শান্তিনিকেতন থানার রাস্তা আটকে জমােয়ত। রয়েছেন উপাচার্যও। রবিবার। ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী
পৌষমেলা তারা করতে পারবে না বলে আগেই জানিয়েছে বিশ্বভারতী। এ বার ঐতিহ্যবাহী মেলার মাঠে সীমানা পাঁচিল দিতে শুরু করলেন বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। তা নিয়ে রবিবার দিনভর তপ্ত রইল শান্তিনিকেতন। চলল প্রতিবাদ, বিক্ষোভ। মাঠ কেন এ ভাবে ঘিরে ‘অচলায়তন’ তৈরি করা হবে, সেই প্রশ্ন তুলে ‘মেলার মাঠ বাঁচাও, শান্তিনিকেতন বাঁচাও’ নামে পেজ তৈরি করেও শুরু হয়েছে বিরোধিতা। যদিও পাঁচিল দেওয়ার কাজ চলেছে জোরকদমে।
শনিবার থেকেই মেলার মাঠের চার দিকের পিলার উপড়ে মাটি কাটার কাজ শুরু করেছে বিশ্বভারতী। তার পরেই স্থানীয় ব্যবসায়ী সমিতির বিরুদ্ধে ঠিকাদারকে মারধরের অভিযোগ ওঠে। পরে বিকেলে মাঠ ঘেরার প্রতিবাদ জানিয়ে মিছিল হয়। এ দিন সকালে ঠিকাদারকে মারধরের বিরুদ্ধে ও মেলার মাঠ আগলাতে বিশ্বভারতীর তরফে কর্মী, নিরাপত্তা রক্ষীরা কেন্দ্রীয় দফতরের সামনে উপস্থিত হন। উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর নেতৃত্বে কার্যত ঘিরে ফেলা হয় শান্তিনিকেতন থানা সংলগ্ন রাস্তা ও বিদ্যাভবন অঙ্গনের সামনের অংশ। ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে শান্তিনিকেতন থানায় অভিযোগও দায়ের করা হয় বিশ্বভারতীর তরফে।
রবিবার, সাপ্তাহিক ছুটির দিনে বিশ্বভারতীর এত জন কর্মী, অধ্যাপক ও আধিকারিকদের এই ভিড় নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ‘গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষা সমিতি’র বীরভূম জেলা সম্পাদক শৈলেন মিশ্র। তিনি বলেন, “সকলের কাছে অনুরোধ, উপাচার্যের লাঠিয়াল হবেন না।” বর্তমান পরিস্থিতিতে বিরাট জমায়েতের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে উপাচার্যের বিরুদ্ধে শান্তিনিকেতন থানায় অভিযোগও দায়ের করেন শৈলেনবাবু। শৈলেনবাবু ও কলাভবনের প্রাক্তনী শুভলক্ষ্মী গোস্বামী উপাচার্যের সঙ্গে কথা বলতে গেলেও উপাচার্য চলে যান। উপস্থিত নিরাপত্তাকর্মী ও আধিকারিকদের একাংশ তাঁদের হেনস্থা করেছে বলেও অভিযোগ করেন শুভলক্ষ্মীদেবী। একটা সময় তিনি কেঁদে ফেলে বলেন, ‘‘এক এক জন উপাচার্য আসছেন আর পাঁচিল তুলে রবীন্দ্র আদর্শকে ধূলিসাৎ করে দিচ্ছেন।’’ পাঁচিল তৈরিতে বাধা আটকাতে কিছু সময় শান্তিনিকেতন থানার সামনের রাস্তা আটকে রাখেন বিশ্বভারতীর নিরাপত্তাকর্মীরা। তার সামনেই পোস্টার হাতে বিক্ষোভ দেখান কয়েক জন পড়ুয়া।
বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত জনসংযোগ আধিকারিক অনির্বাণ সরকার একটি হোয়াটসঅ্যাপ বার্তায় দাবি করেছেন, ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইবুনাল নির্দেশ দিয়েছিল, পৌষমেলা আয়োজন
করতে হবে ঘেরা জায়গায়। যাতে আশেপাশের লোকালয় ও বিশ্বভারতীর ক্যাম্পাস থেকে তা পৃথক থাকে। আগামী ১৯ অগস্টের মধ্যে কাজ শুরু হয়েছে কিনা, তা জানাতে হবে গ্রিন ট্রাইবুনালে।
কিন্তু, বিশ্বভারতী আগেই জানিয়েছে পৌষমেলার আয়োজনে তারা অপারগ। তাই হবে না মেলা। তা হলে তাকে ঢাল কেন করা হবে— প্রশ্ন তুলছেন অনেকেই। বিশ্বভারতীর সঙ্গে যারা যৌথ ভাবে মাঠ ঘেরার কাজ করছে, সেই শান্তিনিকেতন ট্রাস্টের সাম্মানিক সম্পাদক অনিল কোনার বলেন, “নিরাপত্তার কারণেই মাঠ পাঁচিল দিয়ে ঘিরে ফেলতে হচ্ছে। এতে দৈনন্দিন খেলাধুলা বা প্রাতর্ভ্রমণে কোনও প্রভাব পড়বে না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy