Advertisement
২৭ নভেম্বর ২০২৪
JB memorila event

জ্যোতি-পথ এখনও প্রাসঙ্গিক, বার্তা ইয়েচুরি, বিজয়ন, নীতীশদের

প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতিবাবুর ১৫তম প্রয়াণ দিবসে নিউ টাউনে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপিত হল তাঁর নামাঙ্কিত গবেষণা কেন্দ্রের।

ভিত্তি প্রস্তর স্থাপনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সীতারাম ইয়েচুরি, মহম্মদ সেলিম, বিমান বসু এবং সূর্যকান্ত মিশ্র।

ভিত্তি প্রস্তর স্থাপনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সীতারাম ইয়েচুরি, মহম্মদ সেলিম, বিমান বসু এবং সূর্যকান্ত মিশ্র। ছবি: স্নেহাশীষ ভট্টাচার্য।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ জানুয়ারি ২০২৪ ০৯:২৭
Share: Save:

মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্বে থাকার সময়ে এক বার প্রশ্নের জবাবে বলেছিলেন, সরকার চায় না! তাই পশ্চিমবঙ্গে সাম্প্রদায়িক বিভেদ, সংঘর্ষ হয় না। সেই জ্যোতি বসুর দৃষ্টান্তকে সামনে রেখেই ধর্মনিরপেক্ষ ও গণতান্ত্রিক ভারতকে রক্ষা করার লক্ষ্যে লড়াই তীব্র করার ডাক দিলেন সিপিএম নেতৃত্ব। ষখন রাম মন্দির উদ্বোধনকে ঘিরে দেশ জুড়ে উন্মাদনা এবং হিন্দুত্বের হাওয়া তুলতে সক্রিয় বিজেপি-সহ গেরুয়া শিবির, সেই সময়ে জ্যোতিবাবুর জীবন ও রাজনীতিকে পাথেয় করে এগোনোর বার্তা দিলেন নীতীশ কুমার, পিনারাই বিজয়ন, তেজস্বী যাদবেরাও।

প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতিবাবুর ১৫তম প্রয়াণ দিবসে নিউ টাউনে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপিত হল তাঁর নামাঙ্কিত গবেষণা কেন্দ্রের। ‘জ্যোতি বসু সেন্চার ফর সোশ্যাল স্টাডিজ় অ্যান্ড রিসার্চ:-এর প্রথম পর্যায়ের নির্মাণের কাজও শুরু হল বুধবারই। সেই অনুষ্ঠান উপলক্ষে নিউ টাউনে ওই কেন্দ্রের জমিতে ‘ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক সাধারণতন্ত্র রক্ষার চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক আলোচনা-সভায় সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি বলেছেন, ‘‘জ্যোতি বসু যে ভারতের স্বপ্ন দেখেছিলেন তার বিপরীতে চলছে ভারত। এই ২২ জানুয়ারিও স্বাধীন ভারতের ইতিহাসের চাকা ভিন্ন দিকে ঘোরানোর চেষ্টা চালাবে সঙ্ঘ পরিবার। তারা বলছে, আসল স্বাধীনতা নাকি এখন আসছে! এই পরিস্থিতিতে ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক ভারতের কাঠামোকে রক্ষা করার লড়াই আমাদের আরও জোরালো করতে হবে। চরমপন্থী, ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্র যারা গড়তে চায়, তাদের রাষ্ট্র ক্ষমতা থেকে বিচ্ছিন্ন করতে হবে।’’

আলোচনা-সভায় বক্তা হিসেবে আমন্ত্রিত ছিলেন বিহার ও কেরলের দুই মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ ও বিজয়ন। তবে দু’দিনের সফরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কেরলে থাকায় সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য বিজয়ন আসতে পারেননি। জ্যোতিবাবুকে ‘আদর্শ’ হিসেবে উল্লেখ করে তাঁর পাঠানো দীর্ঘ লিখিত বার্তা পড়ে শুনিয়েছেন গবেষণা কেন্দ্রের চেয়ারম্যান বিমান বসু। সাম্প্রদায়িকতা এবং রাজনীতির সঙ্গে ধর্মকে মেলানোর চেষ্টার বিরুদ্ধে জ্যোতিবাবুর দৃঢ় অবস্থানের কথা বলেছেন বিজয়ন। পটনায় গুরু গোবিন্দ সিংহের জন্মতিথির অনুষ্ঠানের জন্য আলতে না পারার কথা জানিয়েছেন নীতীশ। তাঁর বার্তায় ধর্মনিরপেক্ষতার পাশাপাশি বাংলায় বাম আমলে পঞ্চায়েত, অনগ্রসর মানুষের ক্ষমতায়নের কথাও বলেছেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ। তাঁর উপ-মুখ্যমন্ত্রী, আরজেডি-র তেজস্বী ভিডিয়ো-বার্তায় স্মরণ করেছেন ‘জ্যোতিদাদা’কে।

ইয়েচুরি এ দিন বলেছেন, স্বাধীনতার সময়েই একাংশের ভাবনা ছিল চরমপন্থী রাষ্ট্র গড়ার। তাঁর কথায়, ‘‘স্বাধীনতার সময়ে এবং তার পরে এত দিনে যা হয়নি, গত ১০ বছরে সেই চরমপন্থী, ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্র গড়ার চেষ্টা হচ্ছে। ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক ভারতের মূল স্তম্ভে আঘাত করা হচ্ছে। বিরোধিতা করলে, সত্য প্রকাশ করলেই ইউএপিএ! বিরোধীদের বিরুদ্ধে ইডি-সিবিআইকে ব্যবহার করা হচ্ছে।’’ বিজেপির এই শাসনের অবসান ঘটানোর লক্ষ্যেই ‘ইন্ডিয়া’ জোট গড়া হয়েছে বলে ব্যাখ্যা করেছেন ইয়েচুরি। তবে পরে ফের তিনি স্পষ্ট করে দিয়েছেন, যে তৃণমূল কংগ্রেস নিজেদের রাজ্যে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করছে, তাদের সঙ্গে সমঝোতার প্রশ্ন নেই। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম জানিয়েছেন, দেশে ও রাজ্যে শিক্ষা, ইতিহাস চেতনার উপরে যে আক্রমণ চলছে, তার বিপরীতে গবেষণার কাজ চালানো হবে জ্যোতিবাবুর নামাঙ্কিত কেন্দ্রে।

অন্য বিষয়গুলি:

CPM
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy