্গে নতুন করে রাজ্য পুলিশের ডিজি বীরেন্দ্রকে ফের চিঠি দেওয়া হয়েছে বলে সিবিআই সূত্রে খবর। অন্য দিকে, পার্কস্ট্রিটে রাজীব কুমারের বাসভবনে গিয়ে হাজিরা দেওয়ার জন্য বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় নোটিস ধরানো হয়েছে।
সিবিআইয়ের একটি সূত্র জানাচ্ছে, ডিজিকে পাঠানো ওই চিঠিতে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা জানতে চেয়েছেন, এডিজি (সিআইডি) রাজীব কুমারের সঙ্গে কী ভাবে যোগাযোগ করা যাবে? কোন ফোন নম্বরে তাঁকে পাওয়া যাবে? এ নিয়ে তিনটি চিঠি পৌঁছল ডিজি-র কাছে। এখানেই থেমে থাকেনি কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। সিবিআইয়ের চারটি দল এ দিন সকাল থেকেই শহরের বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি অভিযান চালায়। বুধবার ১২ জনের যে বিশেষ দল গঠন করা হয়েছিল, সেই দলই আজ চার ভাগে ভাগ হয়ে ওই তল্লাশি অভিযানে নামে। ঘটনাচক্রে, এ দিনই দিল্লিতে অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ঠিক তার পরেই কলকাতায় রাজীবের খোঁজে অতি তৎপরতার সঙ্গে তল্লাশি শুরু হয়েছে।
এ দিন দুপুরে আলিপুরের আইপিএস মেস, বাইপাসের ধারে একটি বিলাসবহুল হোটেল এবং ৩৪ পার্কস্ট্রিটে রাজীবের সরকারি বাসভবনে পৌঁছয় কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের একাধিক দল। সিবিআই সূত্রে জানা গিয়েছে, গোয়েন্দারা রাজীবের খোঁজে শহরের বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি অভিযান চালাচ্ছেন। জানা গিয়েছে, আইপিএস মেসে সিবিআইয়ের চার আধিকারিক প্রায় ৪৫ মিনিট থাকার পর পৌঁছন রুবির মোড়ে বাইপাসের ধারের ওই বিলাসবহুল হোটেলে। সেখানকার বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশির পাশাপাশি গোয়েন্দারা পৌঁছে যান হোটেলের রান্নাঘরেও। হোটেলের ভিতরে যখন সিবিআই তল্লাশি চলছে, বাইরে তখন কলকাতা পুলিশের সংখ্যাও বাড়ানো হয়।
আরও পড়ুন: বিনা ছাড়পত্রে উদ্বোধনে ডাক কেন? ডেউচায় না যেতে মোদীকে আর্জি বিজেপি সাংসদের, প্রশ্ন উদ্দেশ্য নিয়েও
পরে ওই হোটেলের এক পদস্থ কর্মী জানান, সিবিআই অফিসাররা কেন এসেছিলেন তা তিনি জানেন না। রাজীব কুমার সম্পর্কে তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হলে ওই কর্মী সাংবাদিকদের পাল্টা প্রশ্ন করেন, ‘‘কে রাজীব কুমার?’’ তিনি এ বিষয়ে কোনও কথাই বলতে চাননি।
অন্য দিকে, রাজীবের পার্কস্ট্রিটের বাসভবনে গিয়ে এ দিন দুপুর ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৬০ ধারায় দ্বিতীয় নোটিস ধরান গোয়েন্দারা। সিবিআই সূত্রে জানা গিয়েছে, গোয়েন্দাদের একটি দল হাজরা এবং কালীঘাট এলাকাতেও ঘোরাফেরা করেছেন। সিবিআইয়ের এই তৎপরতার পর রাজীবের বাসভবনের সামনেও বাড়ানো হয়েছে সাদা পোশাকে থাকা কলকাতা পুলিশের সংখ্যাও।
আরও পড়ুন: ইতিহাস খুঁড়ে বাগান সাজাবে বন দফতর
গত শনিবার থেকে কলকাতার প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমার ‘নিরুদ্দেশ’। আড়ালে থেকেই তিনি প্রথমে বারাসতের এমপি-এমএলএ কোর্টে আগাম জামিনের আবেদন করেন। কিন্তু সেই চেষ্টা ব্যর্থ হয়। এর পর বারাসত জেলা আদালতে আবেদন জানিয়ে খুব একটা সুবিধা করে উঠতে পারেননি তাঁর আইনজীবীরা। মূল মামলা যেখানে রয়েছে অর্থাৎ আলিপুর আদালতে আবেদন করতে বলেন বিচারক। ইতিমধ্যেই বারাসত আদালত থেকে মামলার নথিপত্র (কেস রেকর্ড) আলিপুর আদালতে পৌঁছে গিয়েছে। সিবিআইয়ের পক্ষ থেকে জামিন অযোগ্য গ্রেফতারি পরওয়ানা জারির আবেদন করা হয়েছে বলে আদালত সূত্রে খবর।
সারদা মামলা এবং সিবিআই আধিকারিকদের নিরাপত্তার জন্যে শহরে পৌঁছে গিয়েছে এক কোম্পানি সিআরপিএফ। রাজীব কুমার শহরে রয়েছে, নাকি তিনি রাজ্যের বাইরে রয়েছেন —তা এখনও স্পষ্ট নয়। এ বিষয়ে রাজ্যের তরফ থেকেও স্পষ্ট করে কিছু জানানো হয়নি। শুধু জানানো হয়েছে, তিনি ১৭ দিনের ছুটিতে রয়েছেন। নতুন করে যে চিঠি ডিজি-র কাছে পৌঁছেছে, সে বিষয় এখনও নবান্ন থেকে কোনও বার্তা সিবিআইয়ের কাছে পৌঁছয়নি বলে খবর। শুধু ডিজিই নয়, রাজীবের সন্ধান পেতে রাজ্যের মুখ্যসচিব মলয় দে এবং স্বরাষ্ট্র সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে আগেই চিঠি দিয়েছেন গোয়েন্দারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy