কলকাতা হাই কোর্ট চত্বরে এ বার কালা দিবস পালনের ডাক দিলেন রাজ্য বার কাউন্সিলের আইনজীবীরা। আর এ বারও তাঁদের অভিযোগের তির হাই কোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার দিকেই। বিচারপতি মান্থার জারি করা আদালত অবমাননার রুলের প্রতিবাদ জানাতেই আগামী সোমবার, ১৬ জানুয়ারি বার কাউন্সিলের সদস্যরা হাই কোর্ট চত্বরে কালা দিবস পালন করবেন। একটি সাংবাদিক বৈঠকে শুক্রবার এই ঘোষণা করেছেন রাজ্য বার কাউন্সিলের চেয়ারম্যান অশোককুমার দেব।
বারের অন্য নেতা এবং সদস্যদের পাশে নিয়ে বর্ষীয়ান আইনজীবী অশোককুমার বলেছেন, ‘‘আমাদের প্রতিবাদ কোনও বিচারপতির বিরুদ্ধে নয়। বরং তাঁর জারি করা আদালত অবমাননার রুলের বিরুদ্ধে।’’ আইনজীবীর যুক্তি, ‘‘যদি চিকিৎসকেরা আন্দোলন করতে পারেন, শিক্ষকেরা আন্দোলন করতে পারেন, তা হলে আইনজীবীরা আন্দোলন করলে অসুবিধা কোথায়?’’ তাঁর প্রশ্ন, কেন আইনজীবীরা কোনও বিষয়ে প্রতিবাদ জানালে তাঁদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার রুল জারি করা হবে? এই মর্মেই সোমবারের প্রতিবাদ। যদিও আইনজীবীদের এই প্রতিবাদ আন্দোলনের সমালোচনা করেছে খোদ কেন্দ্রীয় বার কাউন্সিল। এমনকি, বৃহস্পতিবার একটি সাংবাদিক বৈঠক করে কলকাতা হাই কোর্টে আইনজীবীদের একাংশের ওই বিক্ষোভকে ‘অভব্যতা’ বলেও মন্তব্য করেছিল তারা।
উল্লেখ্য, সোমবার থেকেই কলকাতা হাই কোর্ট চত্বরে চলছে আইনজীবীদের একাংশের বিক্ষোভ। যা এক সময় হাতাহাতির পর্যায়েও পৌঁছয়। পরে বিচারপতি মান্থার এজলাস বয়কটের ডাক দেন আইনজীবীদের সংগঠন বার কাউন্সিলের সদস্যদের একাংশ। এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধেই বুধবারই হাই কোর্টের বিচারপতি মান্থা স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে আইনজীবীদের একাংশের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার রুল জারি করেছিলেন। তাঁর অভিযোগ ছিল, রাজ্যের আইনজীবীরা মামলার শুনানিতে উপস্থিত না হওয়ায় বিচারপ্রক্রিয়া ব্যাহত হচ্ছে। যদিও তার পরও পরিস্থিতি বদলায়নি কলকাতা হাই কোর্টে। বিচারপতি মান্থার এজলাসে শুক্রবারও উপস্থিত হননি রাজ্যের আইনজীবীরা। বৃহস্পতিবার এই ঘটনায় অসন্তোষ প্রকাশ করে বার কাউন্সিল অব ইন্ডিয়া বলেছিল, কলকাতায় যা চলছে, তা আইনজীবীদের শোভা পায় না। বিচারপ্রক্রিয়ায় বাধা দেওয়া কাম্য নয়। এমনকি, বিষয়টি খতিয়ে দেখতে কলকাতায় তিন সদস্যের দল পাঠানোর কথাও বলে।
শুক্রবার বার কাউন্সিল অব ইন্ডিয়ার সেই সিদ্ধান্ত নিয়েও প্রশ্ন তোলেন রাজ্য বার কাউন্সিলের নেতারা। তাঁরা বলেন, ঘটনাটি যখন কলকাতা হাই কোর্টে ঘটছে, তখন সেটি রাজ্য বার কাউন্সিলের বিচারবিভাগীয় আওতায় পড়ে। কেন্দ্রীয় বার কাউন্সিল রাজ্যের সংগঠনের সঙ্গে কথা বলে কী ভাবে এমন সিদ্ধান্ত নিল তা-ও বিচার্য।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy