মহার্ঘভাতা-সহ অন্যান্য প্রাপ্য সুবিধার দাবিতে কর্মবিরতিতে কলকাতা হাই কোর্টের কর্মীরা। নিজস্ব চিত্র।
কর্মবিরতির ডাক দিয়েছেন কলকাতা হাই কোর্টের কর্মচারীরা। আর তার জেরে থমকে গিয়েছে আদালতের বিচারপ্রক্রিয়া। আর কর্মচারীদের ডাকা বিক্ষোভের কারণে ভোগান্তির মুখে সাধারণ মানুষ।
হাই কোর্টের বিশেষ ভাতা এবং নতুন পে কমিশনের দাবিতে কর্মবিরতিতে কলকাতা হাই কোর্টের কর্মীরা। কর্মবিরতির ডাক দিয়ে হাই কোর্টের বি গেটে অবস্থান বিক্ষোভে নেমেছে আদলত কর্মচারীদের ৬টি সংগঠনের মধ্যে ৫টি সংগঠনের কর্মীরা। কলকাতা হাই কোর্টের ওই ৫ সংগঠনের প্রায় তিনশো জন স্থায়ী কর্মচারী এই অবস্থান বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন। হাই কোর্টের বকেয়া বিশেষ ভাতার দাবিতে কর্মবিরতির ডাক দিয়ে বিক্ষোভ দেখান কর্মীরা। বাকি কর্মচারীদের পে কমিশন অনুযায়ী বকেয়া এক বছরের বেতন-সহ অন্যান্য সুবিধা রাজ্য দিলেও আদালত কর্মচারীদের ওই বকেয়া মেটানো হয়নি। এই দাবি তুলে কর্মবিরতির ডাক দেওয়া হয়েছে।
আর আদালত কর্মীদের কর্মবিরতির জেরে বিচারপতিদের মধ্যে অনেকেই এজলাসে বসেননি। প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব-সহ অন্য কয়েক জন বিচারপতির বেঞ্চ বসলেও বেশির ভাগ মামলার শুনানি মুলতুবি হয়ে যাচ্ছে। ফলে কার্যত থমকে গিয়েছে উচ্চ আদালতের বিচারব্যবস্থা। ভোগান্তির শিকার সাধারণ মানুষ।
বিভিন্ন আদালতে কর্মচারীদের মূল কাজ হল, তালিকা অনুযায়ী বিভিন্ন মামলার ডাক দেওয়া, কম্পিউটারে মামলার রেকর্ড রাখা, পরবর্তী শুনানি এবং শুনানি সংক্রান্ত নির্দেশ নথিভুক্ত করা, বিভিন্ন মামলা সংক্রান্ত নথি-ফাইল গচ্ছিত রাখার মতো করণিকের কাজ। বিচারপতি এজলাসে এলে সেই মামলার ফাইল কোথায় রয়েছে, তা ওই নির্দিষ্ট কর্মচারীর পক্ষেই জানা সম্ভব। কিন্তু কর্মীরা কাজে না আসার কারণে অধিকাংশ মামলার শুনানিই হচ্ছে না।
কলকাতা হাই কোর্টে প্রতি দিন ১ হাজারের বেশি মামলা শুনানির জন্য তালিকায় নথিভুক্ত থাকে। পারিবারিক বিবাদ, বিবাহবিচ্ছেদ এবং জমি সংক্রান্ত সমস্যার মতো একাধিক সমস্যা নিয়ে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রতি দিন হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন সাধারণ মানুষ। বুধবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। কিন্তু আদালত কর্মীদের হঠাৎ বিক্ষোভ প্রদর্শনের কারণে নিরাশ হয়ে ফিরে যেতে হচ্ছে তাঁদের।
এ ছাড়াও রাজ্যের বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ মামলার শুনানিও বিক্ষোভের জেরে পিছিয়ে গিয়েছে। বর্তমানে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবিতে উত্তাল কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ। বুধবার সেই নিয়ে হওয়া মামলার শুনানির কথা ছিল বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার এজলাসে। কিন্তু কর্মচারীদের কর্মবিরতির জেরে আটকে গিয়েছে সেই মামলার শুনানি। মুলতুবি হয়েছে নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত কিছু মামলাও। একই সঙ্গে পিছিয়ে যায় পুলিশি নিষ্ক্রিয়তা-সক্রিয়তা সংক্রান্ত এবং পুরসভা সংক্রান্ত বিভিন্ন মামলার শুনানি। আদালতের কর্মীরা না থাকায় বেসরকারি সংস্থার বিভিন্ন মামলার শুনানিও পিছিয়ে গিয়েছে। আগাম জামিন সংক্রান্ত কয়েকটি মামলার শুনানিও স্থগিত হয়ে গিয়েছে কর্মীদের বিক্ষোভে। কর্মচারীদের বিক্ষোভের জেরে এই দিন অনুপস্থিত ছিলেন অনেক আইনজীবীও। কর্মচারীদের এই বিক্ষোভের জেরে অনেক মামলার আবার নতুন তারিখ পড়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy