সন্দীপ ঘোষ। —ফাইল ছবি।
সন্দীপ একা নন। আছেন আরও অনেকেই। আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ‘দুর্নীতির’ ঘুঘুর বাসায় সিবিআইয়ের ঢিলটি পড়া মাত্র এমন অনেক ‘বিশিষ্ট’ চরিত্রের ভূমিকাও উঠে আসছে বলে গোয়েন্দা সূত্রের খবর।
আর জি করের ফরেন্সিক মেডিসিনের শিক্ষক-চিকিৎসক দেবাশিস সোম যেমন, রবিবার রাত প্রায় ১১টায় নিজ়াম প্যালেস থেকে ছাড়া পাওয়ার পরে সোমবার সকাল-সকাল ফের সেখানে হাজির হয়েছেন। সিবিআইয়ের হাতে আসা সিসি ক্যামেরা ফুটেজে আবার দেখা গিয়েছে, আর জি করের চিকিৎসক-পড়ুয়ার খুন, ধর্ষণের পরের সকালেও চেস্ট মেডিসিন বিভাগের ওই সেমিনার কক্ষে দেবাশিসের উপস্থিতি ছিল প্রকট। সকালে দুর্নীতি-কাণ্ডে নিজ়াম প্যালেসে এক প্রস্ত জিজ্ঞাসাবাদের পরে দেবাশিসকে ফের সিবিআইয়ের মুখোমুখি হতে সিজিও কমপ্লেক্সে যেতে হয়েছে। সেখানে চিকিৎসক খুনের তদন্তেও তাঁর সঙ্গে কথাবলে সিবিআই।
স্বাস্থ্য দফতরের দুর্নীতির তদন্তে নিজ়াম প্যালেসে এ দিন সকালে আক্ষরিক অর্থেই চিকিৎসক-শিক্ষক তথা স্বাস্থ্যকর্তাদের ‘চাঁদের হাট’ বসেছিল। দেবাশিসের সঙ্গে ছিলেন আর জি করের সদ্য প্রাক্তন মেডিক্যাল সুপার সঞ্জয় বশিষ্ঠ। তাঁদের দু’জনের সঙ্গে কথা বলেন সিবিআইয়ের দুর্নীতি দমন শাখার তদন্তকারীরা। আর জি করের বর্তমান অধ্যক্ষ মানস বন্দ্যোপাধ্যায়কেও ডেকে পাঠিয়ে দীর্ঘ ক্ষণ কথা বলে সিবিআই। সকলের বয়ান লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। এ দিন রাতে সিবিআইয়ের অতিরিক্ত ডিরেক্টর মনোজ শশীধর দিল্লির সদর দফতর থেকে নিজ়াম প্যালেসে আসেন। তদন্তকারীদের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। তদন্তকারীদের দাবি, রবিবার দিনভর সন্দীপ ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী, ঠিকাদারদের বাড়িতে বা অফিসে নাগাড়ে তল্লাশি চালিয়ে যা যা নথি উদ্ধার হয়েছে, তার সূত্রেই আর জি করের কর্তাব্যক্তিদের এ দিন নিজ়াম প্যালেসে ডাকা হয়েছিল। তবে দুর্নীতির তদন্তে এখনও পর্যন্ত সন্দীপ ঘোষ ছাড়া আর কারও নামে অভিযোগ দায়ের করেনি সিবিআই। কিন্তু আরও কয়েক জন এই দুর্নীতিতে জড়িত বলে লেখা হয়েছে। সন্দীপ ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী ঠিকাদারদের অধীনস্থ তিনটি সংস্থার নামেও মামলা রুজু করা হয়েছে।
তদন্তকারীদের দাবি, সন্দীপ এবং তাঁর ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ীদের তিনটি সংস্থার মাধ্যমে আর্থিক দুর্নীতির কালো টাকার লেনদেন কী ভাবে হয়েছিল, তার প্রাথমিক তথ্য-প্রমাণ মিলেছে। সন্ধ্যার পরে সন্দীপ-ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী চন্দন লৌহ ও তাঁর স্ত্রী ক্ষমাকে সিবিআই নিজ়াম প্যালেসে ডাকে। সিবিআই সূত্রে খবর, দুর্নীতির কালো টাকা সাদা করতে সংস্থা ও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলার নথি মিলেছে। যাচাই হচ্ছে।
তদন্তকারী এক অফিসার বলেন, “শুধু আর জি কর নয়, দুর্নীতির জাল অন্য সরকারি হাসপাতালেও ছড়িয়ে ছিল বলে প্রাথমিক ভাবে মনে হচ্ছে।” স্বাস্থ্য দফতরের অন্য কর্তারা কে কে দুর্নীতিতে জড়িয়ে, সামগ্রিক দুর্নীতির নিরিখে সন্দীপের ভূমিকা কী, স্বাস্থ্য দফতরের অন্দরে তাঁর প্রভাব কী ভাবে কত দূর ছিল— খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy