Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
BJP

বজরংবলি পুজোয় শুভেন্দু, দিলীপ হিন্দু সম্মেলনে, হিন্দু তাস এ বার প্রকাশ্যেই

শুভেন্দুর বক্তব্যে বিজেপি-র ‘হিন্দু হাওয়া’ তৈরির প্রচেষ্টার যদিও বা ইঙ্গিত থেকে থাকে, তা হলে তাতে ‘সিলমোহর’ পড়ছে দিলীপের কর্মসূচিতে।

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ ডিসেম্বর ২০২০ ১৪:১১
Share: Save:

মঙ্গলবার নন্দীগ্রামে বজরংবলির পুজো করেছেন পূর্ব মেদিনীপুরের ভূমিপুত্র শুভেন্দু অধিকারী। তার পরদিন, বুধবার গড়বেতায় হিন্দু সম্মেলন পশ্চিম মেদিনীপুরের ভূমিপুত্র দিলীপ ঘোষের। এর কোনওটাই সরাসরি ‘বিজেপি-র কর্মসূচি’ নয়। কিন্তু ‘হিন্দু কর্মসূচি’ তো বটেই। সেখানে রাজ্য বিজেপি-র দুই প্রথম সারির নেতার সাগ্রহ উপস্থিতি বিধানসভা ভোটের বিজেপি-র ‘হিন্দু তাস’ প্রকাশ্যে এনে ফেলল বলেই মনে করা হচ্ছে। পরপর দু’দিন রাজ্য বিজেপি-র অন্যতম দুই মুখের ধর্মীয় অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়া রাজনৈতিক ভাবে ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ তো বটেই। প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার নন্দীগ্রামের পুজোর আয়োজক সংস্থা ছিল ‘বজরং কমিটি’। বুধবার বিকেলে গড়বেতায় হিন্দু সম্মেলন হচ্ছে ‘হিন্দু জাগরণ মঞ্চ’-এর নামে। গড়বেতার কর্মসূচি নিয়ে দিলীপের বক্তব্য, ‘‘আমায় আমন্ত্রণ জানিয়েছে। আমি যাচ্ছি। আমি হিন্দু সমাজের প্রতিনিধি। তাই কোথাও হিন্দু আক্রান্ত হলে আমি সেখানে যাই। যাব।’’ বুধবার গড়বেতার গুলঞ্চ সিনেমা মাঠে অম্তত পাঁচ হাজার মানুষের জমায়েতের পরিকল্পনা রয়েছে। সেখানে মূল বক্তা দিলীপ।

নামে ব‌জরংবলির পুজো হলেও মঙ্গলবার নন্দীগ্রামে মিছিলও করেছেন শুভেন্দু। মিছিলে পরে বলেছেন, ‘‘আমি সনাতন হিন্দু ধর্মে বিশ্বাসী। আমাদের ব্রাহ্মণ পরিবার। সকালে স্নানের পর গায়ত্রীমন্ত্র জপ করে বাড়ি থেকে বেরোই।’’ সদ্য বিজেপি-তে যোগ- দেওয়া শুভেন্দুর মুখে এমন স্পষ্ট ধর্মীয় কথা আগে শোনা গিয়েছে বলে কেউ মনে করতে পারছেন না। যেমন কেউ মনে করতে পারছেন না, তৃণমূলের সাংসদ বা বিধায়ক থাকার সময় এত স্পষ্ট করে তিনি হিন্দুত্বের কথা বলেছেন কি না। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি যে ‘সংঘবদ্ধ হিন্দুভোট’ নিজেদের ঝুলিতে পুরতে চাইছে, সেটি শুভেন্দু আরও স্পষ্ট করেন মঙ্গলবার সন্ধ্যায় খড়দহের একটি জনসভায়। তৃণমূলের ভোট কুশলী প্রশান্ত কিশোরের সাম্প্রতিক একটি সাক্ষাৎকারের প্রসঙ্গে টেনে নাম না করেই শুভেন্দু ওই সমাবেশে বলেন, ‘‘কে এক জন এসেছেন না বাইরে থেকে। কী কুমার নাকি কিশোর কুমার ন্যাশনাল চ্যানেলে বলছে, ‘৩০ হামারা রিজার্ভ হ্যায়’। তো মাননীয় কুমারকে বলতে হবে, সেই ৩০ শতাংশ কারা। আর ৩০ যদি ওঁদের থাকে, তা হলে বাকি ৭০ শতাংশ তো সব পদ্মফুলে!’’ স্পষ্ট উল্লেখ না করলেও শুভেন্দু যে ৭০ শতাংশ হিন্দুভোটের কথা বলেছেন, তা তাঁর ইঙ্গিত থেকে যেমন স্পষ্ট, তেমনই তা স্পষ্ট রাজ্য বিজেপি নেতাদের কাছেও।

আরও পড়ুন: এবার বিজেপি-তে যাচ্ছেন তৃণমূলের ছাত্রনেতা সুজিত

মঙ্গলবার শুভেন্দুর বক্তব্যে বিধানসভা ভোটের আগে বিজেপি-র ‘হিন্দু হাওয়া’ তৈরির প্রচেষ্টার যদিও বা ইঙ্গিত থেকে থাকে, তা হলে তাতে ‘সিলমোহর’ পড়ছে দিলীপের বুধবারের কর্মসূচিতে। প্রসঙ্গত, রাজ্য বিজেপি সভাপতির দায়িত্ব নেওয়ার আগে আরএসএসের প্রচারক হিসেবে ‘হিন্দু জাগরণ মঞ্চ’-এর রাজ্য সংগঠন সম্পাদক ছিলেন দিলীপ। তাঁর পুরোন সংগঠনকে তিনি বিধানসভা ভোট বৈতরণী পার করে নীলবাড়ি দখলে কাজে লাগাতে চাইছেন বলেই মনে করা হচ্ছে। কিন্তু এ ভাবে হিন্দু সম্মেলনে যোগ দেওয়া কি সংখ্যালঘু মুসলিম ভোটারদের কাছে ‘অন্য বার্তা’ দেবে না? দিলীপের ইঙ্গিতপূর্ণ জবাব, ‘‘আমি হিন্দু সমাজকে বার্তা দিতে চাইছি।’’

আরও পড়ুন: ‘দানবের সঙ্গে হবে লড়াই মহামানবের’

‘হিন্দু জাগরণ মঞ্চ’ অবশ্য দাবি করেছে, বুধবারের সম্মেলনের সঙ্গে রাজনীতি বা নির্বাচনের কোনও সম্পর্ক নেই। সংগঠনের রাজ্য সংগঠন সম্পাদক তাপস বারিকের দাবি, ‘‘আমাদের কাজ হিন্দু সমাজকে সংগঠিত করা। আমরা সেই কাজটাই করছি। ভোট আসবে-যাবে। এ বার যারা ক্ষমতায় আসবে, তারাও একদিন চলে যাবে। কিন্তু হিন্দু সমাজ থাকবে।’’ একই সঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, নতুন বছরে এমন হিন্দু সম্মেলন আরও হবে। জানুয়ারি এবং ফেব্রুয়ারি মাসে রাজ্যের প্রতি ব্লকে সম্মেলন করার পরিকল্পনা নিয়েছে মঞ্চ। তাপসের দাবি, ‘‘রাজ্যে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান উঠেছে। বাংলা যাতে বাংলাদেশ না হয়ে যায়, তাই সতর্ক করা হবে হিন্দু সমাজকে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Suvendu Adhikary Dilip Ghosh BJP
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy