Advertisement
০৮ নভেম্বর ২০২৪
Bus Terminus

ধর্মতলার বাস টার্মিনাস সরানো নিয়ে পরিবহণ দফতরের প্রস্তাবে অখুশি বাসমালিক সংগঠনগুলি

পরিবহণ দফতরের প্রস্তাবে বলা হয়েছে, শহরতলি থেকে আগত কোনও বাস বা মিনিবাস ধর্মতলা বাস টার্মিনাসে দাঁড়াতে পারবে না। এতে খুশি নন বাসমালিকরা।

ধর্মতলা টার্মিনাস।

ধর্মতলা টার্মিনাস। — ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ অগস্ট ২০২৩ ২০:৫৭
Share: Save:

ধর্মতলার বাস টার্মিনাস অন্যত্র সরানো নিয়ে পরিবহণ দফতরের প্রস্তাবে খুশি নয় বাসমালিকদের সংগঠনগুলি। সোমবার কসবার পরিবহণ ভবন ২-এ বাসমালিক সংগঠনগুলির সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন পরিবহণ দফতরের কর্তারা। সেখানেই বাসমালিকদের ধর্মতলার বাস টার্মিনাস অন্যত্র সরিয়ে যাওয়া নিয়ে বেশ কিছু প্রস্তাব দিয়েছে পরিবহণ দফতর। একটি প্রস্তাবে বলা হয়েছে, শহরতলি থেকে আগত কোনও বাস বা মিনিবাস ধর্মতলা বাস টার্মিনাসে দাঁড়াতে পারবে না। তাদের যাত্রী ওঠানামার কাজ করেই সেখান থেকে বেরিয়ে যেতে হবে। এ ক্ষেত্রে বাসগুলি কোন বিকল্প স্থানে গিয়ে দাঁড়াবে তা জানানো হয়নি। পাশাপাশি আরও একটি প্রস্তাবে বলা হয়েছে, পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলা থেকে আগত দূরপাল্লার বাসগুলিও আর ধর্মতলার টার্মিনাসে দাঁড়াতে পারবে না। সেগুলির জন্য একটি বিকল্প বন্দোবস্ত করতে হবে। বেসরকারি বাস মালিকদের সংগঠন গুলিকে বিকল্প জায়গা সন্ধান করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে বৈঠকে। তবে শহরের ভিতরে বাস রাখার জন্য এন্টালি এলাকার পরিবহণ দফতরের একটি ডিপোকে ব্যবহার করা যেতে পারে বলে জানানো হয়েছে।

পরিবহণ দফতরের কোনও প্রস্তাবই পছন্দ হয়নি বাস মালিক সংগঠনগুলির। এ ক্ষেত্রে স্মৃতি সাবার্বান বাস সার্ভিসেসের সাধারণ সম্পাদক টিটু সাহা বলেন, ‘‘প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে শহরতলি থেকে কোনও বাস এসে ধর্মতলার টার্মিনাসে দাঁড়াতে পারবে না। যে ড্রাইভার ও কন্ডাকটাররা দু’ঘন্টার বেশি সময় বাসটি চালিয়ে নিয়ে আসবেন তাঁদের ন্যূনতম খাওয়া-দাওয়া বা প্রয়োজনীয় কাজকর্ম করার সুযোগটুকুও দেওয়া হবে না। এমন অমানবিক প্রস্তাবের সঙ্গে আমরা কখনওই একমত হতে পারব না। বাস্তব পরিস্থিতি বিবেচনা করে আদালতের নির্দেশ কার্যকর করুক পরিবহণ দফতর। কিন্তু সে ক্ষেত্রে মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি দিয়েও বিষয়টি দেখা হোক।’’ এ ক্ষেত্রে অল বেঙ্গল বাস মিনিবাস সমন্বয় সমিতির রাহুল চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘যানজট ও দূষণের সমস্যা থেকে কলকাতা শহরকে বাঁচাতে ২০০৪ সালের ২ অগস্ট একটি নির্দেশিকা জারি করেছিল পরিবহণ দফতর। সেই নির্দেশিকায় নতুন কোনও রুটকে পারমিট না দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। যদিবা কোনও নতুন রুটের পারমিট দেওয়া হত, তা হলে ধর্মতলা, হাওড়া ও ব্যান্ড স্ট্যান্ডকে বাদ রেখে তা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। এর ফলে শহরে বাসের সংখ্যা অনেকটাই কমে গিয়েছে। তা সত্ত্বেও কেন যানজট বা দূষণের মাত্রা কমানো গেল না, তা নিয়ে পরিবহণ দফতরের ভাবনা চিন্তা করা দরকার। আর যে ভাবে পরিবহণ দফতর একতরফা ভাবে ধর্মতলা বাস টার্মিনাস সরানো নিয়ে সিদ্ধান্ত আমাদের ওপর চাপিয়ে দিতে চাইছে, তা বেসরকারি পরিবহণ পরিষেবাকে ভেঙে দিতে পারে।’’

বেঙ্গল বাস সিন্ডিকেটের নেতা সুরজিৎ সাহা বলেন, "করোণা সংক্রমনের পর পরিবহণ পরিষেবা কার্যত উঠে গিয়েছে।

ব্যান্ড স্ট্যান্ড থেকে যখন মিনি বাস স্ট্যান্ড তুলে দেওয়া হল, তখন বলা হল বিকল্প জায়গা দেওয়া হবে। কিন্তু সেই স্ট্যান্ড উঠে যাওয়ার পর ধীরে ধীরে মিনি বাস পরিষেবা উঠে গিয়েছে। এখন তো হাতে গোনা মিনি বাস চলে কলকাতার রাস্তায়। এভাবে কি পরিবহন দপ্তর বেসরকারী পরিবহন ব্যবস্থা তুলে দিতে চাইছে? যে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে তারা যেন মাথায় রাখেন কৃষির পর বেসরকারি পরিবহণ ক্ষেত্রেই সবচেয়ে বেশি মানুষের কর্মসংস্থান হয়।" এ ক্ষেত্রে পরিবহণ দফতর তাদের সিদ্ধান্ত বেসরকারি বাস মালিকদের জানিয়ে দেওয়ার পর তা কলকাতা হাই কোর্টকে জানাবে। ধর্মতলা তথা এসপ্লানেড চত্বরের একটি বড় অংশ জুড়ে ওই বাস স্ট্যান্ড থাকার কারণে শহরেযানজট এবং দূষণ অনেকাংশে বাড়ছে বলে অভিযোগ। তাই সেখান থেকে ওই বাস স্ট্যান্ড সরিয়ে বিকল্প ব্যবস্থা করার জন্য আদালতে আবেদন করেছেন পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত।বর্তমানে ওই মামলা বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং বিচারপতি শম্পা সরকারের এজলাসে বিচারাধীন। গত শুক্রবার ডিভিশন বেঞ্চের শুনানিতে অ্যাডভোকেট জেনারেল সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, এই সংক্রান্ত বিষয়ে সমীক্ষার কাজ শুরু করার জন্য ইতিমধ্যেই রাইটসকে বরাত দেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি সেনাবাহিনী, মেট্রো রেল, পূর্ত দফতর, কলকাতা পুরসভা সহ সব পক্ষের সঙ্গে বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ৬ সপ্তাহ পর ফের এই মামলার শুনানি হবে। সেখানেই এই প্রস্তাব তুলে ধরতে পারে পরিবহণ দফতর।

অন্য বিষয়গুলি:

Transport Department Dharmatala Esplanade
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE