Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Narada Scam

নারদ-তদন্ত শেষ, অনুমতি না থাকায় পেশ হচ্ছে না চার্জশিট

আপাতত তাঁদের হাত-পা বাঁধা বলেই জানাচ্ছেন সিবিআই কর্তারা। 

২০১৭-র ১৬ এপ্রিল ১৩ জনের বিরুদ্ধে নারদ মামলার এফআইআর নথিভুক্ত করে সিবিআই। —ফাইল চিত্র।

২০১৭-র ১৬ এপ্রিল ১৩ জনের বিরুদ্ধে নারদ মামলার এফআইআর নথিভুক্ত করে সিবিআই। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা 
শেষ আপডেট: ০৬ অক্টোবর ২০২০ ০৪:৪০
Share: Save:

তদন্ত শেষ। কিন্তু নারদ-কাণ্ডে চার্জশিট পেশ করতে পারছে না সিবিআই। কারণ, নারদ ভিডিয়োয় যে-সব সাংসদকে দেখা গিয়েছে তাঁদের বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশের অনুমতি চেয়ে গত বছর এপ্রিলে লোকসভার স্পিকারের কাছে আর্জি জানানো হলেও, এখনও সাড়া মেলেনি। শুধু তা-ই নয়, অভিযুক্ত আইপিএস এসএমএইচ মির্জার নামে চার্জশিট পেশ করতে চেয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে ১১ মাস আগে। সেই অনুমোদনও আসেনি। ফলে এই মামলায় আপাতত তাঁদের হাত-পা বাঁধা বলেই জানাচ্ছেন সিবিআই কর্তারা।

তবে এরই মাঝে সংশ্লিষ্ট নেতা-মন্ত্রীদের কাছ থেকে ২০১৩ থেকে ২০২০ পর্যন্ত আয়-ব্যয়ের বিস্তারিত হিসেব জানতে চেয়েছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। আয়কর রিটার্নের প্রতিলিপিও জমা দিতে বলা হয়েছে। এঁদের বিরুদ্ধে আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিহীন সম্পত্তির মামলা করতেই এমন পদক্ষেপ বলে তদন্তের গতিপ্রকৃতি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল মহলের ধারণা।

২০১৬ সালের পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা ভোটের আগে নারদ নিউজ়ের কর্ণধার ম্যাথু স্যামুয়েলের স্টিং অপারেশনের ভিডিয়ো রাজ্য রাজনীতিতে তোলপাড় তুলেছিল। ম্যাথুর দাবি ছিল, ২০১৪ সালের লোকসভা ভোটের আগে তিনি ছদ্মবেশে তৃণমূলের বিভিন্ন নেতার সঙ্গে দেখা করে টাকা দিয়েছিলেন। বিনিময়ে কাজ পাইয়ে দেওয়ার কথা বলেছিলেন। স্টিং অপারেশনের জন্য খরচ হয়েছিল প্রায় ১ কোটি টাকা। সেই টাকা জুগিয়েছিলেন নারদ নিউজ়ের মালিক এবং তখন তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ কেডি সিংহ। তিনি কেন নিজের দলের বিরুদ্ধেই স্টিং অপারেশন করিয়েছিলেন, সেটা এখনও রহস্য। তবে কেডি দলের এক যুব সাংসদের ঘনিষ্ঠ ছিলেন। ঘটনাচক্রে নারদ-কাণ্ডে যাঁদের নাম জড়িয়েছিল, তাঁদের কেউই ওই সাংসদের ঘনিষ্ঠ-বৃত্তে ছিলেন না।

আরও পড়ুন: মেয়ের জন্য নিজের ভাবমূর্তি বদলাতে চেয়েছিলেন মণীশ

নারদ-কাণ্ডে অভিযুক্তদের মধ্যে মুকুল রায় এবং শোভন চট্টোপাধ্যায় এখন বিজেপিতে। মুকুল-ঘনিষ্ঠ আইপিএস মির্জা এখন সাসপেন্ড হয়ে আছেন। সুলতান আহমেদ মারা গিয়েছেন। তাঁর ভাই ইকবাল আহমেদ অসুস্থ। শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে ইদানীং দলের দূরত্ব বেড়েছে বলেই খবর। মদন মিত্র আর আগের মতো সক্রিয় নন। অপরূপা পোদ্দারেরও দলে তেমন গুরুত্ব নেই। তবে ফিরহাদ হাকিম, সুব্রত মুখোপাধ্যায় এবং সৌগত রায় দলে এবং মন্ত্রিসভা বা সংসদে সক্রিয়।

আরও পড়ুন: রাজ্যে কৃতীদের কাজের অভাব হবে না: মমতা

অভিযুক্তদের অনেকেরই দাবি, লোকসভা ভোটের চাঁদা হিসেবেই তাঁরা ম্যাথুর কাছ থেকে টাকা নিয়েছিলেন। নির্বাচন কমিশনে পেশ করা হিসেবে ওই টাকার উল্লেখও রয়েছে। তাঁদের আরও দাবি, কারও কাছ থেকে কোনও কাজের পরিপ্রেক্ষিতে টাকা নেওয়া হলে তবে তাকে ঘুষ বলা যায়। কিন্তু ওই টাকার পরিবর্তে তিনি কোনও কাজ পেয়েছেন, এমনটা কি ম্যাথু দেখাতে পারবেন? তা ছাড়া, ম্যাথু একটি সিডি জমা দিয়েছেন, কিন্তু মূল আইফোনটি জমা দেনি। অ্যাপল সংস্থার কাছে বার বার লিখেও তাতে মজুত ডেটা হাতে পায়নি সিবিআই। ফলে মামলাটি তদন্তযোগ্যই নয়।

সিবিআইয়ের পাল্টা দাবি, অভিযুক্তদের কেউই ম্যাথুকে রসিদ দেননি। কমিশনকে পেশ করা হিসেবে কার কাছ থেকে টাকা নেওয়া হয়েছিল, তা-ও জানাননি। আর তথ্যপ্রমাণ জোগাড়ের দায়িত্ব তদন্তকারী সংস্থার। তদন্ত-পর্বে আদালত এ নিয়ে হস্তক্ষেপ করতে পারে না। শুনানি পর্বে তথ্যপ্রমাণ উপযুক্ত নয় বলে মনে হলে আদালত রায় দেবে। তা ছাড়া, ভিডিয়োয় দেখা টাকা হস্তান্তরের প্রতিটি স্থান ফের মিলিয়ে দেখেছেন তদন্তকারীরা।

সিবিআইয়ের বক্তব্য, সাংসদদের বিরুদ্ধে তদন্তে যা পাওয়া গিয়েছে, তা আদালতে পেশ করার পরে তৎকালীন বিধায়ক ফিরহাদ হাকিম, শোভন চট্টোপাধ্যায়, ইকবাল আহমেদ ও মদন মিত্রের বিরুদ্ধে চার্জশিট দিতে চেয়ে বিধানসভার স্পিকারের অনুমোদন চাওয়া হবে। কিন্তু স্পিকার এবং নর্থ ব্লক উচ্চবাচ্য না-করায় আটকে রয়েছে গোটা বিষয়টিই।

অন্য বিষয়গুলি:

Narada Scam CBI
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy