অনুপমকেই সমর্থন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতির।
বাংলায় বিজেপি নেতৃত্বের ‘পরিচালন সমস্যা’ নিয়ে দলের কেন্দ্রীয় নেতা অনুপম হাজরা যা বলছেন, ‘ঠিকই বলেছেন’— মনে করেন দিলীপ ঘোষ।
রবিবারই ফেসবুক লাইভ করে অনুপম জানিয়েছিলেন, বাংলায় বিজেপি-র পুরনো নেতাদের কাজ করতে অসুবিধা হচ্ছে। এমনকি রাজ্যে বিজেপির একের পর এক নেতার ইস্তফা দিতে চাওয়ার প্রসঙ্গ তুলে বিজেপির কেন্দ্রীয় সম্পাদক অনুপম বলেছিলেন, কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের বিষয়টি ভেবে দেখা উচিত। রাজ্য বিজেপিতে যখন একের পর এক নেতা দল ছাড়ার কথা বলছেন, উপনির্বাচনে হার নিয়ে রাজ্য নেতৃত্বকে দোষারোপ করছেন, তখন অনুপমের এই মন্তব্য প্রসঙ্গে বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ কী মনে করেন, জানতে চাওয়া হয়েছিল। সোমবার দিলীপ কোনও রাখঢাক না করেই বলেন, ‘‘অনুপম বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা। তিনি রাজ্য-নেতাদের পরামর্শ দিতেই পারেন। তাঁর কথা রাজ্য-নেতাদের শোনা উচিত।’’
দিলীপের এই মন্তব্য বিজেপির রাজ্য নেতৃত্বের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। কারণ ২৪ ঘণ্টা আগেই দিলীপের উত্তরসূরী রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেছিলেন, ‘‘দলের যে রীতি এবং নিয়ম, তা মেনেই সকলকে চলতে হবে। কারণ দলের শৃঙ্খলা সবার আগে। কারও কোনও অসুবিধা হলে রাজ্য নেতৃত্বকে জানানোর পরেও যদি তিনি সন্তুষ্ট না হন, তবে রাজ্যের পর্যবেক্ষককে জানাতে পারেন। এর পরেও সর্বভারতীয় সভাপতিকে জানানোর সুযোগ থাকবে।’’ সেই মন্তব্যের পরে দলের সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপের এই প্রতিক্রিয়ায় কি বিজেপির অন্তর্দ্বন্দ্বের তত্ত্বই আরও স্পষ্ট হল না? প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই।
দুই উপনির্বাচনের ফল প্রকাশের পরই রাজ্য বিজেপির নেতৃত্বে ক্রমশঃ স্পষ্ট হচ্ছিল অন্তর্দ্বন্দ্ব। সৌমিত্র খাঁ-সহ দলের বহু নেতা রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বের পরিচালন ক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছিলেন। অনুপমের অভিযোগ সেই চলতি ধারায় সাম্প্রতিক সংযোজন। রবিবারই বিজেপির রাজ্য কমিটির সম্পাদক পদ ছাড়ার কথা জানিয়ে রাজ্য নেতৃত্বের কাছে ইস্তফাপত্র পাঠিয়েছেন বিজেপির মুর্শিদাবাদের বিধায়ক গৌরীশঙ্কর ঘোষ। ইস্তফার সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন বহরমপুরের বিজেপি বিধায়ক কাঞ্চন মৈত্র, মুর্শিদাবাদের দুই নেতা বাণী গঙ্গোপাধ্যায় এবং দীপঙ্কর চৌধুরীও। এমনকি বিজেপির নদিয়া জেলার ১০ নেতাও বিভিন্ন পদ ছাড়ার কথা জানিয়ে চিঠি দিয়েছেন রাজ্য নেতৃত্বকে। এই প্রসঙ্গ তুলেই রাজ্য নেতৃত্বের দিকে আঙুল তোলেন অনুপম। ফেসবুকে লেখেন, ‘যাঁরা এত দিন মাটি কামড়ে পড়ে ছিলেন, তাঁরা ইস্তফা দিচ্ছেন!!’ পরে ফেসবুক লাইভে বলেন, ‘‘অনেক মতামত দিলাম রাজ্য নেতৃত্বকে, তাঁরা গ্রহণ করলেন না। বোধ হয় কারও আঁতে ঘা লেগেছে। তাই এ বার যা বলার কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে বলব।’’ অনুপমকে সমর্থন করে দিলীপ বলেছেন, ‘‘ঠিকই বলেছেন। উনি কেন্দ্রীয় নেতা। ওঁর এখানকার লোকেদের পরামর্শ দেওয়াই উচিত। আর রাজ্যের নেতারা সেই কাজ করবেন। বাকি কথা কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে বলুন। ওঁর তো যোগাযোগ আছে। উনি তো (দিল্লিতে) যান। এখানকার খবর ওঁর দেওয়া উচিত।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy