সাধারণ ভাবে কোনও পুরসভায় কেন খারাপ ফল হয়েছে জানার জন্য বিজেপি সংশ্লিষ্ট জেলা থেকে রিপোর্ট চেয়ে পাঠায়। কিন্তু এ বার শুধু ওই কমিটির উপরে নির্ভর না করে কাছাকাছি জেলার নেতাদের নিয়ে কমিটি গড়ে সমীক্ষা করার ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন এক রাজ্য নেতা।
শনিবারের বৈঠকে বক্তব্য রাখছেন সুকান্ত মজুমদার। নিজস্ব চিত্র
নতুন রাজ্য কমিটি গঠনের পরে শনিবার প্রথম জেলা নেতৃত্বকে নিয়ে বৈঠক ডেকেছিলেন সুকান্ত মজুমদার। আর সেই বৈঠকে না চাইলেও অন্যতম আলোচ্য বিষয় হয়ে ওঠে পুরভোটে ভরাডুবি। রাজ্য বিজেপি প্রথম থেকেই এই ফলের জন্য তৃণমূলের সন্ত্রাসকে দায়ী করে এসেছেন। অনেক জায়গায় সিপিএম দ্বিতীয় স্থানে উঠে আসা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে, ‘‘তৃণমূল অনেক জায়গায় সিপিএমের হয়েও ছাপ্পা ভোট দিয়েছে।’’ শনিবার জাতীয় গ্রন্থাগারের সভাকক্ষে হওয়া বৈঠকেও এমন বার্তা দেন তিনি। কিন্তু তাতে কাজের কাজ হয়নি। বরং, আসল কারণ জানার জন্য সমীক্ষা হওয়া প্রয়োজন বলে দাবি ওঠে। তবে তার আগেই রাজ্য বিজেপি-তে অভ্যন্তরীণ সমীক্ষার ভাবনা শুরু হয়েছে বলে গেরুয়া শিবির সূত্রে জানা গিয়েছে।
বিজেপি সূত্রে খবর, শনিবারের বৈঠকে সমীক্ষার দাবি তোলেন শিলিগুড়ির বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ। শিলিগুড়ি পুরনিগমের প্রাক্তন সিপিএম কাউন্সিলর এ বারেও নির্বাচনে লড়েন। কিন্তু পরাজিত হন। বিধানসভা নির্বাচনেও যাঁরা বিজেপি-কে ভোট দিয়েছেন তাঁরা কেন পুরভোটে মুখ ফিরিয়ে রইলেন, তা জানতে দলের চিরাচরিত রীতিতে জেলার থেকে রিপোর্ট তলব করার বাইরে অভ্যন্তরীণ সমীক্ষা প্রয়োজন বলে দাবি করেন তিনি।
২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে লাল পতাকা ছেড়ে গেরুয়া শিবিরে যোগ দেন একদা শিলিগুড়িতে সিপিএম নেতা অশোক ভট্টাচার্যের শিষ্য বলে পরিচিত শঙ্কর। ৩৫ হাজার ৫৯৬ ভোটে জিতে বিধায়ক হন। কংগ্রেস দ্বিতীয় আর সিপিএম তৃতীয় হয়েছিল। এ বার শিলিগুড়ির ২৪ নম্বর ওয়ার্ড অর্থাৎ ভারতনগরে প্রার্থী হয়ে সেই শঙ্কর চলে যান তৃতীয় স্থানে। তৃণমূলের প্রতুল চক্রবর্তী পান ২,০৮৫ ভোট। দ্বিতীয় স্থানে থাকেন নির্দল প্রার্থী বিকাশরঞ্জন সরকার। আর শঙ্কর পান ১,৬১৩ ভোট। তাঁর নিজের এলাকাতেও এমন ফল কেমন হল তার জন্য সমীক্ষা হওয়া দরকার বলে শনিবারের বৈঠকে শঙ্কর মন্তব্য করেন বলে জানা গিয়েছে।
সাধারণ ভাবে কোনও পুরসভায় কেন খারাপ ফল হয়েছে জানার জন্য বিজেপি সংশ্লিষ্ট জেলা থেকে রিপোর্ট চেয়ে পাঠায়। কিন্তু এ বার শুধু ওই কমিটির উপরে নির্ভর না করে কাছাকাছি জেলার নেতাদের নিয়ে কমিটি গড়ে সমীক্ষা করার ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন এক রাজ্য নেতা। ওই নেতা বলেন, ‘‘অনেক সময়ে জেলা নেতারা যে রিপোর্ট পাঠান, তাতে ত্রুটি থেকে যায়। দায় এড়াতে অনেক সময়ে নিজেদের ত্রুটি ঢাকার চেষ্টা থাকে। ফলে বাস্তব জানা যায় না এবং সেই মতো ব্যবস্থা নেওয়া যায় না।’’ ওই রাজ্য নেতার দাবি, এখনও পর্যন্ত এ নিয়ে চূড়ান্ত কোনও সিদ্ধান্ত না হলেও দল চাইছে পূর্ণাঙ্গ বিশ্লেষণ। দলের কোন কোন কর্মী কাজ করেছেন, কারা করেননি, কোন সমর্থকরা ভোট দিতেই গেলেন, না তা-ও জানার চেষ্টা হবে। সেই সঙ্গে খুঁজে দেখা হবে সংগঠনের কোথায় ত্রুটি থাকার কারণে দলের সমর্থকরা বুথমুখী হলেন না। এই সমীক্ষার কাজে দলের পুরনো কিন্তু অনুগত নেতাদের কাজে লাগানো হতে পারে বলেও গেরুয়া শিবির সূত্রে জানা গিয়েছে।
অভ্যন্তরীণ সমীক্ষা সম্পর্কে বিস্তারিত না বললেও তা যে হচ্ছে, স্বীকার করেছেন দলের রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তিনি বলেন, ‘‘শঙ্কর ঘোষ শুধু মুখে বলেননি, লিখিত ভাবে নিজের রিপোর্ট জমা দিয়েছেন। আর আমরাও সমীক্ষার কাজ শুরু করে দিয়েছি। আমরা সকলের কাছেই পরামর্শ চেয়েছি। কী করলে দলের ভাল হয়, তা বলুন। সবার যা মনে হচ্ছে, তা লিখিত ভাবে জানান।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy