—ফাইল চিত্র।
গরিব, মধ্যবিত্ত আমানতকারীদের টাকা মিটিয়ে দিতে যে-সব অস্থাবর সম্পত্তি বিক্রি করে দেওয়ার কথা ছিল, পুলিশের চোখের সামনে থেকে সেগুলো বেমালুম উধাও! বেআইনি অর্থ লগ্নি সংস্থা এমপিএসের সম্পত্তি কী করে এ ভাবে ‘ভ্যানিশ’ হয়ে গেল, রাজ্য পুলিশের ডিজি বীরেন্দ্রের কাছে তার জবাব চেয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। ইতিমধ্যেই লেক টাউনে ওই সংস্থার মালিকানাধীন একটি সম্পত্তি বিক্রি করে বিনিয়োগকারীদের ফেরত দেওয়ার জন্য টাকা জমা রাখা হয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ডিজি বীরেন্দ্র।
ঝাড়গ্রামে এবং কলকাতার লেক টাউনে এমপিএসের রিসর্ট ও অফিস রয়েছে। হাইকোর্টের নির্দেশেই সেই দুই জায়গায় চেয়ার, টেবিল, আলমারি, বাথটব-সহ যাবতীয় অস্থাবর সম্পত্তি আলাদা ঘরে তালাবন্দি করে সিল করে দেওয়া হয়েছিল। সম্প্রতি ঝাড়গ্রামে গিয়ে দেখা গিয়েছে, ঘরের সিল অটুট। কিন্তু ঘরের ভিতর থেকে সব মালপত্র উধাও। পর্যবেক্ষক দলের সদস্য, আইনজীবী শুভাশিস চক্রবর্তী বলেন, ‘‘অনুমান করা হচ্ছে, দরজার কব্জা খুলে সেখান থেকে মালপত্র বার করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। পুলিশি পাহারা ছিল। তা সত্ত্বেও এটা ঘটেছে।’’
লেক টাউনে পিছনের দরজা ভেঙে নিয়ে যাওয়া হয়েছে অস্থাবর সম্পত্তি। পুরো বিষয়টি নতুন করে হাইকোর্টে জানানো হয়। দুই বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী ও জয় সেনগুপ্ত তাঁদের নির্দেশে জানান, ‘বিরক্তিকর’ এই ঘটনার প্রেক্ষিতে এমপিএসের সম্পত্তির নিরাপত্তার ক্ষেত্রে পুলিশ কী ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছে, তা জানানোর জন্য রাজ্য পুলিশের ডিজি-কে নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে।
আরও পড়ুন: চারিদিকে একটাই দাবি, ‘দাদা একটা সই!’
মাঝ-ফেব্রুয়ারির মধ্যে এই রিপোর্ট আদালতে পেশ করার কথা। ঝাড়গ্রামে এমপিএসের বিশাল রিসর্টটি ঝাড়গ্রাম ও বিনপুর— দু’টি থানা এলাকাতেই পড়ে। ওই দুই থানা এবং লেক টাউন থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসারকে সম্পত্তি দেখভাল করার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতিরা।
শুভাশিসবাবু জানান, এমপিএসের আর্থিক নয়ছয় নিয়ে আদালতে যখন মামলা চলছিল, তখনও তারা বাজার থেকে টাকা তুলছিল বলে এক দল আমানতকারীর অভিযোগ। হাইকোর্ট বিষয়টি দেখার জন্য ২০১৬ সালের ২৩ ডিসেম্বর অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শৈলেন্দ্রপ্রসাদ তালুকদারের নেতৃত্বে এক সদস্যের কমিটি গড়ে দেয়। বলা হয়, ওই লগ্নি সংস্থার যত সম্পত্তি আছে, সবই সিল করে দিতে হবে।
শুভাশিসবাবু বলেন, ‘‘আমরা সেই কমিটির পক্ষ থেকে ঝাড়গ্রাম ও লেক টাউনে গিয়ে এমপিএসের সব সম্পত্তি সিল করে দিই। ঝাড়গ্রামে এত মালপত্র ছিল যে, সেগুলো
রাখার জন্য চারটি ঘরের দরকার হয়। ভিতরে তা ডাঁই করে রেখে ঘর সিল করে দেওয়া হয়েছিল। সেখানে অন্যান্য আসবাব ছাড়াও ছিল প্রচুর বাসনপত্র। তালা মেরে চাবি তুলে দেওয়া হয় পুলিশের হাতে। ওই সব সম্পত্তির সুরক্ষায় পুলিশি পাহারাও বসানো হয়।’’
আইনজীবী জানান, গত বছরের মাঝামাঝি আবার পর্যবেক্ষণে যান তাঁরা। তখনই দেখা যায়, সিল একই রকম রয়েছে। কিন্তু ভিতরের সমস্ত মালপত্র উধাও। লেক টাউনে যে-বাড়িতে মালপত্র রাখা ছিল, তার পিছনের দরজা ভেঙে তা নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আইনজীবীরা জানান, পুলিশের গাফিলতিতেই এটা ঘটেছে বলে মনে করা হচ্ছে। তাই রাজ্যের কাছে এর ক্ষতিপূরণ চাওয়া হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy