গোপাল দলপতি, হৈমন্তী গঙ্গোপাধ্যায়ের বেহালার ফ্ল্যাটে সিবিআই। গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
নতুন বাংলা বছরের প্রথম দিন রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালাচ্ছে সিবিআই। পয়লা বৈশাখের বিকেলে গোয়েন্দাদের একটি দল পৌঁছয় নিয়োগ দুর্নীতিতে নাম জড়়ানো গোপাল দলপতির বেহালার ফ্ল্যাটেও। ওই ফ্ল্যাটের বাইরে থেকেই মাস দুয়েক আগে নিয়োগ সংক্রান্ত বেশ কিছু নথি পাওয়া গিয়েছিল। বাইরে থাকা বেশ কিছু নথি আনন্দবাজার অনলাইনও ওই জায়গা থেকে উদ্ধার করে। শনিবার বেহালার সেই ফ্ল্যাটেই পৌঁছল সিবিআই।
শনিবার সকালেই গোপালের পূর্ব মেদিনীপুরের পটাশপুরের বাড়িতেও হানা দিয়েছেন গোয়েন্দারা। সেখানে গোপালের পরিবারের সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। চালানো হয়েছে তল্লাশিও। এর পর শনিবার বিকেলে বেহালার ৮০/৩ রাজা রামমোহন রায় রোডের ফ্ল্যাটেও গোয়েন্দারা হাজির হলেন।
মাস দুয়েক আগে নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে ধৃত এবং বহিষ্কৃত তৃণমূল নেতা কুন্তল ঘোষ নাম নিয়েছিলেন হৈমন্তী গঙ্গোপাধ্যায়ের। তাঁর সঙ্গে গোপাল দলপতির কী সম্পর্ক সেটাও জানিয়েছিলেন কুন্তল। তার পরেই গোপাল, হৈমন্তীর বেহালার ফ্ল্যাটের বাইরে পাওয়া যায় বেশ কিছু নথি। তাতে চাকরিপ্রার্থীদের নাম এবং রোল নম্বর লেখা ছিল বলে দাবি। অভিযোগ, চাকরি পেয়েছেন এমন তিন জনের নাম সেই তালিকাতে ছিল। তালিকার তিনটি সংখ্যার সঙ্গে ২০১৪ সালের তিন টেট প্রার্থীর রোল নম্বর হুবহু মিলে গিয়েছিল। জানা যায়, গোপাল এবং হৈমন্তী একসময় বেহালার এই ফ্ল্যাটে থাকতেন। পরে গোপাল চলে যান। হৈমন্তী সেখানে থাকতেন একাই। বর্তমানে ফ্ল্যাটটি বন্ধ অবস্থায় ছিল। সিবিআই সেখানে ঢুকে তল্লাশি চালাচ্ছে।
এর আগে গোপালকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ইডি। তিনি দাবি করেন, হৈমন্তীর সঙ্গে নিয়োগ দুর্নীতির কোনও যোগ নেই। নিয়োগ দুর্নীতিতে অন্য এক ধৃত তাপস মণ্ডল দাবি করেন, ২০১৭ সালে গোপাল প্রাথমিক চাকরিপ্রার্থীদের কাছ থেকে প্রায় ৯৪ লক্ষ টাকা তুলে কুন্তলকে দিয়েছেন। গত ৩১ জানুয়ারি সিজিও কমপ্লেক্সে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-এর দফতরে গোপাল এবং তাপসকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন তদন্তকারীরা। তার পর গত ৭ ফেব্রুয়ারি ইডি দফতরে গিয়ে নানা নথি দিয়ে এসেছিলেন গোপাল। তার পর শনিবারের এই সিবিআই হানা।
বেহালার ওই ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হওয়া কাগজে ৯ অঙ্কের একাধিক সংখ্যা লেখা ছিল। ৯ অঙ্কের রোল নম্বর ব্যবহার হয় প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার ক্ষেত্রে। এ ছাড়া, ওই ফ্ল্যাটের সামনে থেকে ২০১৩ সালের একটি ‘শেয়ার অ্যাপ্লিকেশন’ ফর্মও পাওয়া গিয়েছিল। যা ‘বোর্ড অব ডিরেক্টর’কে লেখা। কাগজপত্র নিয়ে ধন্ধ তৈরি হয়েছিল আগেই। নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ নথি এই ফ্ল্যাটে মিলতে পারে, অনুমান করেই সেখানে শনিবার বিকেলে পৌঁছে গিয়েছেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। প্রায় ঘণ্টা দুই তাঁরা সেখানে ছিলেন, পরে ফ্ল্যাট সিল করে বেরিয়ে যায় সিবিআই।
গোপাল আরমান গঙ্গোপাধ্যায় নামে পরিচিত। তিনি হৈমন্তী গঙ্গোপাধ্যায়ের স্বামী। ইডির চার্জশিটে আরমান ট্রেডার্স নামে একটি সংস্থার উল্লেখ রয়েছে। ওই সংস্থার মালিক গোপালই বলে দাবি করা হয়েছে। হৈমন্তীর ফ্ল্যাট থেকে এই আরমানকে লেখা চিঠিও পাওয়া গিয়েছিল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy