প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ টেটপ্রার্থীদের নম্বরের যে ‘ব্রেকআপ’ প্রকাশ করেছিল ২০২২ সালের শেষে, সেখানেও ওই তিন রোল নম্বর রয়েছে। গ্রাফিক্স: শৌভিক দেবনাথ।
নিয়োগ দুর্নীতিতে কি জড়িয়ে আছেন হৈমন্তী গঙ্গোপাধ্যায়? শনিবার সকালে তাঁর বেহালার ফ্ল্যাটের অদূরে নোংরার স্তূপ থেকে বেশ কিছু কাগজ, পুরনো ফাইল পাওয়া গিয়েছে। ওই কাগজের মধ্যে দু’টিতে অনেকগুলো সংখ্যার তালিকা রয়েছে। মনে করা হচ্ছে, তা চাকরিপ্রার্থীদের রোল নম্বর। কারণ, ওই কাগজে থাকা তালিকার তিনটি সংখ্যার সঙ্গে ২০১৪ সালের তিন টেট প্রার্থীর রোল নম্বর হুবহু মিলে গিয়েছে। প্রাথমিক ভাবে কাকতালীয়ও মনে হলেও, বিক্ষোভরত চাকরিপ্রার্থীদের দাবি, ওই রোল নম্বর যাঁদের, তাঁরা ইতিমধ্যেই চাকরি পেয়েছেন। অন্য দিকে, প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ টেটপ্রার্থীদের নম্বরের যে ‘ব্রেকআপ’ প্রকাশ করেছিল ২০২২ সালের শেষে, সেখানেও ওই রোল নম্বর রয়েছে। ফলে মনে করা হচ্ছে, এই দুইয়ের মধ্যে কোনও যোগসূত্র থাকলেও থাকতে পারে।
নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে নাম জড়িয়েছে গোপাল দলপতির। সেই গোপালের ‘স্ত্রী’ হৈমন্তীর বাড়ির কাছ থেকে শনিবার বেশ কিছু কাগজ মিলেছে। তার মধ্যে দু’টি কাগজে নয় অঙ্কের একাধিক সংখ্যা লেখা। নয় অঙ্কের রোল নম্বর ব্যবহার হয় প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার ক্ষেত্রে। অন্য দিকে, ২০২১ সালে প্রাথমিক শিক্ষকের ১৬ হাজার ৫০০ শূন্যপদের জন্য নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়। ২০২০ সালে ওই নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি জারি করে পর্ষদ। ২০১৪ ও ’১৬ সালে যাঁরা টেট পাশ করেছিলেন, সেই প্রার্থীদেরই ওই দফায় নিয়োগ করা হয়েছিল। ২০২১ সালে তাঁদের ইন্টারভিউ হয়। ২০১৪ সালে যাঁরা টেট পাশ করেছিলেন, কিছু দিন আগে ২০২২ সালে তাঁদের নম্বরের ব্রেক আপ (লেখা এবং ইন্টারভিউয়ে কত পেয়েছেন) দিয়েছিল পর্ষদ। সেই তালিকা থেকেও দেখা যাচ্ছে, তিন প্রার্থীর রোল নম্বর হুবহু মিলে যাচ্ছে হৈমন্তীর ফ্ল্যাটের অদূর থেকে পাওয়া কাগজপত্র থেকে।
টেট পাশ আন্দোলনকারীরা দীর্ঘ দিন গান্ধী মূর্তির পাদদেশে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। তাঁদের একাংশের দাবি, হৈমন্তীর বাড়ির অদূর থেকে পাওয়া কাগজে থাকা রোল নম্বরের ব্যক্তিা চাকরি পেয়েছেন। এ প্রসঙ্গে ২০১৪ সালের টেট প্রার্থী অচিন্ত্য সামন্ত বলেন, ‘‘পর্ষদের তালিকায় থাকা ওই প্রার্থীরা, যাঁরা চাকরি করছেন, তাঁদের রোল নম্বর মিলে যাচ্ছে হৈমন্তীর বাড়ির কাগজের সঙ্গে।’’
হৈমন্তীর ফ্ল্যাটের অদূরে নোংরার স্তূপ থেকে কাগজ, পুরনো ফাইল পাওয়া গিয়েছে। সেখানে ২০১৩ সালের একটি ‘শেয়ার অ্যাপ্লিকেশন’ ফর্মও পাওয়া গিয়েছে। সেটি আবার ‘বোর্ড অব ডিরেক্টর’কে লেখা। হৈমন্তীর বাবা সাধনগোপাল গঙ্গোপাধ্যায়ের নাম লেখা একটি কাগজ থেকে অনুমান করা হচ্ছে সেটি ব্যবসা সংক্রান্ত কোনও কাগজ। আবার তার মধ্যে একটি সিনেমার চিত্রনাট্য লেখা কাগজও মিলেছে। নিয়োগে ‘দুর্নীতি’তে গ্রেফতার হওয়া তাপস মণ্ডল এবং কুন্তল ঘোষের অভিযোগের ভিত্তিতে গোপালকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। এ বার তাঁকে এবং তাঁর ‘স্ত্রী’ হৈমন্তীকে নিয়ে নতুন রহস্য তৈরি হয়েছে। কুন্তলই প্রথম হৈমন্তীর নাম প্রকাশ্যে আনেন। এই মহিলা যে গোপালের দ্বিতীয় স্ত্রী এবং তাঁদের বিচ্ছেদ হয়ে গিয়েছে, সে দাবি করেছেন হৈমন্তীর মা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy