সারদার নথিপত্র সিবিআইয়ের হাতে তুলে দিল বিধাননগর কমিশনারেট।—নিজস্ব চিত্র।
সারদা কেলেঙ্কারির তদন্তে নেমে এ বার থানায় ঢুকে পুলিশের নথিপত্র পরীক্ষা করে দেখল সিবিআই। রাজ্য পুলিশের তদন্তকারীদের কয়েক জনের সঙ্গে বৃহস্পতিবার থানায় বসে কথাও বলেছেন গোয়েন্দারা। রাজ্য পুলিশের যে সব অফিসার সারদা তদন্তের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, তাঁদের আলাদা করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলেও সিবিআই সূত্রের খবর। কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থার অধিকর্তা রঞ্জিত সিন্হা জানিয়েছেন, সারদা-তদন্তে রাজ্যের আরও বেশ কিছু জায়গায় তল্লাশি চালাবে সিবিআই।
বৃহস্পতিবার দুপুরে সিবিআইয়ের তিন সদস্যের একটি দল সল্টলেকের পাঁচ নম্বর সেক্টরে ইলেকট্রনিক্স কমপ্লেক্স থানায় যায়। সারদা কেলেঙ্কারি নিয়ে রাজ্য পুলিশের ‘সিট’-এর তদন্ত এই থানা থেকেই পরিচালনা করা হচ্ছিল। সারদা-তদন্তের বহু নথি ওই থানাতেই রাখা হয়েছিল। এ দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত ওই থানায় সেই সব নথি ও তথ্য পরীক্ষা করে দেখেন সিবিআই অফিসারেরা।
তদন্তে নামার পরে সারদা সংস্থার থেকে বহু নথি বাজেয়াপ্ত করে পুলিশ। সেই সব নথি রয়ে গিয়েছে পাঁচ নম্বর সেক্টরের ওই থানাতেই। সিবিআই তদন্তভার হাতে নেওয়ার পরে বাজেয়াপ্ত করা নথির তালিকা বা সিজার লিস্ট তাদের হাতে তুলে দেয় পুলিশ। জানা গিয়েছে, এ দিন থানায় গিয়ে সেই তালিকার সঙ্গে পুলিশের কাছে থাকা নথি মিলিয়ে দেখেন সিবিআই অফিসারেরা। তা ছাড়াও সারদা কর্তাদের বিরুদ্ধে করা কর্মীদের বেতন না দেওয়া এবং একটি প্রতারণা মামলার নথিপত্রও খতিয়ে দেখা হয়। কম্পিউটার-সহ আরও কিছু নথি পরীক্ষা করার জন্য দু’এক দিনের মধ্যে সিবিআইয়ের দলটি আবার ওই থানায় যাবে বলেও সূত্রের খবর।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে সিবিআই তদন্ত শুরু করার পরে অভিযোগ ওঠে, রাজ্য পুলিশের তরফ থেকে সারদা সংক্রান্ত সমস্ত নথিপত্র এই কেন্দ্রীয় সংস্থার হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে না। শেষ পর্যন্ত ওই সব তথ্য হাতে পেতে রাজ্য পুলিশকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে দেয় সিবিআই। কিন্তু অভিযোগ, তার পরেও বহু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য রাজ্য পুলিশ সিবিআইয়ের হাতে দেয়নি। সেই পরিপ্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের এ দিনের থানা অভিযান যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে। রাজ্য পুলিশের তদন্তকারীদের অফিসারদের একাংশের তরফে এ দিন অবশ্য দাবি করা হয়েছে, সারদার ৫৯টি সম্পত্তির যাবতীয় কাগজপত্র তাঁদের কাছেই রয়েছে। প্রায় ৭০০ কোটি টাকার ওই সব সম্পত্তির কাগজপত্র সিবিআইকে বার বার নিয়ে যাওয়ার জন্য বলা হলেও তারা তা করেনি বলে রাজ্য পুলিশের পক্ষ থেকে পাল্টা অভিযোগ করা হয়েছে।
সিবিআই সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি তদন্তে সারদার দুই মহিলা হিসাবরক্ষকের নাম উঠে এসেছে। এই দুই কর্মী সন্ধ্যা ছ’টা থেকে পর দিন ভোর চারটা পযন্ত সারদার মিডল্যান্ড পার্ক অফিসে বসে হিসেব দেখভাল করতেন। অভিযোগ, সমাজের বেশ কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি সারদা-কর্ণধার সুদীপ্ত সেনের কাছ থেকে বিভিন্ন সময়ে মোটা অঙ্কের টাকা নিয়েছেন। বেশ কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তির যাতায়াতও ছিল মিডল্যান্ড পার্কের অফিসে। তবে তাঁরা যেতেন প্রধানত রাতেই। সিবিআইয়ের দাবি, কারা সেখানে আসতেন, কারা টাকা নিয়েছেন তা ওই দুই হিসাবরক্ষকের কাছ থেকে জানা যেতে পারে। ওই দুই হিসেব রক্ষকের খোঁজ চলছে বলে সিবিআই সূত্রে জানা গিয়েছে।
সারদার পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গ ও ওড়িশায় অন্য অর্থলগ্নি সংস্থার বেনিয়মের তদন্তেও নেমেছে সিবিআই। এ দিনই ওড়িশার এমনই এক সংস্থা ‘গ্রিন ইন্ডিয়া ইনফ্রা প্রজেক্ট লিমিটেডে’র দুই কর্তা প্রদীপ সিংহ ও সুনীল পণ্ডাকে গ্রেফতার করেছে সিবিআই। সংস্থা সূত্রের খবর, এই দু’জনেরই নাম এফআইআর-এ ছিল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy