Advertisement
৩০ অক্টোবর ২০২৪
CV Ananda Bose

আনন্দের ভাষণে দুর্নীতিকে আড়াল! অভিযোগে ‘চোর ধরো’ স্লোগান, বিধানসভায় ওয়াক আউট বিজেপির

রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের বক্তব্যে দুর্নীতিকে আড়াল করা হয়েছে, এই অভিযোগ তুলে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে অধিবেশন কক্ষেই বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন বিজেপি বিধায়করা।

CV Ananda Bose and protesting BJP legislators

আনন্দের ভাষণে দুর্নীতিকে আড়াল! অভিযোগে ‘চোর ধরো’ স্লোগান, বিধানসভায় ওয়াক আউট বিজেপির। ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৪:৪১
Share: Save:

বাজেট অধিবেশনের সূচনায় রাজ্যপালের ভাষণকে ঘিরে উত্তপ্ত হল রাজ্য বিধানসভা। রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের বক্তব্যে দুর্নীতিকে আড়াল করা হয়েছে, এই অভিযোগ তুলে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে অধিবেশন কক্ষেই বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন বিজেপি বিধায়করা। পরে ‘চোর ধরো, জেল ভরো’ স্লোগান তুলে বিধানসভা থেকে ওয়াক আউট করেন তাঁরা।

বিক্ষোভ, স্লোগানের মধ্যে রাজ্যপাল অবশ্য তাঁর পুরো বক্তব্যই পেশ করেন। এক সময় তুমুল বিক্ষোভ এবং স্লোগান দেওয়ার জেরে রাজ্যপালের বক্তব্য শোনা না গেলেও থামেননি আনন্দ বোস। লিখিত বক্তব্য পাঠ করে বিধানসভা চত্বর থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময়ও বিজেপি বিধায়করা রাজ্যের শাসকদল তৃণমূলের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে থাকেন।

বুধবার শোকপ্রস্তাব পাঠ শেষ হতেই বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন বিজেপি বিধায়করা। আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকিকে জেলবন্দি করে রাখা হয়েছে কেন, সরকারপক্ষের কাছে সেই কৈফিয়ত চেয়ে স্লোগান তোলেন পদ্মশিবিরের বিধায়করা। রাজ্যপাল বক্তব্য পেশ করা শুরু করলে তাঁরা স্লোগান তোলেন, “চাকরি চোর সরকার, আর নেই দরকার।” রাজ্যপাল ৯ নম্বর অনুচ্ছেদ পড়তেই বিক্ষোভ এবং স্লোগানের মাত্রা আরও বৃদ্ধি পায়। ওই অনুচ্ছেদে লেখা ছিল, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে রাজ্যের শান্তির আবহ বজায় রয়েছে এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির পরিবেশ অক্ষুণ্ণ রয়েছে।

রাজ্যপাল এই অংশটি পড়া শেষ করা মাত্রই বিধানসভার ভিতরে হইচই শুরু করে দেন বিজেপি বিধায়করা। তাঁরা অভিযোগ করেন যে, রাজ্যপাল রাজ্যের ‘পর্বতসমান দুর্নীতি’কে আড়াল করে সরকারের গুণগান গাইছেন। ‘রাজ্যপালের মিথ্যা ভাষণ মানছি না, মানব না’ স্লোগান তুলে তাঁরা বিধানসভার কক্ষত্যাগ করেন। রাজ্যপালের লিখিত বক্তব্যের প্রতিলিপিও ছিঁড়ে ফেলে দেন তাঁরা। বিরোধী দলনেতা ‘লজ্জা, লজ্জা’ স্লোগান তুললে তাঁর সঙ্গে সুর মেলান বাকি বিজেপি বিধায়করাও। বিক্ষোভরত বিজেপি বিধায়কদের ভিড়ে দেখা যায় বীজপুরের বিধায়ক তথা বিজেপিত্যাগী সাংসদ অর্জুন সিংহের পুত্র পবন সিংহকেও। বাবার মতো পুত্রও তৃণমূলে ফিরতে পারেন বলে মাঝে জল্পনা তৈরি হয়েছিল। সে সবের মধ্যেই পবনকে দেখা গেল পদ্মশিবিরেই।

বিধানসভা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় বিরোধী বিধায়কদের উদ্দেশে হাতজোড় করে প্রণাম করেন রাজ্যপাল। তখনও রাজ্যপাল এবং রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে দেখা যায় বিজেপি বিধায়কদের। বিক্ষোভের মধ্যে রাজ্যপাল যাতে নির্বিঘ্নে বিধানসভা থেকে বেরোতে পারেন, সে বিষয়ে আগে থেকেই সজাগ ছিল প্রশাসন।

সচরাচর রাজ্য আইনসভায় বাজেট অধিবেশনের আগে রাজ্যপাল যে বক্তব্য পাঠ করেন, তা সরকারের তরফেই লিখে দেওয়া হয়। বিরোধী দলগুলি অভিযোগ করে থাকে যে, এই লিখিত বক্তব্যে শুধু সংশ্লিষ্ট সরকারের গুণগানই করা হয়, বাস্তব চিত্রের প্রতিফলন রাজ্যপালের ভাষণে ধরা পড়ে না। কোনও কোনও ক্ষেত্রে রাজ্যপালরা সরকারের লিখে দেওয়া বক্তব্য পাঠ না করে স্বতন্ত্র বক্তব্য রাখতে চাইলেও, তা নিয়ে বিস্তর জলঘোলা হয়। যেমনটা হয়েছিল তামিলনাড়ুর রাজ্যপাল কিংবা পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের ক্ষেত্রে। ধনখড় অবশ্য পুরো বক্তব্য পাঠ না করে আংশিক বক্তব্য পাঠ করে বিধানসভা ত্যাগ করেছিলেন। তবে সরকারের লিখে দেওয়া বক্তব্য পাঠ করবেন রাজ্যপাল, এমনটাই দস্তুর।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE