মন্দিরপুকুর পাড়ে একই মঞ্চে দুই প্রার্থী। নিজস্ব চিত্র
শারদোৎসব মিটে গিয়েছে। তবে উৎসবের রেশ কাটেনি মিশ্র সংস্কৃতির রেলশহরে। প্রতি বছরের মতো এ বারও ছট পুজোর আড়ম্বর নেহাত কম নয়। তার সঙ্গে আবার জুড়েছে উপ-নির্বাচন। ছট পুজোর মুহূর্তকে তাই জনসংযোগে ব্যবহার করলেন ভোট প্রার্থীরা। পুকুর ঘাটে গিয়ে ভোট প্রচার সাড়লেন খড়্গপুর বিধানসভা উপ-নির্বাচনের তৃণমূল ও কংগ্রেস প্রার্থী। তবে প্রার্থীর নাম ঘোষণায় দেরি হওয়ায় ছটে জনসংযোগের তেমন সুযোগ পায়নি বিজেপি।
মূলত সূর্য দেবের আরাধনায় ছটের মূল পুজো ছিল শনিবার। পুজো শুরু হয়েছে বৃহস্পতিবারই। প্রথম দিন ‘কাদ্দু’ উৎসবে মিটেছে লাউ খাওয়ার পর্ব। শুক্রবার দ্বিতীয় দিনে ‘খারনি’ উৎসবে বাড়িতে পুজোর পরে মিষ্টি বিলি হয়েছে। আর এ দিন মূল পুজো উপলক্ষে বিকেলে ‘সুপা’ সাজিয়ে বিহারি সম্প্রদায়ের মানুষজন সূর্য উপাসনার জন্য পুকুরঘাট পর্যন্ত শোভাযাত্রা করেছেন। শহরবাসীকে ছট পুজোর শুভেচ্ছা জানাতে এ দিন পথে নেমেছিলেন তৃণমূল প্রার্থী প্রদীপ সরকার ও কংগ্রেস-বাম জোট প্রার্থী চিত্তরঞ্জন মণ্ডল। এ দিন মূলত খরিদা মন্দিরপুকুরে ভিড়ে মিশে জনসংযোগ সেরেছেন তাঁরা। ভোটে পাশে থাকার আবেদন জানিয়েছেন। কংগ্রেস প্রার্থী চিত্তরঞ্জন বলেন, “আমি সারাবছর মানুষের সঙ্গে থাকি। তবে নির্বাচনের মুখে এ বারের ছট পুজোয় জনসংযোগের বাড়তি সুযোগ পেলাম। প্রচুর মানুষের সঙ্গে দেখা হয়েছে। শুভেচ্ছা বিনিময় করে পাশে থাকার কথা বলেছি।” তৃণমূলের প্রার্থী প্রদীপও বলছেন, “প্রতিবার আমি ছটপুজোয় শামিল হই। তবে এ বার নির্বাচন থাকায় এই জনসংযোগ কাজে লাগবে। পুজোয় হাজির মানুষের কাছে আশীর্বাদ চাইব। আবার ঈশ্বরের কাছেও আমার জন্য প্রার্থনা করব।”
এ দিন মন্দিরপুকুর পাড়ে পুরসভার মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন প্রদীপ সরকার। সেই সময়েই ওই এলাকায় পৌঁছন কংগ্রেস প্রার্থী চিত্তরঞ্জন মণ্ডল। কাউন্সিলর হিসাবেমঞ্চে উঠে পড়েন চিত্তরঞ্জন। নিজের শিক্ষাগুরুর হাতে মাইক ছেড়ে দেন পুরপ্রধান।
এ দিকে, এ দিন বিজেপি প্রার্থী প্রেমচাঁদ ঝা-র নাম ঘোষণা হলেও তিনি শহরে ছিলেন না। ফলে, ছটপুজোয় প্রার্থীকে নিয়ে জনসংযোগের সুযোগ হাতছাড়া হয়েছে বিজেপির। যদিও বিজেপির জেলা সহ-সভাপতি গৌতম ভট্টাচার্য বলেন, “প্রার্থী ঘোষণা না হলেও আমাদের কর্মীরা সর্বত্র ছটপুজোর উৎসবে মিশে রয়েছেন। তাঁদের জনসংযোগে সংগঠন মজবুত হচ্ছে। সংগঠন শক্তিশালী হলেই তো প্রার্থী জিতবেন।” অবশ্য ছটপুজোয় বাড়তি সুবিধা পাওয়া নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে তৃণমূলের শহর সভাপতি রবিশঙ্কর পাণ্ডে বলেন, “সারাবছর যদি আমি জনসংযোগ না করি তবে শুধুমাত্র ছটপুজোয় জনসংযোগে সুফল পাওয়া যাবে না। আর ধর্মীয় ব্যপারে রাজনীতি ঠিক নয়।”
অবশ্য শহরের কাউন্সিলর তথা তৃণমূলের জেলা নেতা দেবাশিস চৌধুরীর মত, “যেকোনও সামাজিক উৎসব-অনুষ্ঠান মানুষের সঙ্গে যোগাযোগের বড় মাধ্যম।” একইভাবে শহরের বাসিন্দা কংগ্রেসের জেলা কার্যকরী সভাপতি দেবাশিস ঘোষ বলেন, “আমরা প্রতিবার ছট পুজোয় সামিল থেকে জনসংযোগ করি। তবে এ বার নির্বাচনে প্রচারের সময় কম। তাই ছটপুজোর প্রার্থীর জনসংযোগে বাড়তি সুযোগ পাওয়া গেল।”
যদিও এমন রাজনীতি নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছে না বিহারি পরিবারগুলি। পুজোয় শামিল মন্দিরতলা এলাকার বাসিন্দা জিতেশ সাউ বলেন, “এখন তো দুর্গাপুজো, কালীপুজো, ইদ সব কিছুর সঙ্গে রাজনীতি জড়িয়ে থাকে। ছটপুজোতেও হয়তো তাই রাজনীতির লোকেরা ভিড় করেছে। কিন্তু এসব নিয়ে আমরা কিছু ভাবছি না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy