Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪

মির্জার পরে কি সিবিআই নিশানায় মুকুল? রাজনৈতিক মহলে তীব্র হচ্ছে জল্পনা

মুকুল অবশ্য তাঁকে ঘিরে এই ধরনের আশঙ্কা নস্যাৎ করে দিয়েছেন। তবে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য, জেরার পর মির্জার কাছ থেকে অনেক সত্য সামনে আসবে।

মুকুল রায়।—ফাইল চিত্র।

মুকুল রায়।—ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০৩:৪১
Share: Save:

নারদ-কাণ্ডে এসএমএইচ মির্জা গ্রেফতার হওয়ার পর এ বার সিবিআই তদন্তের তির কি মুকুল রায়ের দিকে? সেই প্রশ্ন ঘুরতে শুরু করল রাজনৈতিক শিবিরে। কারণ, মির্জা ঘোষিত ভাবেই ‘মুকুল-ঘনিষ্ঠ’ ছিলেন। ম্যাথুর সঙ্গে টাকা লেনদেনের ভিডিও ফুটেজেও (আনন্দবাজার পত্রিকা তার সত্যতা যাচাই করেনি) এই ধরনের ইঙ্গিত রয়েছে।

মুকুল অবশ্য তাঁকে ঘিরে এই ধরনের আশঙ্কা নস্যাৎ করে দিয়েছেন। তবে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য, জেরার পর মির্জার কাছ থেকে অনেক সত্য সামনে আসবে। সিবিআই ডাকতে যখন শুরু করেছে, তখন আরও অনেককেই ডাকবে।’’

নারদ-কাণ্ডে ম্যাথু স্যামুয়েলের সঙ্গে মির্জার যে কথোপথনের ভিডিও সামনে এসেছে, তাতে দেখা যাচ্ছে, মির্জা বলছেন, ‘‘মুকুলদার সঙ্গে আমার সম্পর্ক খোলামেলা। আমি ইতিমধ্যেই ওঁর জন্য ৬০ জোগাড় করেছি।’’ মুকুলের সঙ্গে ম্যাথুর কথোপকথনের ভিডিওতে আবার মুকুল বলছেন, ‘‘আমার এসপি মির্জার সঙ্গে কথা বলুন। ও আমার এবং আপনার মধ্যে মধ্যস্থতা করবে। যাওয়ার আগে মির্জাকে ফোন করে নিন। ওকে গিয়ে এটা দিন।’’

প্রাক্তন তৃণমূল এবং অধুনা বিজেপি নেতা মুকুল অবশ্য বৃহস্পতিবার বলেন, ‘‘সিবিআই তার পদ্ধতি অনুযায়ী কাজ করছে। আইন আইনের পথে চলবে। এ বিষয়ে আমার কোনও রাজনৈতিক বক্তব্য থাকতে পারে না।’’ মির্জা গ্রেফতার হওয়ার পরে তাঁর সমস্যা বাড়ল কি না, সে প্রশ্নে মুকুলের বক্তব্য, ‘‘আমার সমস্যার কোনও প্রশ্নই নেই। আমাকে কেউ টাকা দিতে চাননি, আমি নিইওনি। আমার কাছে ওঁরা ব্যবসার প্রস্তাব নিয়ে এসেছিলেন। আমি তাঁদের মির্জার সঙ্গে দেখা করতে বলেছিলাম। কারণ মির্জা তখন বর্ধমানের এসপি ছিলেন। আর ওঁরা ব্যবসার জন্য বর্ধমানে জমি খুঁজছিলেন।’’ ব্যবসার সঙ্গে পুলিশ সুপারের কী সম্পর্ক? মুকুলবাবুর জবাব, ‘‘ব্যবসায় সরকারি সাহায্য লাগে। পুলিশের নানা রকম সাহায্য দরকার হয়।’’

সিবিআইয়ের এক তদন্তকারীর কথায়, ‘‘মির্জার সঙ্গে কয়েক জন নেতা-মন্ত্রীকে মুখোমুখি বসিয়ে জেরার পরিকল্পনাও করা হয়েছে। তাঁদের তলবি নোটিস দেওয়া হবে।’’ উল্লেখ্য, মুকুলকে বৃহস্পতিবারই তলব পাঠিয়ে শুক্রবার হাজিরা দিতে বলা হয়েছে।

এ দিকে, মির্জা গ্রেফতার হওয়ার পর রাজনৈতিক দলগুলি সরব হয়েছে। সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য মহম্মদ সেলিমের প্রশ্ন, ‘‘মির্জাই তো বলেছিলেন, মুকুল রায়ের হয়ে তিনি টাকা পয়সায় দায়িত্ব সামলান। এখন মুকুল বিজেপিতে গিয়েছেন বলে কি তাঁর সাতখুন মাফ?’’ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্রেরও বক্তব্য, ‘‘শুধু মির্জা নন, নারদ-কাণ্ডে অভিযুক্ত সব নেতা-মন্ত্রীকেই তদন্তে ডাকতে হবে। অভিযুক্তরা তৃণমূলেই থাকুন আর বিজেপিতেই যান, কেউ যেন ছাড় না পান।’’ বিরোধী দলনেতা কংগ্রেসের আব্দুল মান্নান বলেন, ‘‘চুনোপুঁটিকে গ্রেফতার করে আসল লোককে ছেড়ে দেওয়ার নাটক হচ্ছে।’’ আর তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের প্রতিক্রিয়া, ‘‘যে যা করেছে, তেমন বুঝবে। কে কোথায় গ্রেফতার করল, তা নিয়ে আমার কি মন্তব্য করা উচিত? আমি এ সবের মধ্যে থাকি না।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy