গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
কয়েক দিন আগে নদিয়ার কৃষ্ণগঞ্জে বাংলাদেশ সীমান্তের কাছে গৃহস্থের বাড়ির উঠোন খুঁড়ে মিলেছিল ১৫ কেজি মতো অবৈধ সোনা। মুর্শিদাবাদের জলঙ্গি সীমান্তেও একই ঘটনা ঘটেছে সম্প্রতি। কাঁটাতারের বেড়া থেকে মাত্র ৫০০ মিটার দূরে একটি বাড়ির মাটি খুঁড়ে উদ্ধার হয় প্রচুর পরিমাণ নিষিদ্ধ কাশির সিরাপ। এই দু’টি ঘটনার সূত্র ধরে নতুন পাচার কৌশলের খোঁজ পেলেন সীমান্ত রক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)-এর তদন্তকারীরা। বিএসএফ সূত্রে, জওয়ানদের চোখে ধুলো দিতে এখন পাচার সামগ্রী পুঁতে রাখা হচ্ছে বাড়ির উঠোনে! পরে পরিস্থিতি ঠান্ডা হলে, সীমান্তে নজরদারি শিথিল হলেই সুযোগ বুঝে তা বার করে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে গন্তব্যে।
বিএসএফ সূত্রে জানা গিয়েছে, গোপন সূত্র মারফত খবর পেয়ে নদিয়ায় কৃষ্ণগঞ্জ থানার বিজয়পুর গ্রামে একটি বাড়িতে হানা দেয় ৩২ নম্বর ব্যাটেলিয়ান-সহ কলকাতার রাজস্ব গোয়েন্দা দফতরের আধিকারিকেরা। সেখানে তল্লাশি চালিয়ে তাঁরা ১০৬টি সোনার বিস্কুট উদ্ধার করেন। ওই ঘটনায় যাঁরা গ্রেফতার হয়েছেন, তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা গিয়েছে, বিস্কুটগুলি পাচারের উদ্দেশ্যে ওই বাড়িতে লুকিয়ে রাখা হয়েছিল। উদ্ধার হওয়া সোনার বিস্কুটগুলির ওজন ১৪.২৯৬ কেজি। জেরায় ধৃতেরা জানিয়েছেন, সোনার বিস্কুটগুলি বাংলাদেশের নাস্তিপুর গ্রামের বাসিন্দা মাসুদ ও নাসির নামের দুই চোরাচালানকারীর কাছ থেকে তাঁরা সংগ্রহ করেছিলেন। সেগুলি বিজয়পুর এলাকা সংলগ্ন গেদে গ্রামের বাসিন্দা সন্তোষ হালদারের কাছে পৌঁছে দেওয়ার কথা ছিল তাঁদের। সীমান্তে বিএসএফের অতি তৎপরতা থাকায় নজরদারি এড়াতে কিছু দিনের জন্য পাচারকারীর বাড়িতেই পুঁতে রাখা হয়েছিল সোনার বিস্কুটগুলি।
বিএসএফ সূত্রে জানা গিয়েছে, অন্য একটি ঘটনায় মুর্শিদাবাদের জলঙ্গি থানা এলাকার পরাশপুর সীমান্ত থেকে মাত্র কয়েকশো মিটার দূরে এক গৃহস্থের বাড়িতে নিষিদ্ধ কাশির সিরাপ মজুতের খবর মিলেছিল। গোটা বাড়ি তল্লাশি করেও কিছুই মেলেনি। দীর্ঘ ক্ষণ তল্লাশি ও জিজ্ঞাসাবাদের পর বাড়ির উঠোন ঘুরে উদ্ধার হয় প্রচুর পরিমাণে নিষিদ্ধ কাশির সিরাপ। গ্রেফতার করা হয় বাড়ি মালিক তথা মূল অভিযুক্ত টিটন মণ্ডলের স্ত্রীকে। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যায়, চোরাকারবারীদের কাছ থেকে ফেনসিডিলের বোতল মজুত করতেন তিনি। তার পর চাহিদা মতো বাংলাদেশে এই নিষিদ্ধ কাফ সিরাপের বোতল সরবরাহ করা হত। এই ঘটনায় তার বিরুদ্ধে নিষিদ্ধ মাদক পাচারের ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে।
দুই ঘটনায় একই প্রবণতা দেখতে পাওয়ায় নতুন করে সীমান্তে তৎপরতা শুরু হয়েছে বলে খবর বিএসএফ সূত্রে। বাহিনীও আশাবাদী, অচিরেই পাচারকারীদের নতুন কৌশল ভেস্তে যাবে। দক্ষিণ বঙ্গ ফ্রন্টিয়ারের ডিআইজি একে আর্য বলেন, ‘‘কৌশল বদলে বেশ কিছু ক্ষেত্রে সীমান্ত লাগোয়া গ্রামগুলির উঠোন থেকে পাচার সামগ্রী মাটি খুঁড়ে উদ্ধার করা হয়েছে। প্রথমে বেগ পেতে হলেও বেশ কয়েক জন ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ করে নতুন তথ্য হাতে সেছে। পাচারকারীদের নতুন কৌশল ভেস্তে বলে আমরা আশাবাদী।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy