প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র।
প্রকাশ্যে স্বীকার না করলেও আসন-সংখ্যা শূন্য হয়ে যাওয়া বামেদের ব্রিগেড সমাবেশে ভিড় দেখে ‘বিচলিত’ বঙ্গ বিজেপি। সূত্রের খবর, এই ভিড়ের প্রভাব যাতে নিচু তলার কর্মীদের মধ্যে না পড়ে, তাই পাল্টা ব্রিগেড সমাবেশ করার প্রস্তুতি নিচ্ছে তারা। চেষ্টা হচ্ছে, যাতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে নিয়ে আসা যায়। হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলির উদ্যোগে ‘লক্ষ কণ্ঠে গীতা পাঠে’র অনুষ্ঠানে ব্রিগেডে উপস্থিত থাকার কথা ছিল প্রধানমন্ত্রীর। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনি আসতে পারেননি। তাতে কর্মীদের মধ্যে কিছুটা ‘হতাশা’ ছিল। তার উপরে সিপিএমের যুব সংগঠনের ব্রিগেডে ভিড়ের ‘চমকে’ কিছুটা উদ্বেগে রয়েছেন তারা। ফলে, শীঘ্রই কর্মীদের উজ্জীবিত করতে প্রধানমন্ত্রীকে এনে ব্রিগেড ভরাতে চাইছে বঙ্গ বিজেপি।
সূত্রের খবর, ভোট ঘোষণার আগেই ব্রিগেডে মোদীকে এনে সভা করতে পারে বিজেপি। সেই সঙ্গে শিলিগুড়ির কাওয়াখালিতে প্রধানমন্ত্রীর একটি সভা হতে পারে। এ ছাড়া, কৃষ্ণনগর অথবা রানাঘাট, বীরভূম অথবা মালদহ, জঙ্গলমহলেও সভা করতে পারেন প্রধানমন্ত্রী।
সিপিএমের যুব সংগঠন ডিওয়াইএফআইয়ের ডাকে গত ৭ জানুয়ারি ব্রিগেডে সমাবেশের ভিড় সব মহলের নজর কেড়েছিল। সেই সভা থেকে সিপিএম নেতৃত্ব প্রত্যাশিত ভাবেই তৃণমূল ও বিজেপিকে এক বন্ধনীতে রেখে আক্রমণ করেন। রাজনৈতিক শিবিরের মতে, বাম-ব্রিগেডের ভিড় এবং ভাষা কিছুটা চাপে ফেলেছে বিজেপি নেতাদের। মুখে স্বীকার না করলেও, তাঁরাও মানছেন, এই ব্রিগেডের ফলে নিচু তলায় প্রভাব পড়তে পারে। ফলে, তৃণমূল-বিরোধী ভোটের একাংশ ভেঙে যেতে পারে। সম্ভবত এই আশঙ্কা থেকেই ফের সিপিএমকে আক্রমণের নিশানায় নিয়ে এসেছে বিজেপি। তাই ভিড় হলেও সিপিএম যে ভোট পাবে না, সেই বার্তা নিচু তলা পর্যন্ত পৌঁছে দিতে মরিয়া তারা।
দলের রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেছেন, ‘‘এর আগেও বামেদের ব্রিগেডে ভিড় হয়েছিল, তার পরে ভোটে শূন্য পেয়েছে। এ বারও তা-ই হবে!’’ বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর বক্তব্য ছিল, “বাংলার মানুষ খুনি সিপিএমকে ভোট দেবে না। এখানে ওরা তৃণমূলকে চোর বলবে আর নেতারা দিল্লিতে গিয়ে তৃণমূলের সঙ্গে কফি খাবে।’’ যাদবপুরের সভায় এ দিন ফের শুভেন্দু বলেছেন, ‘‘ভোট কেটে তৃণমূলকে সুবিধা করে দিতে সিপিএমের বুড়ো নেতারা মীনাক্ষীদের (মুখোপাধ্যায়) বলির পাঁঠা করছেন।’’ কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী সাধ্বী নিরঞ্জন জ্যোতি দলীয় কর্মসূচিতে যোগ দিতে এ দিন ব্যারাকপুরে ছিলেন। সেখান থেকে তিনিও সিপিএমকে আক্রমণ করেছেন। তাঁর বক্তব্য, “সিপিএম এখানে তৃণমূলের বিরোধিতা করছে। আর দিল্লিতে আসন ভাগাভাগি নিয়ে বৈঠক করছে।”
সূত্রের খবর, রাজ্য বিজেপির লোকসভা নির্বাচনের প্রস্তুতি বৈঠকেও এই বিষয়টি উঠেছিল। স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে রাজ্যের নেতারা বলেন, ব্রিগেডের ‘ভিড়’ নিয়ে ঘাবড়ানোর কিছু নেই। ভিড় হলেও ভোটে তার প্রভাব পড়বে না। কর্মীরা যেন এই নিয়ে না ভাবেন। বরং, নিজেদের যা কর্মসূচি আছে, সে সব যাতে ভাল ভাবে করা যায় সেই নির্দেশ দিয়েছেন।
বিজেপির এই বার্তা নিয়ে সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীর মন্তব্য, ‘‘এই রাজ্যে বিজেপি টিকে আছে তৃণমূলের বদান্যতায়। তাই ওরা ঘাবড়াবে কি না, সেটা তৃণমূলকে জিজ্ঞেস করে ঠিক করুক। বামপন্থীরা মানুষের দৈনন্দিন রুটি-রুজির দাবি নিয়ে কথা বলে। ব্রিগেডও হয়েছে সেই দাবি নিয়ে।” আর রাজ্য বিজেপির প্রধান মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্যের দাবি, “যাঁরা সে দিন ব্রিগেডে এসেছিলেন, তাঁরা রাজ্যে তৃণমূল শাসনের অবসান চান। তাঁরা রাজনৈতিক ভাবে সচেতন। তাই তাঁরা ভোট ভাগ হতে দেবেন না। ভোটের সময়ে ওই ভিড়ের ৭০% মানুষ বিজেপিকে ভোট দেবেন।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy