প্রতীকী ছবি।
দু’বছর আগে লোকসভা ভোটের সময়ের ছবিরই যেন ফের পূর্বাভাস! কংগ্রেসের বাড়তি দাবির জেরে জোট-শিবিরে ফের জটিলতা। তবে ক্ষুব্ধ হলেও বাম শিবিরের আশা, জট কাটয়ে সমাধান সূত্র উঠে আসবে আলোচনাতেই।
বামফ্রন্ট নেতৃত্বের সঙ্গে আসন-রফা নিয়ে প্রথম বৈঠকে ১৩০টি আসনে লড়ার দাবি করেছিল কংগ্রেস। পাঁচ বছর আগে বামেদের সঙ্গে সমঝোতার ভিত্তিতে এবং সমঝোতা বহির্ভূত ভাবে সব মিলিয়ে ৯২টি আসনে প্রার্থী দিয়েছিল তারা। এ বার ৩২টি বাড়তি আসনের দাবির ভিত্তি কী, নিয়ে ধন্দ তৈরি হয়েছিল বাম শিবিরে। সূত্রের খবর, এর পরে ১৩০টি আসনের তালিকা আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে পাঠিয়ে দিয়েছে বিধান ভবন। সেই তালিকায় গত বার সিপিএমের জেতা কয়েকটি আসনও রয়েছে বলে সূত্রের খবর। কংগ্রেসের এই আচরণে যথেষ্ট অস্বস্তিতে পড়েছেন সিপিএম নেতৃত্ব। বামেদের সঙ্গে আলোচনার জন্য এআইসিসি যে কমিটি গড়ে দিয়েছিল, সেই কমিটির বাকি সদস্যেরাও এমন তালিকার ব্যাপারে অন্ধকারে। জেলা সভাপতিদের দাবির ভিত্তিতে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির নির্দেশে তালিকা তৈরি হয়ে গিয়েছে বলে কংগ্রেস সূত্রের খবর।
রফার আলোচনা এগোনোর আগেই কংগ্রেস একতরফা ভাবে দাবি তুলতে শুরু করায় ক্ষোভ তৈরি হয়েছে বাম শিবিরে। আগের দিনের বৈঠকে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির কিছু মন্তব্য এবং আচরণেও বিমান বসু, সূর্যকান্ত মিশ্রেরা মর্মাহত। তবে জোটের স্বার্থেই তাঁরা কেউ প্রকাশ্যে মুখ খুলছেন না। দলের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যের বক্তব্য, ‘‘আমরা আগের বার যে যত আসনে লড়েছিলাম, তার চেয়ে অনেক বেশি আসন দাবি করে কারওরই লাভ নেই। বরং, আমাদের দেখা উচিত বিজেপি এবং তৃণমূলের বিরুদ্ধে সব শক্তিকে যাতে বৃহত্তর জোটে জায়গা দেওয়া যায়। আশা করা যায়, আলোচনার পথে সমাধান মিলবে।’’
বাম ও কংগ্রেস নেতৃত্বের পরবর্তী বৈঠক হওয়ার কথা আগামী ২৫ জানুয়ারি। কিন্তু দলের পদক্ষেপের বিষয়ে অন্ধকারে থাকলে কী ভাবে তাঁরা বৈঠকে গিয়ে রফার প্রক্রিয়া এগোবেন, তা নিয়ে সংশয়ে আছেন আব্দুল মান্নান, প্রদীপ ভট্টাচার্যের মতো বর্ষীয়ান নেতারা। এআইসিসি-র পর্যবেক্ষক জিতিন প্রসাদও রাজ্য দলের কাজকর্ম দেখে আতান্তরে! কংগ্রেসের অন্দরে অনেকেই বলছেন, ২০১৬ সালের বিধানসভা ভোটের পরে যৌথ কর্মসূচি থেকে বামেরা দূরে সরে যাওয়ায় জোটের আবহে ধাক্কা লেগেছিল। হায়দরাবাদে ২০১৮ সালের পার্টি কংগ্রেসের পরে সিপিএম যখন বোঝাপড়ার লাইনে দৃঢ় ভাবে ফিরে এল, তার এক বছরের মধ্যে কংগ্রেস আবার লোকসভা ভোটে বামেদের হাতে থাকা রায়গঞ্জ ও মুর্শিদাবাদ আসনের দাবিতকে অনড় থেকে সমঝোতা ভেস্তে দিল। এখন বিধানসভায় ফের আসনের দাবিতে জটিলতা তৈরি হচ্ছে, জোট দানা বাঁধছে না।
আসনের ব্যাপারে জেলায় বাম নেতৃত্বের দাবি-দাওয়াকে তিনি গুরুত্ব দিতে নারাজ বলে বুঝিয়ে দিয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। বহরমপুরে বুধবার তাঁর স্পষ্ট কথা, “জেলা নেতারা কে কী বললেন, আমার জানার প্রয়োজন নেই! যা কথা বলার, রাজ্য স্তরে বলেছি। সেই মতোই কথা এগোবে।” তাঁদের যুক্তি, গত লোকসভা নির্বাচনে বামেরা ভোট টানতে পারেননি। পাঁচ বছর আগের বিধানসভা আসনের হিসেব ধরে চললে হবে না। যা শুনে বাম নেতারা বলছেন, নিজেদের সুবিধা মতো মাপকাঠি তৈরি করে নিলে মুশকিল!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy