বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। ফাইল চিত্র।
গোষ্ঠী-দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে আসার ঘটনা বিজেপিকে ছাড়ছে না। বর্ধমানে মঙ্গলবার এই ঘটনা ঘটল দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের সামনেই। দলের সাংগঠনিক বৈঠকে ঢুকতে না পেরে দিলীপবাবুর সামনে বিক্ষোভ দেখালেন বিজেপির যুব মোর্চার জেলা (বর্ধমান সদর) সহ-সভাপতি ইন্দ্রনীল গোস্বামী।
বর্ধমান শহরের ঘোড়দৌড়চটির দলীয় দফতরে এ দিন সাংগঠনিক বৈঠক করতে এসেছিলেন দিলীপবাবু। সেখানেই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হওয়ার সময়ে নিজেকে যুব মোর্চার নেতা দাবি করে ইন্দ্রনীলবাবু ঢুকতে যান। বাধা পেয়ে চিৎকার শুরু করে দেন তিনি। তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘‘আমাকে কেন ঢুকতে দেওয়া হবে না?’’ সে কথা শুনে দিলীপবাবু তাঁকে ঢুকতে দিতে বলেন। তখন তাঁকে আরও জোরে বলতে শোনা যায়, ‘‘আমার বাড়ি তিন বার ভাঙচুর হয়েছে। আজ কেন ঢুকতে দেওয়া হবে না?’’ দিলীপবাবু তাঁর সঙ্গে দেখা করে চিৎকার করতে নিষেধ করেন। তার পরেই কয়েক জন মিলে ইন্দ্রনীলবাবুকে দলীয় দফতরের বাইরে বার করে দেন।
গোদার বাসিন্দা ইন্দ্রনীলবাবু আরএসএসের স্বয়ংসেবক ছিলেন। সাত বছর ধরে তিনি বিজেপির সঙ্গে যুক্ত। বিজেপি সূত্রের খবর, দিলীপবাবু সঙ্ঘের প্রচারক থাকার সময় থেকে বর্ধমানে এসে ইন্দ্রনীলবাবুর বাড়িতেই উঠতেন, থাকতেন। সেই প্রসঙ্গ তুলে এ দিন দলীয় দফতরের বাইরে সাংবাদিকদের কাছে ইন্দ্রনীলবাবুর ক্ষোভ, ‘‘আমার বাড়িতে বসে দিনের পর দিন দিলীপবাবু বর্ধমানে সংগঠনের কাজ করেছেন। আজ আমাকে বলা হচ্ছে, ভিতরে ঢুকতে দেব না! কী জন্য?’’ তাঁর আরও ক্ষোভ, ‘‘তোলাবাজি, মস্তানি, গুন্ডামি যাঁরা করবেন, যাঁরা অন্য দলের লোকের কাছে টাকা খেয়ে দলটাকে হারিয়েছেন, যাঁরা নিজের বুথে বসেন না, তাঁরা আজকে দল চালাবেন? আমি মেনে নেব?’’
দিলীপবাবুকে ফের বলতে শোনা যায়, ‘‘চেঁচাবে না। উত্তেজনা তৈরি করছে বেশি!’’
বৈঠকের শেষে দিলীপবাবুর সঙ্গে দেখা করে দলের জেলা সম্পাদক শ্যামল রায়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন ইন্দ্রনীলবাবু। শ্যামলবাবু বলেন, ‘‘আমি ঘটনার বিন্দুবিসর্গ জানি না! ঘটনার সময়ে আমি বৈঠকের ঘরে ছিলাম।’’ দিলীপবাবু চলে যাওয়ার পরে রীতেশ তিওয়ারি ইন্দ্রনীলবাবুকে প্রকাশ্যে ভর্ৎসনা করেন। তিনি বলেন, ‘‘আপনি কি জেলা কমিটির সদস্য? নন তো! তা হলে ভিতরে যাবেন বলছিলেন কেন? খবর করতে চাইছিলেন? আপনার কিছু বলার থাকলে রাস্তায় না বলে নেতৃত্বের কাছে বলতে পারতেন।’’
পরে ইন্দ্রনীলবাবু বলেন, ‘‘আবেগের বশে কিছু বলে ফেলেছি। দলের নেতৃত্বের উপরে আমার অগাধ আস্থা রয়েছে। কিন্তু জেলার কয়েক জন নেতা যে ভাবে দলটাকে পরিচালনা করছেন, তাতে আমি ক্ষুব্ধ। তৃণমূলের সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে দল আন্দোলনে নামুক, এটাই আমার দাবি। দিলীপদার সঙ্গে কথা হয়েছে। বিষয়টি মিটে গিয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy