ফাইল চিত্র।
ঘুরপথে নিয়োগের অভিযোগ ঘিরে স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)-এর বিরুদ্ধে মামলা তো চলছেই। তাদের বিরুদ্ধে এ বার তথ্যবিকৃতিরও অভিযোগ উঠল কলকাতা হাই কোর্টে। বিশেষত নম্বর সংক্রান্ত তথ্যে বিকৃতির নালিশ শুনে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় ব্যাখ্যা তলবের সঙ্গেই হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, এই অভিযোগ সত্য প্রমাণিত হলে পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়া পর্যন্ত বাতিল হতে পারে।
মাধ্যমিক স্তরের (নবম-দশম শ্রেণির) শিক্ষক নিয়োগ মামলায় অন্যতম চাকরিপ্রার্থী শিউলি খাতুনের আইনজীবী ফিরদৌস শামিম শুক্রবার এসএসসি-র একটি নথি দেখিয়ে আদালতে জানান, আগের একটি হলফনামায় বিশ্বজিৎ বিশ্বাস নামে এক প্রার্থীর ‘পার্সোনালিটি টেস্ট’-এ প্রাপ্ত নম্বর আট বলে জানিয়েছিল কমিশন। সম্প্রতি নম্বর বিভাজন অনুযায়ী মেধা-তালিকা প্রকাশের পরে দেখা যাচ্ছে, ওই প্রার্থী ৭.৫ পেয়েছেন। এই অভিযোগ অত্যন্ত গুরুতর বলে মন্তব্য করে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এ ব্যাপারে কমিশনের ব্যাখ্যা তলব করেছেন। ১৮ অগস্টের মধ্যে কমিশনকে এই বিষয়ে তাদের ব্যাখ্যা কোর্টে জমা দিতে হবে।
এই তথ্য-বিভ্রাটকে ফিরদৌস অবশ্য দুর্নীতি হিসেবেই তুলে ধরছেন। তিনি বলেন, ‘‘স্কুলে নিয়োগের ক্ষেত্রে বহুস্তরীয় দুর্নীতি হয়েছে।’’
এ দিনেই মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষক নিয়োগে মেধা-তালিকার বাইরে থেকে প্রার্থী নিয়োগ হয়েছে বলে অভিযোগ করেন অনিন্দিতা বেরা নামে অন্য এক চাকরিপ্রার্থীর আইনজীবী সুদীপ্ত দাশগুপ্ত ও বিক্রম বন্দ্যোপাধ্যায়। অনিন্দিতার মতো এমন আরও অনেকে আছেন বলেও জানান তাঁরা।
যদিও বিচারপতি বলেছেন, এটি জনস্বার্থ মামলা নয়। তাই কোনও এক জনের আবেদনের প্রেক্ষিতে সকলকে নিয়োগের নির্দেশ দেওয়া সম্ভব নয়। প্রত্যেক প্রার্থীকে নিজের বিষয় এবং জাতিগত গোত্রের উল্লেখ করে আবেদন করতে হবে। কোনও প্রার্থীর যদি মামলা করার মতো আর্থিক সঙ্গতি না-থাকে, সে-ক্ষেত্রে তিনি প্রয়োজনে কোর্ট ফি মকুব করে দেবেন। একই সঙ্গে তাঁর পর্যবেক্ষণ, কেউ দুর্নীতির শিকার হলে বাড়িতে বসে নেট মাধ্যমে প্রতিবাদ করলে চলবে না। আইনের সুবিধা পেতে আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। আন্দোলনকারীদের ব্যাপারেও খোঁজ নেন বিচারপতি। সেই প্রসঙ্গে তাঁর মন্তব্য, প্রতিবাদ করতে হলে পথেই নামতে হয়।
এ দিন সুদীপ্ত ও ফিরদৌস আরও একটি বিষয়ে আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। তাঁরা জানান, নিয়োগে পদ-পিছু ক’জন প্রার্থীকে ইন্টারভিউয়ে ডাকা হবে, তার একটি নির্দিষ্ট অনুপাত আছে। কিন্তু এ ক্ষেত্রে তার চেয়ে অনেক বেশি প্রার্থীকে ইন্টারভিউয়ে ডাকা হয়েছিল। কমিশনের বক্তব্য, অনেকেই একই নম্বর পেয়েছিলেন। তাই অনুপাতের চেয়ে বেশি লোককে ডাকা হয়েছিল। সেই তালিকাও চেয়েছেন বিচারপতি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy