উচ্ছ্বাস। বৃহস্পতিবার কৃষ্ণনগর পোস্ট অফিস মোড়ে। নিজস্ব চিত্র।
কৃষ্ণনগরের জগদ্ধাত্রী পুজোয় বেহারাদের কাঁধে প্রতিমা চাপিয়ে বিসর্জনের পূর্ণাবয়ব শোভাযাত্রা করার অনুমতি দিল না কলকাতা হাই কোর্ট।
বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব ও বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, কাঁধে প্রতিমা চাপিয়ে শোভাযাত্রা করা যাবে না। তার বদলে ‘প্রতীকী শোভাযাত্রা’ করা যেতে পারে। তা-ও স্থানীয় প্রশাসনের অনুমোদন সাপেক্ষ। রাতে শহরের বড় পুজো কমিটিগুলির সঙ্গে বৈঠকের পরে পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, কোভিড বিধি মেনে বেহারার কাঁধে বাঁশের মাচায় (যাকে বলা হয় ‘সাং’) প্রতিমা নিয়ে ছোট মাপের শোভাযাত্রা করা যাবে।
সাঙে বিসর্জন নদিয়ার কৃষ্ণনগরে জগদ্ধাত্রী পুজোর দীর্ঘদিনের প্রথা। সেই শোভাযাত্রা দেখতে হাজার-হাজার মানুষ রাতভর রাস্তায় ভিড় করেন। করোনার কারণে হাই কোর্টের নির্দেশে গত বছর তা নিষিদ্ধ ছিল। একই কারণে এ বারও নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। কিন্তু কৃষ্ণনগরের ‘ঐতিহ্য’ এবং বহু মানুষের আবেগের কথা তুলে বড় পুজো কমিটিগুলি সাং ব্যবহারে প্রায় মরিয়া।
রাজ্য গোড়া থেকেই করোনাকালে সাঙে বিসর্জনের বিরোধিতা করে আসছে। এ দিন আদালতে রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল (এজি) সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় জানান, রাজবাড়ি থেকে কদমতলা ঘাট পর্যন্ত সরু রাস্তা। সাঙের কারণে প্রচুর ভিড় হবে। তাই এই শোভাযাত্রার অনুমতি দেওয়া উচিত নয়। গত বছরও এই শোভাযাত্রা নিষিদ্ধ করা হয়েছিল।
সাঙের দাবিতে গত মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে কৃষ্ণনগরে বিক্ষোভ, থানা ঘেরাও হয়। রাতে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ হয় দীর্ঘক্ষণ। তাতে আটকে থাকা অ্যাম্বুল্যান্সেই মৃত্যু হয় এক বালকের। এ দিন সেই ঘটনাও আদালতকে জানান এজি। মামলার আবেদনকারী কৃষ্ণনগরের চাষাপাড়ার একটি পুজো কমিটির কর্তাদের তরফে আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য আদালতে জানান, কোভিড পরিস্থিতি এবং ঐতিহ্য দুই-ই মাথায় রাখা হোক। জগদ্ধাত্রী পুজোর কারণে ‘নাইট কার্ফু’ তুলে নেওয়া হয়েছে বলেও তিনি আদালতকে জানান। মামলা নিয়ে দু’পক্ষের আইনজীবীদের বাক্য বিনিময়ও হয়। এজি-কে বলতে শোনা যায়, এক জন প্রাক্তন মেয়র হিসেবে বিকাশবাবুর এই মামলা থেকে অব্যাহতি নেওয়া উচিত।
রাতে কৃষ্ণনগর পুলিশ জেলার সুপার ঈশানী পাল বলেন, “কোভিড পরিস্থিতিতে শর্তসাপেক্ষে সাঙ নিয়ে শোভাযাত্রা করার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে।” পুলিশের শর্ত: বেহারা, ঢাকি, পুজোর কর্মকর্তা ও অন্য লোকজন মিলিয়ে মোট ৫০ জন প্রতিমার সঙ্গে শোভাযাত্রায় যেতে পারবেন। বৈঠকে পুজো কমিটিগুলির তরফে বলা হয়, বড় প্রতিমা তুলতে শুধু বেহারাই লাগে একশো-দেড়শো জন। সে ক্ষেত্রে মাত্র ৫০ জনে কী ভাবে শোভাযাত্রা করা সম্ভব? পুলিশ সুপার বলেন, সে ক্ষেত্রে সাঙে শোভাযাত্রা করা যাবে না। প্রশাসনের শর্ত মেনে যারা সাং নিয়ে শোভাযাত্রা করতে ইচ্ছুক, সেই সব পুজোকর্তাদের শুক্রবার দুপুর ১২টার আগে পুলিশের কাছে আবেদন জানাতে বলা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy