পুরনির্বাচনে শাসকদলের সন্ত্রাসের প্রতিবাদে চুঁচুড়ায় জেলাশাসকের দফতরে বিজেপির বিক্ষোভ। সোমবার বিকেলে। নিজস্ব চিত্র
গতবার সাকুল্যে তবু একটি আসন ছিল। এ বার সেটিও খুইয়ে চন্দননগরের পুরভোটে তৃতীয় স্থানে নেমে গেল বিজেপি।
ফল প্রকাশের পরে সোমবার দুপুরে জয়ী তৃণমূল প্রার্থীরা যখন চন্দননগরে গণনাকেন্দ্রে শংসাপত্র নিতে যাচ্ছেন, তখন তৃণমূলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস এবং ভোট লুটের অভিযোগ তুলে চুঁচুড়ায় প্রতিবাদ মিছিল করে গেরুয়া শিবির। জেলাশাসকের দফতরে স্মারকলিপি দেয় তারা। বিক্ষোভও দেখানো হয়। বিক্ষোভে শামিল হন দলের হুগলি সাংগঠনিক জেলা সভাপতি তুষার মজুমদার, রাজ্য সম্পাদক দীপাঞ্জন গুহ, জেলা যুব সভাপতি সুরেশ সাউ প্রমুখ।
পুরসভায় ৩২টি ওয়ার্ড (একটি ওয়ার্ডে ভোট হয়নি বিজেপি প্রার্থী মারা যাওয়ায়) মিলিয়ে ভোট দিয়েছেন লক্ষাধিক মানুষ। ফল বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে, সব মিলিয়ে তৃণমূলের পকেটে এসেছে ৬২ হাজারের বেশি ভোট। বামেরা পেয়েছেন ৩০ হাজারের কিছু বেশি ভোট। সেই জায়গায় গেরুয়া শিবিরের প্রাপ্ত ভোট মাত্র ১০ হাজার।
পরিসংখ্যানই বলে দিচ্ছে, পদ্ম-শিবিরের কতটা বিপক্ষে গিয়েছে চন্দননগরের রায়। ৬ নম্বর ওয়ার্ডে নির্দলেরও পিছনে থেকে বিজেপি চতুর্থ হয়েছে। তিনটি ওয়ার্ডে তাদের প্রার্থীদের প্রাপ্ত ভোট তিন অঙ্কে পৌঁছয়নি। একমাত্র ২৬ নম্বর ওয়ার্ডে বিজেপির স্থান দ্বিতীয়। এখানে তৃণমূল ১৭৭৪ ভোট পেয়েছে। বিজেপি পেয়েছে ১০৭৮টি ভোট। গত পুরভোটে এই ওয়ার্ডটি বিজেপি জিতেছিল।
এমন ফলের জন্য তৃণমূলকে বিঁধে হুগলি সাংগঠনিক জেলা সভাপতি তুষারের অভিযোগ, ‘‘ প্রহসন হয়েছে। প্রশাসনকে কাজে লাগিয়ে রাজনীতি করা হয়েছে। বাইরে থেকে লোক এনে ছাপ্পা দেওয়া হয়েছে। প্রার্থীকে মারা হয়েছে। গণতন্ত্র লুন্ঠিত হয়েছে। সঠিক ভাবে, মানুষকে সঙ্গে নিয়ে ভোট হলে বিজেপির সঙ্গে তৃণমূল পারবে না।’’
অভিযোগের গুরুত্ব দিচ্ছেন না মন্ত্রী তথা চন্দননগরের তৃণমূল বিধায়ক ইন্দ্রনীল সেন। তাঁর কটাক্ষ, ‘‘ওদের আর কোনও রাজনৈতিক কার্যকলাপ নেই। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে রাস্তা করে দিয়েছেন, সেই রাস্তায়, তাঁর লাগিয়ে দেওয়া আলোর নীচে বসে ওদের বিক্ষোভ করতে হচ্ছে।’’
তিন বছর আগে লোকসভা ভোটে জিতে হুগলির সাংসদ হন বিজেপির লকেট চট্টোপাধ্যায়। চন্দননগর পুর-এলাকায় তিনি অল্প ব্যবধানে পিছিয়েছিলেন। এর পর থেকে সময় যত গড়িয়েছে, ক্রমেই পিছিয়েছে পদ্ম-শিবির। হার হয়েছে ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটেও। এ বার পুরভোটে জিততে নন্দীগ্রামের দলীয় বিধায়ক তথা বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী থেকে রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, তাঁর পূর্বসূরি দিলীপ ঘোষ, রাহুল সিংহ, সাংসদ অর্জুন সিংহদের মতো তাবড় নেতাদের প্রচারে নামিয়েও জনাদেশ পেল না বিজেপি।
সাধারণ মানুষের একাংশ অবশ্য মনে করছেন, করোনা পর্বের সময় থেকেই বিজেপির নেতা-কর্মীদের একটি বড় অংশের জনসংযোগ কমেছে। গঞ্জের বাজার এলাকার এক যুবকের কথায়, ‘‘বিজেপি ভেবেছিল, মাঝপথে পুরবোর্ড ভেঙে যাওয়ার কথা বলেই জনসমর্থন পেয়ে যাবে। পরিষেবার খামতি নিয়ে আন্দোলন সে ভাবে করেইনি।’’ শহরের পাদ্রিপাড়ার বাসিন্দা, আইনজীবী অর্ণব মিত্র ‘‘শাসক দলের খামতির কথা মানুষের কাছে তুলে ধরতে সঠিক ভাবে পারেনি বিজেপি। তা ছাড়া, রাজ্যের বিভিন্ন জনমুখী প্রকল্প অনেক বেশি করে মানুষ গ্রহণ করেছে। তার সুফল তৃণমূল পেয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy