প্রতীকী ছবি।
মশারি নয়, ‘লিক্যুইড ভেপার’ এবং কয়েলের উপর ভরসা রেখেই ঘুমোতে যাচ্ছেন অধিকাংশ বাসিন্দা। আর সেই সুযোগে কামড় বসাচ্ছে মশা।
প্রচার সত্ত্বেও মশারি ব্যবহারে অনীহা যে খড়্গপুরে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ার অন্যতম একটি কারণ, তা এক কথায় মেনে নিচ্ছেন জেলার স্বাস্থ্য অধিকর্তারাই। মশার কামড় থেকে বাঁচতে মশারিই যে একমাত্র পথ, তা নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে তাই আবার প্রচারে নামার কথা ভাবছে স্বাস্থ্য দফতর।
পশ্চিম মেদিনীপুরের উপ-মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক তথা মশাবাহিত রোগের নোডাল অফিসার রবীন্দ্রনাথ প্রধান এ কথা মেনে নিয়ে বলেছেন, “খড়্গপুরের অধিকাংশ বাড়িতে ‘লিক্যুইড ভেপার মেশিন’ ব্যবহার করা হচ্ছে। এ সব একেবারে যে কার্যকর নয় তা এক বারও বলছি না। তবে এ ক্ষেত্রে মশা সাময়িক ভাবে অবশ (নিউরো প্যারালাইজড) হয়ে থাকে।’’ তাঁর কথায়, ‘‘ডেঙ্গির মশা অন্যান্য মশার তুলনায় বেশি শক্তিশালী হওয়ায় ‘প্যারালাইজড’ হতে সময় লাগে। ফলে অবশ হওয়ার আগেই কামড় বসানোর প্রচুর সময় পেয়ে যাচ্ছে ওই সব মশা।’’
ডেঙ্গির জীবাণুবাহী মশা সাধারণত ভোরের দিকে কামড়ায়। এখন বেশিরভাগ বাড়িতেই রাতে ‘লিক্যুইড ভেপার মেশিন’ চলে। কেউ কেউ আবার ভোরের দিকে এই যন্ত্র বন্ধও করে দেন। বিদ্যুৎচালিত এই যন্ত্রে ‘লিক্যুইড ভেপার’-এর বোতল লাগানো থাকে। স্বাস্থ্য অধিকর্তাদের ব্যাখ্যা, এই ‘লিক্যুইড ভেপার’-এ থাকে ‘ট্রান্সফ্লুথরিন’ জাতীয় একটি পদার্থ। যন্ত্র চালালে ‘লিক্যুইড ভেপার মেশিন’ থেকে বাষ্পাকারে ‘ট্রান্সফ্লুথরিন’ বেরিয়ে এসে বাতাসে মেশে যেতে থাকে। কিন্তু ‘ট্রান্সফ্লুথরিন’-এর কার্যকারিতা শেষ হয়ে গেলেই আবার স্বমহিমায় ফিরে কামড় বসায় মশা।
খড়্গপুরে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা একশো ছুঁইছুঁই। পশ্চিম মেদিনীপুরে ১২০ জন আক্রান্তের মধ্যে ৯২ জনই খড়্গপুরের বাসিন্দা। খড়্গপুর শহর ও গ্রামীণ এলাকায় ইতিমধ্যে তিন জন মারাও গিয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে ডেঙ্গি মোকাবিলায় লাগাতার অভিযান চালাচ্ছে স্বাস্থ্য দফতর। বাড়ি বাড়ি পরিদর্শনে গিয়ে স্বাস্থ্য অধিকর্তারা দেখেছেন, হাতে গোনা কয়েকটি বাড়িতে ঘুমনোর সময় নিয়মিত মশারি ব্যবহারের চল রয়েছে। বেশিরভাগ লোকেরই ভরসা মশা মারার কয়েল, বা ‘লিক্যুইড ভেপার’। দিন কয়েক আগেই ডেঙ্গিতে আক্রান্ত খড়্গপুরের বাসিন্দা অরুণাভ ঘোষবর্মন বলছিলেন, “মশা তাড়াতে সর্বক্ষণ ‘লিক্যুইড ভেপার মেশিন’ চালিয়ে রাখতাম। ভাবতাম মশা কামড়াবে না। এখন বুঝছি, মশা থেকে বাঁচতে মশারিই একমাত্র পথ।”
কিন্তু মশারি ব্যবহারে এত অনীহা কেন? ইন্দার অন্তরা আচার্যের জবাব, “মশারি টাঙালে হাঁসফাঁস লাগে। আর মশারি টাঙানোর ঝঞ্ঝাটও আছে। তাই ‘লিক্যুইড ভেপার মেশিন’ চালিয়ে রাখি।”
‘লিক্যুইড ভেপার’, মশা মারার কয়েল স্বাস্থ্যের পক্ষেও ক্ষতিকারক। রবীন্দ্রনাথবাবু বলেন, “বিভিন্ন সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, মশার একটি কয়েল থেকে যে ধোঁয়া বের হয় তা একশো সিগারেটের ধোঁয়ার সমান ক্ষতি করে। ‘লিক্যুইড ভেপার’ তুলনায় কম ক্ষতিকারক হলেও মশা মারতে কার্যকর নয়।’’ তাঁর পরামর্শ, ‘‘শ্বাসকষ্টের রোগী আছেন এমন বাড়িতে ‘লিক্যুইড ভেপার’ ব্যবহার না করাই উচিত।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy