Advertisement
০৮ নভেম্বর ২০২৪
Narendrapur Incident

‘শিক্ষাব্যবস্থা নষ্ট করেছেন’! নরেন্দ্রপুরের ‘অধরা’ প্রধানশিক্ষকের আবেদন খারিজ হাই কোর্টে

কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশ ছিল, প্রধানশিক্ষক-সহ যাঁদের নাম এফআইআরে রয়েছে, তাঁদের সবাইকে গ্রেফতার করতে হবে। তার পর এ পর্যন্ত আট জন গ্রেফতার হলেও প্রধানশিক্ষক এখনও অধরা।

Calcutta High Court

কলকাতা হাই কোর্ট। —ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা ও নরেন্দ্রপুর শেষ আপডেট: ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৯:১০
Share: Save:

নরেন্দ্রপুরকাণ্ডে একক বেঞ্চের রায়ের উপর হস্তক্ষেপ করল না কলকাতা হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। খারিজ হল ওই স্কুলের প্রধানশিক্ষকের আর্জি। আদালতের মন্তব্য, ‘‘এঁরা শিক্ষাব্যবস্থা নষ্ট করেছেন।’’

উল্লেখ্য, নরেন্দ্রপুরের স্কুলে গন্ডগোলের ঘটনায় এ পর্যন্ত আট জনকে গ্রেফতার করা হলেও আদালতের নির্দেশ মাফিক প্রধানশিক্ষক এখনও গ্রেফতার হননি। তিনি কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর নির্দেশ চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হন। তাঁর সঙ্গেই আবেদন করেছিলেন ওই স্কুলের পরিচালন সমিতির একাধিক সদস্য। এঁদের প্রত্যেকের নাম রয়েছে পুলিশের এফআইআরে। শুক্রবার ওই মামলার শুনানিতে ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, সিঙ্গল বেঞ্চ যথার্থ কাজ করেছে। বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তীর মন্তব্য, ‘‘স্কুলের সম্পত্তি নষ্ট, মারধর, শ্লীলতাহানির মতো একাধিক অভিযোগ রয়েছে। কেন এঁদের রক্ষাকবচ দেবে আদালত?’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘এঁরা শিক্ষাব্যবস্থা নষ্ট করছেন।’’

উল্লেখ্য, নরেন্দ্রপুরের সংশ্লিষ্ট স্কুলে অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। তা নিয়ে কয়েক দিন আগে থানায় অভিযোগও দায়ের হয়। কিন্তু গত শনিবার আচমকা স্কুলে ঢুকে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের মারধরের অভিযোগ ওঠে কয়েক জন ‘বহিরাগতের’ বিরুদ্ধে। শিক্ষকদের ঘুসি মারার দৃশ্য ছড়িয়ে পড়ে সমাজমাধ্যমে (ওই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন)। সেই তাণ্ডবে স্কুলের ‘স্টাফ রুম’ কার্যত লন্ডভন্ড হয়। শিক্ষিকাদেরও হেনস্থা করা হয় বলে অভিযোগ। ওই ঘটনার পর স্কুলের প্রধানশিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা। তাঁদের অভিযোগ, প্রধানশিক্ষকের বিরুদ্ধে সরব হওয়ায় যৌন হেনস্থার ‘মিথ্যা’ মামলায় ফাঁসানো হয় এক শিক্ষককে। তার পরই বহিরাগতদের দিয়ে হামলা চালানো হয়েছে। অন্য দিকে, প্রধানশিক্ষক তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা যাবতীয় অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে দাবি করেন, শিক্ষকদের উপরে মারধরের ঘটনা তাঁর অজানা। আর যদি কিছু ঘটে থাকে তা ‘জনরোষ’। ওই ঘটনার কথা রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রীর কানে পৌঁছনো মাত্র তিনি রিপোর্ট তলব করে জানান, কাউকে ছাড়া হবে না। এর পর রবিবার দু’জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

সোমবার ওই সংক্রান্ত মামলার শুনানিতে হাই কোর্ট নির্দেশ দেয়, প্রধানশিক্ষক-সহ যাঁদের নাম এফআইআরে রয়েছে, তাঁদের সবাইকে গ্রেফতার করতে হবে। আক্রান্ত শিক্ষকদের নিরাপত্তা দিতে হবে। মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হয়েছে। সেদিকে নজর রেখে আদালত মধ্যশিক্ষা পর্ষদের উদ্দেশে জানায়, নরেন্দ্রপুরের ওই স্কুলে পরীক্ষাকেন্দ্র হলে সেখানে ইনচার্জ নিয়োগ করতে হবে।

শুক্রবার মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রথম দিনে ওই স্কুল চত্বরে এবং বাইরের রাস্তায় সকাল থেকেই নরেন্দ্রপুর থানার পুলিশ বাহিনী ছিল। পরিস্থিতি দেখতে ঘটনাস্থলে যান নরেন্দ্রপুর থানার আইসি অনির্বাণ বিশ্বাস। কড়া নিরাপত্তার মধ্যে পরীক্ষার্থীরা পরীক্ষাকেন্দ্রে প্রবেশ করে। স্কুলের সামনেও কোনও অভিভাবককে থাকতে দেওয়া হয়নি। প্রশাসনের পক্ষ থেকে স্কুল পরিচালনার আপাতত দায়িত্ব পেয়েছেন সোনারপুরের বিডিও শিঞ্জিনী সেনগুপ্ত। তিনি নিজেও সকাল থেকে পরীক্ষাকেন্দ্রে ছিলেন। কোথাও কোনও অসুবিধা হচ্ছে কিনা সেই বিষয়ে খোঁজ নেন। পরীক্ষা শুরুর পর স্কুলে আসেন বারুইপুরের মহকুমাশাসক চিত্রদীপ সেন। ওই স্কুলে মোট ২৩১ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষা দিচ্ছে।

অন্য বিষয়গুলি:

Calcutta High Court Division Bench Narendrapur
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE