কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষকদের নিয়ে বিজেপির সাংগঠনিক বৈঠক। আইসিসিআর - এ। নিজস্ব চিত্র।
নবান্ন অভিযানের জের টেনে রাজ্যে তৃণমূল সরকারের পুলিশের বিরুদ্ধে ‘অত্যাচারে’র অভিযোগে চাপ বাড়াচ্ছেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। কেন্দ্রীয় অনুসন্ধানকারী দল তথ্য সংগ্রহ করে যাওয়ার পরে রবিবার শহরে এসে রাজ্য বিজেপির ভারপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক সুনীল বনসল, মঙ্গল পাণ্ডে ও সহ-পর্যবেক্ষক আশা লকড়া শাসক তৃণমূলের উপরেই গোলমালের দায় চাপিয়েছেন। তারই পাশাপাশি, আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনে কেন্দ্রীয় বাহিনীর দাবিতে প্রয়োজনে আদালতে যাওয়ার ভাবনা-চিন্তাও রাজ্য বিজেপি নেতাদের সঙ্গে কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষকদের বৈঠকে উঠে এসেছে। বিজেপির এই কৌশলের বিরুদ্ধে পাল্টা সরব হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসও। তাদের অভিযোগ, বাংলায় জনভিত্তি নেই বলেই বিজেপি এই সব কৌশলের আশ্রয় নিচ্ছে।
বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতারা এ দিন নবান্ন অভিযানে পুলিশের ‘অত্যাচারে’ আহত দলীয় কর্মীদের সঙ্গে দেখা করেন। প্রথমে মেডিক্যাল কলেজ ও পরে তাঁদের বাড়ি যান। আহত দলীয় কাউন্সিলর মীনা দেবী পুরোহিতের সঙ্গেও তাঁরা কথা বলেন। রাতে আইসিসিআর প্রেক্ষাগৃহে রাজ্য বিজেপির পদাধিকারীদের সঙ্গে বৈঠক করেন বনসলেরা। সেখানে রাজ্যে কী পরিস্থিতিতে তাঁদের তৃণমূলের সঙ্গে লড়াই করতে হচ্ছে, পুলিশের কেমন ভূমিকা, তা নিয়ে কেন্দ্রীয় নেতাদের ‘অবহিত’ করেন বিজেপির রাজ্য নেতা ও বিধায়কেরা। উঠে আসে কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে পঞ্চায়েত ভোট করানোর দাবিও। বৈঠকে ছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষও। পরে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘‘পঞ্চায়েত ভোট করে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। তারা এখানে তৃণমূলের শাখায় পরিণত হয়েছে! ওখানে আবেদন করে কিছু হবে না। কেন্দ্রীয় বাহিনীর জন্য প্রয়োজনে আদালতে গিয়ে দাবি জানাতে হবে।’’
রাজ্য তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ পাল্টা বলেছেন, ‘‘গত বিধানসভা নির্বাচন বা পরবর্তী কালের উপনির্বাচন তো কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়েই হয়েছিল। তাতে বিজেপির কী ফল হয়েছে? জনভিত্তি নেই বলে এই সব বলছেন। প্রতিটা নির্বাচন পরিচালনার একটা ব্যবস্থা আছে, সাংবিধানিক কাঠামো আছে। বিজেপি সেই কাঠামোটা ভাঙতে চায়।’’ তাঁর আরও মন্তব্য, ‘‘ত্রিপুরায় পঞ্চায়েত ভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকে? সেখানে কত শতাংশ আসন বিজেপি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতেছিল?’’
তার আগে এ দিন আহত কর্মীদের সঙ্গে দেখা করে বিজেপির সহ-পর্যবেক্ষক আশা দাবি করেন, ‘‘বলা হচ্ছে, বিজেপি কর্মীরা পুলিশকে আক্রমণ করেছে, গাড়ি জ্বালানো হয়েছে। তৃণমূলের গুন্ডারাই কোনও না কোনও ভাবে এই কাজ করে বিজেপির নামে মিথ্যা প্রচার করছে।’’ যার জবাবে মহিলা তৃণমূলের রাজ্য সভানেত্রী তথা মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলেছেন, ‘‘যারা হামলা করেছে, তাদের তো ছবি আছে! সেখান থেকে অভিযুক্তদের ধরা হচ্ছে। অপরাধ করে ধরা পড়ে গিয়ে এখন ওঁরা আড়াল করার চেষ্টা করছেন।’’ সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীরও কটাক্ষ, ‘‘মানুষের রুটি-রুজির সমস্যায় বিজেপি নেই। দুর্নীতি নিয়ে কথা বলারও অধিকার নেই, কারণ আদালতের নির্দেশে তদন্ত হলেও কেন্দ্রীয় সংস্থা ৭-৮ বছরে শেষ করতে পারেনি। একটা নবান্ন অভিযান করে সেটা নিয়ে নানা কথা বলে চলেছে!’’ বিজেপির পর্যবেক্ষক বনসল এ দিন বলেছেন, ‘‘আহত কর্মীদের সঙ্গে কথা হয়েছে। আমরা রিপোর্ট তৈরি করছি। খুব তাড়াতাড়ি কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে জমা দেব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy