নিরাপদ সর্দার। — ফাইল চিত্র।
সন্দেশখালির প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক নিরাপদ সর্দারকে জামিন দিল কলকাতা হাই কোর্ট। এর আগে তাঁকে মঙ্গলবার অন্তর্বর্তী জামিন দিয়েছিল উচ্চ আদালত। বৃহস্পতিবার তাঁর জামিন নিশ্চিত করা হল।
মঙ্গলবার বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং বিচারপতি মহম্মদ শব্বর রসিদির ডিভিশন বেঞ্চ নিরাপদকে অন্তর্বর্তী জামিন দিয়ে জানিয়েছিল, ওই দিনই তাঁকে জেল থেকে মুক্তি দিতে হবে। তা না দিলে আদালত অবমাননার শামিল হবে। মঙ্গলবার রাতেই নিরাপদকে জেল থেকে ছাড়া হয়। এ বার তাঁকে জামিন দেওয়া হল। প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার ন্যাজাটে নিরাপদের সংবর্ধনার আয়োজন করা হয় সিপিএমের তরফে। একই সঙ্গে আদালতে স্বস্তি পেলেন প্রাক্তন বিধায়ক।
সন্দেশখালিতে গন্ডগোলের জেরে গত ১১ ফেব্রুয়ারি গ্রেফতার করা হয় সেখানকার প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক নিরাপদকে। গ্রেফতারির পরেই নিরাপদের পরিবার জামিনের আর্জি জানিয়ে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়। ওই মামলায় মঙ্গলবার বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং বিচারপতি মহম্মদ শব্বর রসিদির ডিভিশন বেঞ্চ ১০ হাজার টাকা বন্ডের বিনিময়ে নিরাপদের অন্তর্বর্তী জামিন মঞ্জুর করে। তাঁকে কোনও ভাবেই আর জেলে বন্দি রাখা যাবে না বলেও জানায় আদালত।
সূত্রের খবর, এই মামলায় বেশ কিছু অসঙ্গতি খুঁজে পায় আদালত। তার প্রেক্ষিতে বসিরহাট পুলিশ জেলার সুপারের কাছে রিপোর্ট তলব করেন বিচারপতিরা। ২৯ ফেব্রুয়ারি, এই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন পুলিশ সুপারকে এই রিপোর্ট জমা দিতে হবে। এ ছাড়া নিরাপদকে নিম্ন আদালতের প্রতিটি শুনানিতে হাজির থাকতে হবে বলে নির্দেশ দেয় আদালত। কোনও নথি বা তথ্য নষ্ট করা যাবে না বলেও নিরাপদকে জানিয়ে দেন বিচারপতিরা। মঙ্গলবার ডিভিশন বেঞ্চ বলেছিল, ‘‘এটা আদালতের কাছে আশ্চর্যজনক যে, একটা অভিযোগের ভিত্তিতে এক জন নাগরিককে গ্রেফতার করল পুলিশ! যদি একটা অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করে তা হলে সেই একই প্রক্রিয়ায় পুলিশকে কেন গ্রেফতার করা হবে না?’’ তার পরেই আদালত প্রশ্ন তোলে, ‘‘এত দিন যে এক জন নাগরিককে গ্রেফতার করে রাখা হল, তার ক্ষতিপূরণ কে দেবে?’’ পাশাপাশি, এই প্রক্রিয়ায় পুলিশ আদৌ কাউকে হেফাজতে নিতে পারে কি না তা নিয়েও প্রশ্ন তোলে আদালত।
আদালত সূত্রে খবর, তৃণমূল নেতা শিবপ্রসাদ (শিবু) হাজরার ঘনিষ্ঠ ভানু মণ্ডলের অভিযোগের ভিত্তিতে গত ১১ ফেব্রুয়ারি নিরাপদকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। এ জন্য এফআইআর দায়ের হয় গত ৯ ফেব্রুয়ারি। সন্দেশখালিকাণ্ডে তৃণমূলের স্থানীয় নেতা শিবু, উত্তম সর্দার, অজিত মাইতিকে আগেই গ্রেফতার করে পুলিশ। বৃহস্পতিবার সকালে গ্রেফতার করা হয় শাহজাহান শেখকে। পরে শাহজাহান-ঘনিষ্ঠ তথা সন্দেশখালিকাণ্ডের অন্যতম অভিযুক্ত আমির গাজিকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। ভিন্রাজ্য থেকে তাঁকে গ্রেফতার করেছে বসিরহাট থানার পুলিশ।
শাহজাহানকে গ্রেফতারের দাবিতে ফেব্রুয়ারির শুরু থেকে উত্তপ্ত হয়েছে সন্দেশখালি। ওই গন্ডগোলের নেপথ্যে নিরাপদ-সহ ১১৭ জনের হাত রয়েছে বলে অভিযোগ জমা পড়েছিল। তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, শিবুকে খুনের চেষ্টা, উস্কানি দেওয়া, বেআইনি জমায়েত করে অপরাধ সংগঠিত করা, বাড়ি বাড়ি গিয়ে মহিলাদের বিক্ষোভে অংশ নিতে বলা, অশান্তি সৃষ্টিতে প্ররোচনা দেওয়া এবং বিক্ষোভ করে পুলিশকে হেনস্থা করা। এ বার ওই মামলায় জামিন পেলেন নিরাপদ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy