দলীয় কার্যালয়ে সাংবাদিক সম্মেলন সেরে বাড়িতে ঢোকার পরেই বোমাবাজি শুরু হয়। —নিজস্ব চিত্র।
রাজনৈতিক হিংসায় ফের উত্তপ্ত ভাটপাড়া। স্থানীয় সাংসদ তথা রাজ্য বিজেপির সহ-সভাপতি অর্জুন সিংহের বাড়ি ও দলীয় কার্যালয় ঘিরে ধরে মুড়িমুড়কির মতো বোমা পড়ল বৃহস্পতিবার। সাংসদ নিজে বা অন্য কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হননি। তবে প্রকাশ্য দিবালোকে অর্জুন সিংহের মতো দাপুটে নেতার বাড়ির চারপাশে বোমা পড়ায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে গোটা এলাকায়। শিল্পাঞ্চলে রাজনৈতিক উত্তেজনাও এক ধাক্কায় বেড়ে গিয়েছে।
এ দিন দুপুরে দলীয় কার্যালয়ে একটি সাংবাদিক সম্মেলন করেন ব্যারাকপুরের বিজেপি সাংসদ। সাংবাদিক সম্মেলন সেরে তিনি বাড়িতে ঢোকার পরেই বোমাবাজি শুরু হয়। সাংসদ বলেন, ‘‘আমি বাড়ি ঢোকার সময়েই এখানে কিছু সন্দেহজনক গতিবিধি লক্ষ্য করি। জামাকাপড় ছেড়ে নীচে এসেছিলাম আমার নিরাপত্তারক্ষীদের সতর্ক করতে যে, গোলমাল কিছু হতে পারে। কিন্তু কিছু বলার আগেই বোমা পড়তে শুরু করল।’’ সাংসদের কথায়, ‘‘একটা বোমা তো আমার একেবারে সামনেই পড়ল। বাকিগুলো চারপাশে, মন্দিরের উপরে, মন্দিরের পাশে। সিআইএসএফ ওদের তাড়া করতেই পালাতে শুরু করল। পালানোর সময়েও বোমা মারতে মারতে গিয়েছে।’’
অর্জুন সিংহের দাবি, তাঁকে খুন করতেই এই হামলা চালানো হয়েছিল। পুলিশ এবং প্রশাসনের মদতেই তৃণমূল একনাগাড়ে তাঁকে খুন করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলে রাজ্য বিজেপির সহ-সভাপতি তথা শিল্পাঞ্চলের দাপুটে নেতার অভিযোগ।
আরও পড়ুন: গত দু’মাসের মধ্যে সংক্রমণের হার সর্বনিম্ন, সুস্থতার হার ৮৪.০২ শতাংশ
২০১৯ সালে তৃণমূল ছেড়ে অর্জুন বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর থেকেই ভাটপাড়া এবং সংলগ্ন এলাকা উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল। ভোটে অর্জুন জেতার পরে সে উত্তাপ আরও বাড়ে। তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষে মাসাধিক কাল ধরে বিরাট এলাকা বধ্যভূমি হয়ে উঠেছিল। একের পর এক মৃত্যুর খবর আসছিল ভাটপাড়া ও সংলগ্ন এলাকা থেকে। হার মেনে নিতে না পেরে প্রতিশোধ নিচ্ছে তৃণমূল, অভিযোগ ছিল অর্জুনের। আর তৃণমূল পাল্টা বলছিল যে, ভোটে জিতেই এলাকাকে বিরোধীশূন্য করতে চাইছেন অর্জুন।
ভাটপাড়া তথা ব্যারাকপুরের পরিস্থিতি নিয়ে গোটা রাজ্যে হইচই শুরু হয় সে সময়ে। পুলিশের প্রবল তৎপরতায় শেষ পর্যন্ত যুদ্ধক্ষেত্র সুলভ ছবিটা বদলায়। কিন্তু উত্তেজনা পুরোপুরি প্রশমিত করা যায়নি।
আরও পড়ুন: মেট্রো-রাজ্য বৈঠক, সেপ্টেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকেই পরিষেবা শুরুর প্রস্তুতি
সম্প্রতি বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগ সামনে এনে অর্জুন সিংহের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা দায়ের করা হয়েছে। অর্জুনের বাড়িতে তল্লাশিও চালানো হয়েছে। কিছুতেই এঁটে উঠতে না পেরে এখন জেলে পাঠানোর চক্রান্ত করছে তৃণমূল তথা সরকার, দাবি করছিলেন অর্জুন। এলাকায় উত্তেজনাও ফের বাড়তে শুরু করেছিল। বৃহস্পতিবার সাংসদের বাড়ি ঘিরে ধরে যে ভাবে বোমাবাজি চলল, তাতে পরিস্থিতির আরও অবনতি হওয়ার আশঙ্কা থাকছেই। পুলিশের সামনেই এ দিন গোটা ঘটনা ঘটেছে এবং পুলিশ পুরোপুরি নিষ্ক্রিয় থেকেছে বলে সাংসদের অভিযোগ।
তাঁকে তৃণমূল খুন করার চেষ্টা করছে বলে অর্জুন বার বার এ দিন দাবি করেন। তবে এ বিষয়ে তৃণমূলের কোনও প্রতিক্রিয়া এখনও মেলেনি। উত্তর ২৪ পরগনা জেলা তৃণমূলের সভাপতি তথা রাজ্যের মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বা শিল্পাঞ্চলের শীর্ষ তৃণমূল নেতা তথা নৈহাটির বিধায়ক পার্থ ভৌমিকের বক্তব্য জানার চেষ্টা করা হয়েছিল। দু'জনের কেউই ফোন ধরেননি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy