কলকাতা হাই কোর্টে বিনয় মিশ্রকে জিজ্ঞাসাবাদের দাবি সিবিআই-এর। নিজস্ব চিত্র।
ভিডিয়ো কনফারেন্স শুনানি নয়, গরু ও কয়লা পাচার মামলার অভিযুক্ত বিনয় মিশ্রকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কলকাতা হাই কোর্টে আর্জি জানাল সিবিআই। সোমবার বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের বেঞ্চে মামলার শুনানির সময় বিচারপতির প্রশ্নের উত্তরে সিবিআই-এর আইনজীবী ওয়াই জে দস্তুর বলেন, ‘‘আমরা ভার্চুয়াল শুনানিতে রাজি নই। কারণ ভিডিয়ো কনফারেন্সিং-এ শুনানির সময় অভিযুক্তের কাছ থেকে সঠিক উত্তর না-ও পাওয়া যেতে পারে।’’
বিনয় মিশ্রের দেশে ফেরার জন্য শর্তও রেখেছেন সিবিআই-এর আইনজীবী। তাঁর মন্তব্য, ‘‘১২ জুলাইয়ের মধ্যে দেশে ফিরে তদন্তে সহযোগিতা করুন বিনয়। সে ক্ষেত্রে কোনও রেড কর্নার নোটিস থাকবে না তাঁর বিরুদ্ধে। গ্রেফতারও করা হবে না।’’ যদিও বিনয়ের আইনজীবী মিলন মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে তাঁর মক্কেল ভার্চুয়াল শুনানিতে সম্মত।
এ প্রসঙ্গে সিবিআই-এর মত, অভিযুক্ত যদি দেশে থাকতেন তবে ভার্চুয়াল শুনানির কথা ভাবা যেত। কিন্তু তিনি বিদেশে পালিয়ে গিয়ে আত্মগোপন করে আছেন। এ ক্ষেত্রে তাঁকে সরাসরি জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন। দস্তুর বলেন, ‘‘বিনয়ের দু’টি ভোটার কার্ড। দুইয়ের বেশি পাসপোর্ট। তাঁকে ভিডিয়ো কনফারেন্স-এর অনুমতি দেওয়া যেতে পারে না। কারণ, তিনি কোথায় কেউ জানে না। এ দেশের বাসিন্দাই তিনি নন। ভিডিয়ো কনফারেন্স হলে সহজেই উত্তর এড়িয়ে যাবেন।’’
সোমবার সিবিআই সময় চাইলে বিচারপতি বলেন, একটা অন্তর্বতী নির্দেশের জন্য অনন্তকাল সময় দেওয়া যায় না। ফের এই মামলার শুনানি হবে মঙ্গলবার। বিনয়ের আর এক আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি সোমবার বলেন, ‘‘আত্মসমর্পণ না করলে ভিডিয়ো কনফারেন্স-এর অনুমতি হবে না এটা বেআইনি।’’
কোভিড পরিস্থিতির কারণে চলতি মাসে কলকাতা হাই কোর্টে ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে মামলার শুনানির অনুমতি চেয়েছিলেন গরু ও কয়লা পাচার-কাণ্ডের অভিযুক্ত বিনয়। সেই সঙ্গে অন্তর্বর্তী জামিনের মেয়াদ আরও বাড়ানোর আবেদন জানিয়েছিলেন বিনয়ের দুই আইনজীবী অভিষেক এবং সিদ্ধার্থ লুথরা। হাই কোর্টে অভিষেক বলেন, ২০১৮ সালের ৫ সেপ্টেম্বর থেকে অন্য দেশের বাসিন্দা বিনয়। তার পরে সিবিআই মামলা করেছে। সিবিআইয়ের দু’টি এফআইআরেই নামই ছিল না বিনয়ের।
বিনয় এখন প্রশাম্ত মহাসাগরের এক দ্বীপরাষ্ট্র ভানুয়াতুতে রয়েছেন বলে সিবিআই সূত্রে খবর। বিনয়ের বিরুদ্ধে রেড কর্নার নোটিস জারির আবেদন জানিয়েছিল ইন্টারপোলের কাছে। কিন্তু তা এখনও কার্যকর হয়নি। এই পরিস্থিতিতে বিচারপতি সিবিআই-এর আইনজীবীর কাছে জানতে চেয়েছিলেন, ভার্চুয়াল শুনানিতে তদন্তকারী সংস্থা সম্মত আছে কি না।
বিচারপতি ঘোষ সোমবার সিবিআইয়ের কাছে জানতে চান, একজন সরকারি কর্মচারীকে কি কোনও অভিযোগ ছাড়া গ্রেফতার করা যায়? বিনয় মামলায় সিবিআই যে তদন্ত করছে তার সূত্রপাত গরু কান্ডে জে ম্যাথ্যু নামে এক বিএসএফের আধিকারিককে গ্রেফতার থেকে। তাঁকে গ্রেফতারের পর গরু পাচার-কাণ্ডে বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের অভিযোগ করে সিবিআই। বিনয়ের নাম উঠে আসে তারপর। বিচারপতির প্রশ্ন, সিবিআই ডিরেক্টর কি পারেন কোনও অভিযোগে ছাড়াই একজন কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীর বিরুদ্ধে প্রাথমিক তদন্ত করতে? সেই আইন দেখাতে নির্দেশ দেন সিবিআই-কে। এ ক্ষেত্রে সিবিআই-এর যুক্তি, সিবিআই তার নিজের সূত্র মারফত খবর পেয়ে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলা করেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy