Advertisement
২২ ডিসেম্বর ২০২৪
B.Ed Students

বিএড বিশ্ববিদ্য়ালয়ের সামনে নিত্যদিনের অশান্তি ! অভিযোগ শুনে পুলিশকেই দুষল কলকাতা হাই কোর্ট

সম্প্রতিই রাজ্যের ২৫৩টি বিএড কলেজের অনুমোদন সাময়িক বাতিল করেছে রাজ্যের বিএড বিশ্ববিদ্যালয়। এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধেই বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে টানা বিক্ষোভ চলছে।

—ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ ডিসেম্বর ২০২৩ ২০:২৪
Share: Save:

বিশ্ববিদ্যালয় খুলেছে ৪ ডিসেম্বর। অথচ এখনও কোনও কাজই শুরু করা যায়নি। কারণ কাজ করার জন্য কর্মী প্রয়োজন। আর বিশ্ববিদ্যালয়ের গেট পেরিয়ে সেই কর্মীরা ভিতরে ঢুকতেই পারছেন না। বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটের বাইরে রোজই বেশ কয়েক ঘণ্টার অবস্থান বিক্ষোভ করছেন কয়েকশো মানুষ। তাঁদের আটকাতে বন্ধ রাখা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের দরজা। তাতেই আটকে গিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্ত কাজও।

রাজ্যের বিএড কলেজগুলির অনুমোদন দেয় যে বিশ্ববিদ্যালয়, সেই বিআর অম্বেডকর বিশ্ববিদ্যালয়ে গত এক সপ্তাহ ধরেই চলে এমন অচলাবস্থা। তার কারণ অবশ্য পড়ুয়াদেরই একাংশ। এ ছাড়া রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে থাকা বিভিন্ন কলেজ কর্তৃপক্ষও। সম্প্রতিই রাজ্যের ২৫৩টি বিএড কলেজের অনুমোদন সাময়িক বাতিল করেছে রাজ্যের বিএড বিশ্ববিদ্যালয়। এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধেই বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে টানা বিক্ষোভ দেখাচ্ছে তারা। সম্প্রতি এই বিক্ষোভের ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিতরে ঢুকতে পারছেন না জানিয়ে অভিযোগ করেছিলেন স্বয়ং উপাচার্য। সোমবার সেই সংক্রান্ত একটি মামলার শুনানিতে এই পরিস্থিতির জন্য পুলিশ প্রশাসনকে দুষল কলকাতা হাই কোর্ট।

সোমবার এই সংক্রান্ত একটি মামলায় বিশ্ববিদ্যালয়ে চলা অচলাবস্থার কথা জানানো হয় আদালতকে। মামলাটি শুনছিলেন বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত। এ ব্যাপারে পুলিশের সমালোচনা করে তিনি বলেন, অশান্তি এড়াতে প্রয়োজনে পুলিশকে পদক্ষেপ করতে হবে।

প্রসঙ্গত, বি আর অম্বেডকর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে রয়েছে রাজ্যের মোট ৬২৪টি বিএড কলেজ। তার মধ্যে প্রায় ৬০০টিই বেসরকারি। এই বেসরকারি কলেজগুলির মধ্যে ২৫৩টি কলেজের অনুমোদন পুনর্নবীকরণের আবেদন সম্প্রতি খারিজ করা হয়। কারণ হিসাবে বলা হয়, তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনটি শর্তপূরণ করেনি। ওই তিনটি শর্ত হল— এক, কলেজে যথাযথ অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা এবং নিরাপত্তা সংক্রান্ত ব্যবস্থা থাকা। দুই, শিক্ষক এবং ছাত্রের অনুপাত ঠিক রাখা এবং তিন, শিক্ষকদের বেতন দেওয়ার প্রমাণপত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে দাখিল করা। ওই বিশ্ববিদ্যালয়গুলি এই তিনটি শর্তই না মানায় তাদের অনুমোদন পুনর্নবীকরণের প্রস্তাব খারিজ করা হয়েছে বলে জানিয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয়। সেখান থেকেই ঘটনার সূত্রপাত।

এক সঙ্গে আড়াইশোরও বেশি বিএড কলেজের অনুমোদন বাতিল হওয়ায় ছাত্র-ছাত্রীরা পড়েন আতান্তরে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন তাঁরা। এই বিক্ষোভে শামিল হন নিয়মভাঙা কলেজ কর্তৃপক্ষও। তাঁদের বক্তব্য, ‘‘প্রত্যন্ত গ্রামে দূরদূরান্ত থেকে ভর্তি হতে আসা ছাত্রছাত্রীদের বরাবর এ ভাবেই ভর্তি নিয়ে এসেছেন তাঁরা। তা হলে এখন কেন অনিয়ম বলা হচ্ছে?’’ ছাত্রদেরও প্রশ্ন, প্রশিক্ষণ নিয়ে যে সময় তারা ব্যয় করেছেন, তার কি পুরোটাই নষ্ট হবে তা হলে? এর জবাবে অবশ্য বিআর অম্বেডকর এডুকেশন ইউনিভার্সিটির অস্থায়ী উপাচার্য সোমা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দেন এঁরা নিয়ম না মেনে ভর্তি হয়েছেন। তাই নীতিগত ভাবে এঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নন।

ছাত্রদের দাবি, তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয় অনুমোদিত ৬২৪টি কলেজের তালিকা দেখে তবেই ভর্তি হয়েছেন। পাল্টা উপাচার্য জানিয়েছেন, ইউনিভার্সিটির নিয়ম হল, বিশ্ববিদ্যালয়ের পোর্টালের মাধ্যমে ভর্তি হতে হবে ছাত্র-ছাত্রীদের। যাঁরা তা হননি, তাঁদের ইউনিভার্সিটির ছাত্র হিসাবে মেনে নেওয়া সম্ভব নয়।’’

প্রসঙ্গত উপাচার্য এবং অন্যান্য প্রশাসনিক ব্যক্তিকে হুমকি দেওয়া হয়েছে এই অভিযোগে বন্ধ ছিল বিশ্ববিদ্যালয়। পরে পুলিশ প্রশাসনের কাছ থেকে আশ্বাস পেয়ে গত ৪ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় খুলেছিল। কিন্তু তার পরও বিক্ষোভের জেরে কাজ শুরু করা যায়নি।

অন্য বিষয়গুলি:

Baba Saheb Ambedkar Education University Calcutta High Court
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy