Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪

খাল সংস্কার, দখল চিহ্নিত করতে সমীক্ষা

এ বারও বর্ষায় বিপাকে পড়েছিলেন কয়েক হাজার বাসিন্দা। এলাকার নিকাশি খালগুলির দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়া ও অধিকাংশ চাষের জমিতে মাছের  ভেড়ি তৈরির ফলেই ময়নার বিস্তীর্ণ এলাকায় নিকাশির সমস্যা মারাত্মক আকার নিয়েছে বলে বাসিন্দাদের অভিযোগ।

প্রায় মজে যাওয়া ময়না-বলাইপন্ডা খালের পাড় দখল করে তৈরি হয়েছে বেআইনি নির্মাণ। নিজস্ব চিত্র

প্রায় মজে যাওয়া ময়না-বলাইপন্ডা খালের পাড় দখল করে তৈরি হয়েছে বেআইনি নির্মাণ। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
ময়না শেষ আপডেট: ০৮ নভেম্বর ২০১৯ ০১:০৭
Share: Save:

কাঁসাই, কেলেঘাই, চণ্ডীয়া নদী ঘেরা ময়না ব্লকের জল নিকাশির জন্য রয়েছে কয়েকটি বড় নিকাশি খাল। এ ছাড়াও অস্তিত্ব রয়েছে বেশ কিছু ছোট খালের। তবু বৃষ্টি হলেও গ্রামের রাস্তাঘাট, ঘরবাড়ি থেকে জমা জল বেরোতে না পারার যন্ত্রণা যায়নি ময়নার বাসিন্দাদের।

এ বারও বর্ষায় বিপাকে পড়েছিলেন কয়েক হাজার বাসিন্দা। এলাকার নিকাশি খালগুলির দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়া ও অধিকাংশ চাষের জমিতে মাছের ভেড়ি তৈরির ফলেই ময়নার বিস্তীর্ণ এলাকায় নিকাশির সমস্যা মারাত্মক আকার নিয়েছে বলে বাসিন্দাদের অভিযোগ। তাঁদের দাবি, নিকাশি খালগুলির সংস্কার চেয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের তরফে পঞ্চায়েত সমিতি এবং ব্লক প্রশাসনের কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু জল যন্ত্রণা থেকে রেহাই মেলেনি তাঁদের।

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ময়নার বড় নিকাশিখালগুলি সংস্কারের জন্য পঞ্চায়েত সমিতির তরফে কয়েক মাস আগে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছিল জেলা পরিষদ ও সেচ দফতরের কাছে। তারপর বলাইপন্ডা বাজার থেকে ময়না বাজার হয়ে কৃপাসিন্ধু মোড় পর্যন্ত ময়না-বলাইপন্ডা খাল ও খেজুরতলা থেকে গোকুলনগর পর্যন্ত নিকাশিখাল সংস্কারের ব্যবস্থা হয়েছে। এই দুই নিকাশিখাল সংস্কার হলে কাঁসাই নদীর মাধ্যমে ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকার বর্ষার জল বেরিয়ে যাবে। তবে এই দুই খাল সংস্কারের ক্ষেত্রে প্রধান সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে খালের দু’পাশ দখল করে বেআইনিভাবে তৈরি দোকান ও বাড়িঘর। যার জেরে খালের স্রোত আটকে যাওয়ায় আবর্জনা জমে মজে গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে সংস্কারের আগে খালের অবস্থা সরেজমিন দেখতে মাপজোক সহ সমীক্ষা করা হবে।

জেলা পরিষদ সূত্রে খবর, বলাইপন্ডা বাজার থেকে রাজ্য সড়কের ধার বরাবর ময়না বাজার হয়ে কৃপাসিন্ধু মোড় পর্যন্ত প্রায় ১৫ কিলোমিটার লম্বা নিকাশি খাল দীর্ঘদিন ধরে বেহাল। বলাইপন্ডা, অন্নপূর্ণা, হোগলাবাড়ি, ময়না বাজার এবং ময়না বাজার থেকে থানা হয়ে কৃপাসিন্ধু মোড় প্রভৃতি এলাকায় খালের একাংশ দখল করে বেআইনি ভাবে বাড়িঘর তৈরি হয়েছে। রাজ্য সড়ক সম্প্রসারণ ও খাল সংস্কারে এই সব বেআইনি নির্মাণই অন্যতম বাধা বলে মেনেছেন পঞ্চায়েত সমিতি ও জেলাপরিষদ কর্তারাও। তাই বিভিন্ন এলাকায় থাকা খালের দখল অংশ চিহ্নিত করতে উদ্যোগী নিয়েছে প্রশাসন। এর জন্য কৃষি-সেচ দফতর ওই নিকাশি খালের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে সমীক্ষা করবে।

জেলা পরিষদের কৃষি ও সেচ কর্মাধ্যক্ষ শেখ সাজাহান আলি বলেন, ‘‘বলাইপন্ডা বাজার থেকে কৃপাসিন্ধু মোড় পর্যন্ত নিকাশি খাল সংস্কার হবে। তার আগে খালের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখা হবে।’’ তিনি জানান, খেজুরতলা থেকে গোকুলনগর পর্যন্ত প্রায় ৮ কিলোমিটার অংশ সংস্কার করবে জেলা সেচ দফতর। এর জন্য অর্থ বরাদ্দের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। অর্থ বরাদ্দ হলেই চলতি বছরে খাল সংস্কারের কাজ শুরু হবে। জেলা কৃষি-সেচ দফতরের নির্বাহী বাস্তুকার সদানন্দ পলমল বলেন, ‘‘ময়না-বলাইপন্ডা খালের পরিস্থিতি সমীক্ষা কয়েকদিনের মধ্যেই শুরু হবে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Canal Moyna Purba Medinipur
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE