কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিন্হা। ফাইল চিত্র
নির্বাচন ঘিরে যদি রক্তপাত আর হিংসার চলতে থাকে, তবে সেই নির্বাচন বন্ধ করে দেওয়া উচিত— মন্তব্য করল কলকাতা হাই কোর্ট। রাজ্যে আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে আদালতে একটি মামলা করেছিলেন বিরোধীদের একাংশ। সেই মামলার শুনানিতে বুধবার হাই কোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিন্হা বলেন, ‘‘অশান্তি, রক্তপাত, জীবনহানি হলে নির্বাচন বন্ধ করে দেওয়া উচিত।’’ একই সঙ্গে বিচারপতি সিন্হা তাঁর পর্যবেক্ষণে জানিয়েছেন, অশান্তির জন্য যদি কোনও প্রার্থী মনোনয়ন জমা দিতে না পারেন, তবে তাঁদের অতিরিক্ত সময়ও দেওয়া উচিত কমিশনের।
বুধবার এই নিয়ে বিরোধীদের একটি মামলার শুনানি ছিল হাই কোর্টে। রাজ্য নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে প্রার্থীদের নাম কেন নেই এই প্রশ্ন তুলে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল আইএসএফ এবং বামেরা। আদালতকে তারা জানায়, মনোনয়ন জমা দেওয়ার কাজ শেষ। এমনকি, স্ক্রুটিনির কাজ সম্পূর্ণ হওয়া সত্ত্বেও প্রার্থীদের নাম কমিশনের ওয়েবসাইটে দেখা যাচ্ছে না। এই প্রসঙ্গেই মনোনয়ন জমা দেওয়া নিয়ে ভাঙড়ে অশান্তি, বিরোধী প্রার্থীদের মনোনয়ন জমা দিতে না দেওয়া এবং মনোনয়ন প্রত্যাহারে বাধ্য করার কথাও শুনানিতে টেনে আনেন মামলকারীরা। সে প্রসঙ্গেই বিচারপতি সিন্হা মন্তব্য করেন, ‘‘একটি নির্বাচন ঘিরে এত অভিযোগ। এটা রাজ্যের পক্ষে লজ্জার! রাজ্যের উচিত, আদালতের নির্দেশ মতো আইনশৃঙ্খলার বিষয়টি সঠিক ভাবে নিয়ন্ত্রণ করা। তা না হলে বা অশান্তি, রক্তপাত, জীবনহানি হলে নির্বাচন বন্ধ করে দেওয়া উচিত।’’
বিরোধীদের অভিযোগ ছিল কমিশনের বিরুদ্ধে। অশান্তি প্রসঙ্গে তাই কমিশনের উদ্দেশেই বিচারপতি সিন্হা বলেন, ‘‘অশান্তির কারণে প্রার্থীরা যদি সময় মতো মনোনয়ন জমা না দিতে পারেন, তবে তাঁদের অতিরিক্ত সময় দেওয়া উচিত।’’ যদিও বিচারপতির এই মন্তব্যে রাজ্য পাল্টা যুক্তি দিয়ে জানায়, ‘‘শুধুমাত্র একটি এলাকার আটটি ব্লকে কিছু ঘটনা ঘটেছে। অন্য জায়গায় শান্তিপূর্ণ ভাবেই মনোনয়ন জমা পড়েছে।’’ এমনকি, রাজ্যে এ বারের পঞ্চায়েত ভোটে অশান্তি অনেক কম বলেও আদালতকে জানায় রাজ্য। যা শুনে বিচারপতি সিন্হা বলেছেন, ‘‘আগে কী হয়েছিল সে সব কথা বলবেন না। এখন কী হচ্ছে আদালত তা নিয়ে চিন্তিত। ১৯৯৮ বা ২০০৩ সালে কী ঘটনা ঘটেছিল এই মামলায় আদালতের তা জানার প্রয়োজন নেই।’’
এ ব্যাপারে কমিশনকে সতর্ক করে বিচারপতির সংযোজন, ‘‘মারধর, ধর্ষণের হুমকির মতো অভিযোগ নিয়ে অনেকে মামলা করছেন। এগুলো কেন হবে?’’ এর পরেই হাই কোর্ট নির্দেশ দেয়, ‘‘এই সব প্রার্থীদের নির্বাচনে লড়তে দেওয়ার সুযোগ করে দিতে হবে কমিশনকে।’’ আদালত জানিয়েছে, ভাঙড়ের ২ জন এবং সিপিএমের ১৯ জন প্রার্থী সুযোগ পাবেন ভোটে লড়ার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy