Advertisement
৩০ অক্টোবর ২০২৪
Suvendu Adhikari

রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসন নয়, বার্তা শুভেন্দুর

বিরোধী দলনেতা রবিবার কাঁথিতে বলেছেন, “কেন্দ্রকে বলব, পশ্চিমবঙ্গে রাষ্ট্রপতি শাসন চাই না। ভোটে জিতে বাংলার ক্ষমতা দখল করব। কেউ মুখ্যমন্ত্রী হতে চান না, আগ্রহী নন।”

ভোট-পরবর্তী হিংসায় আক্রান্তদের নিয়ে রাজভবনের সামনে ধর্না বিজেপি নেতা-কর্মীদের। রয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী, তথাগত রায়, তাপস রায়-সহ অন্য নেতারা। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য

ভোট-পরবর্তী হিংসায় আক্রান্তদের নিয়ে রাজভবনের সামনে ধর্না বিজেপি নেতা-কর্মীদের। রয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী, তথাগত রায়, তাপস রায়-সহ অন্য নেতারা। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা ও কাঁথি শেষ আপডেট: ১৫ জুলাই ২০২৪ ০৭:৩১
Share: Save:

রাজ্যে লোকসভা নির্বাচন পরবর্তী ‘সন্ত্রাস’ ও বিধানসভা উপনির্বাচনে ভোট ‘লুট’ নিয়ে সরব হয়েছে বিজেপি। এই আবহে এ বার প্রতিরোধের ডাক দিলেন বিজেপি নেতৃত্ব। গণ-আন্দোলনের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তনের কথা বললেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। যদিও দলের কয়েক জন নেতা ‘বদলার’ হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন। তবে হিংসা ও ভোট লুটের অভিযোগ করলেও তাঁরা যে রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসন চান না, সে কথা শুভেন্দু পরে কাঁথিতে সাংসদ সৌমেন্দু অধিকারীর সংবর্ধনা সভায় গিয়ে জানিয়েছেন। দিল্লিতেও এমনটা জানিয়ে এসেছেন বলে দাবি তাঁর।

বিরোধী দলনেতা রবিবার কাঁথিতে বলেছেন, “কেন্দ্রকে বলব, পশ্চিমবঙ্গে রাষ্ট্রপতি শাসন চাই না। ভোটে জিতে বাংলার ক্ষমতা দখল করব। কেউ মুখ্যমন্ত্রী হতে চান না, আগ্রহী নন।” সম্প্রতি দিল্লিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে দেখা করেছিলেন শুভেন্দু। সেই সূত্রেই তাঁর আরও বক্তব্য, “দিল্লিতে বলে এসেছি, পিছনের দরজা দিয়ে বিজেপি নবান্ন চায় না। রাজ্যপালের ক্ষমতা দিয়ে, রাষ্ট্রপতি শাসন চায় না। আমি তো চাই না। আমরা চাই, পশ্চিমবঙ্গকে উপদ্রুত রাজ্য ঘোষণা করা হোক।”

ভোট পরবর্তী ‘সন্ত্রাসে আক্রান্তদের’ নিয়ে এ দিন সকালে রাজভবনের সামনে ধর্নায় বসেছিলেন শুভেন্দুরা। এই কর্মসূচি নিয়ে টানাপড়েন চলছিল। শেষমেশ আদালতের অনুমতি নিয়ে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য রাজভবনের সামনে ধর্না দিয়েছে বিজেপি। সেখানেই তৃণমূলের বিরুদ্ধে ভোট লুটের অভিযোগ তুলে শুভেন্দু বলেছেন, “এই উপনির্বাচনে যাঁরা ভোট দিতে পারেননি ও যাঁরা আক্রান্ত, ১৯ তারিখ থেকে তাঁদের বাড়ি-বাড়ি পরিদর্শনে যাব আমি। যাবেন বিধায়কেরাও। ২১ তারিখ ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ পালন করা হবে।” ২১ তারিখ দুপুর ১টায় রাজ্যের প্রতিটি থানার সামনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাবে বিজেপি। যাঁরা ভোট দিতে পারেননি, তাঁদের জন্য আজ, সোমবার থেকে ‘এলওপি পোর্টাল’ চালু, ভোট দিতে না পারা ১০০ জনকে নিয়ে রাজভবনে আসা, ১৮ জুলাই দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে নন্দীগ্রামে মিছিল, বিদ্যুতের মাসুল বৃদ্ধির প্রতিবাদে ২২ তারিখ সিইএসসি ভবন অভিযানের মতো কয়েকটি কর্মসূচির কথাও জানিয়েছেন বিরোধী দলনেতা। পাশাপাশি, দলকে ‘নবান্ন অভিযানের’ প্রস্তাবও দেবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

ধর্না কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছিলেন অগ্নিমিত্রা পাল, অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়, তাপস রায়, কৌস্তভ বাগচী, সজল ঘোষ, অর্জুন সিংহ-সহ বিজেপি নেতারা। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে শুভেন্দুর পাশেই ছিলেন দলের প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি তথাগত রায়। কর্মসূচি কার্যত শেষের সময়ে এসেছিলেন দলের সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) অমিতাভ চক্রবর্তী, মহিলা মোর্চার রাজ্য সভানেত্রী ফাল্গুনী পাত্র। অগ্নিমিত্রা তৃণমূলের ‘অত্যাচারের’ বর্ণনা দিয়ে দাবি করেন, “ক্ষমতায় এলে বিরোধীদের সঙ্গে এই আচরণ করব না।” যদিও বদলের সঙ্গে বদলারও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন কৌস্তভ। তাঁদের ১০ জন মার খেলে, পাল্টা এক জনকে পাল্টা মারের নিদান দিয়েছেন সজল। পাশাপাশি, প্রাক্তন সাংসদ অর্জুন নির্বাচন কমিশন ও কেন্দ্রীয় বাহিনীর বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন। কেন্দ্রীয় বাহিনীর নোডাল অফিসার লালবাজারে পুলিশের সঙ্গে সমঝোতা করে তৃণমূলকে ভোটে সুবিধা করে দিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন অর্জুন। মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের (সিইও) ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন শুভেন্দু ও অর্জুন।

যদিও বিজেপির ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবসের’ ঘোষণাকে কটাক্ষ করে তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষের বক্তব্য, “সচিত্র পরিচয়পত্র অর্থাৎ গণতন্ত্র রক্ষার লড়াইয়ের দাবিতে ১৯৯৩-এর ২১ জুলাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে আন্দোলন হয়েছিল। মমতার সৈনিকদের বলিদানের দিন এটা। সেটাকে নকল করে প্রচারে থাকার জন্য এই সব করছেন অনেকে।”

অন্য বিষয়গুলি:

Suvendu Adhikari BJP TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE