Advertisement
১৯ নভেম্বর ২০২৪
BJP

BJP: চার দশকের পুরনো ঝাঁপি খুলতে মরিচঝাঁপি অভিযানে বিজেপি, সব জেলায় আন্দোলনের ভাবনা

মরিচঝাঁপিতে হত্যকাণ্ডের অভিযোগ ওঠে ১৯৭৯ সালের জানুয়ারি মাসে। বলা হয়, ২৪ থেকে ৩১ জানুয়ারি চলছিল উদ্বাস্তু হত্যালীলা।

অভাবের মরিচঝাঁপি।

অভাবের মরিচঝাঁপি। ফাইল চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ জানুয়ারি ২০২২ ১৪:০৮
Share: Save:

ইতিহাসের গর্ভে হারিয়ে যেতে বসা মরিচঝাঁপি-কাণ্ডকে ফের বাংলা রাজনীতির আলোয় নিয়ে আসতে চায় বিজেপি। গত বিধানসভা নির্বাচনে গেরুয়া শিবির আশানুরূপ ফল না করতে পারলেও দলের হিসেবে উদ্বাস্তু ভোটে অনেকটাই দখল রাখতে পেরেছে। দু’বছর পরের লোকসভা নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে এখন থেকেই সেই উদ্বাস্তু ভোটকে পদ্ম শিবিরে এককাট্টা করতে উদ্যোগী হচ্ছে দল। আর সেই লক্ষ্যে আগামী সোমবার সুন্দরবনের মরিচঝাঁপি অভিযানের কর্মসূচি নিয়েছে দলের তফসিলি মোর্চা। জানা গিয়েছিল, সেই অভিযানের নেতৃত্ব দিতে পারেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তবে শেষ পর্যন্ত যা খবর তাতে, জেলায় জেলায় ওই দিন মরিচঝাঁপি নিয়ে তদন্তের দাবিতে যে অবস্থান হবে তারই একটিতে থাকবেন শুভেন্দু। হুগলিতে থাকার কথা তাঁর। মরিচঝাঁপি যাবেন দলের তফসিলি মোর্চার রাজ্য সভাপতি সুদীপ দাস, বিজেপি-র রাজ্য সাধারণ সম্পাদক অগ্নিমিত্রা পাল এবং রাজ্য মুখপাত্র দেবজিৎ সরকার।

প্রসঙ্গত, মরিচঝাঁপিতে হত্যকাণ্ডের অভিযোগ ওঠে ১৯৭৯ সালের জানুয়ারি মাসে। বলা হয়, ২৪ থেকে ৩১ জানুয়ারি চলছিল উদ্বাস্তু হত্যালীলা। ৩১ জানুয়ারিকেই তাই মরিচঝাঁপি অভিযানের দিন হিসেবে বেছেছে বিজেপি। ঠিক করেছে রাজ্যের প্রতিটি জেলাকেন্দ্র ওই দিন দুপুরে একটি করে অবস্থান বিক্ষোভ হবে। উদ্বাস্তুদের সম্পর্কে বিজেপি-র অবস্থান স্পষ্ট করার পাশাপাশি ওই দিন মরিচঝাঁপির ইতিহাসও তুলে ধরা হবে। কর্মসূচির মূল দায়িত্বে থাকা সুদীপ আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেন, ‘‘আজ থেকে প্রায় ৪৩ বছর আগের এই ঘটনার কথা এই প্রজন্মের অনেকের কাছেই অজানা। অনেকে নাম শুনলেও প্রশাসনিক সহায়তায় সিপিএম ঠিক কোন পর্যায়ের অত্যাচার করেছিল, সেই ইতিহাস জানেন না অনেকেই। আমরা সেই কালো অধ্যায় মনে করিয়ে দিতে চাই।’’

তখন সদ্যই রাজ্যে ক্ষমতায় এসেছে বামেরা। রাজ্যে মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু আর কেন্দ্রে প্রধানমন্ত্রী মোরারজি দেশাইয়ের জনতা সরকার। সেই সময়ে সদ্য জন্ম নেওয়া বাংলাদেশ থেকে আসা উদ্বাস্তুদের একাংশ দণ্ডকারণ্য হয়ে সুন্দরবনের মরিচঝাঁপি দ্বীপে গিয়ে ডেরা বেঁধেছিলেন। খবর পেয়ে রাজ্য সরকার তাঁদের সরাতে পুলিশ পাঠায়। উদ্বাস্তুদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ বাধে। পুলিশের গুলিতে বহু উদ্বাস্তুর মৃত্যুর অভিযোগ ওঠে। বহু লোক গ্রেফতার হন। রাজ্যে তা নিয়ে বিতর্ক ও আন্দোলন হয়েছিল। কিন্তু কেন্দ্র তখন বামফ্রন্ট সরকারেরই পিছনে দাঁড়িয়েছিল।

সেই ঘটনার উল্লেখ করে বিজেপি নেতা সুদীপ বলেন, ‘‘যাঁরা নিরুপায় হয়ে বাংলাদেশে অত্যাচার থেকে বাঁচতে সীমানা পার করে এসে প্রাণ বাজি রেখে মরিচঝাঁপির মতো বিপদসঙ্কুল দ্বীপে বসবাস শুরু করেছিলেন, বিনা প্ররোচনায় তাঁদের পুলিশ মেরে তাড়িয়ে দিয়েছিল। তাঁদের নিয়ে নতুন করে সমীক্ষা করা দরকার। একই সঙ্গে উদ্বাস্তুদের সম্পর্কে বামপন্থীদের আসল মনোভাব কী, সেটা নতুন প্রজন্মকে মনে করানো দরকার বলেই এই কর্মসূচি।”

এখন বিজেপি মরিচঝাঁপির ঝাঁপি খুলতে চাইলেও রাজ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরেই সেই উদ্যোগ নিয়েছিলেন। মরিচঝাঁপি থেকে বেঁচে পালিয়ে যাওয়া মানুষেরা এখন কোথায় আছেন, কেমন আছেন, তার সমীক্ষাও শুরু করে তৃণমূল সরকার। বিজেপি-র দাবি, ক্যানিং, হিঙ্গলগঞ্জ ও আশপাশের অঞ্চলে মরিচঝাঁপি থেকে আসা অনেক পরিবারের বসবাস রয়েছে। তাঁরা কেমন রয়েছেন, বিভিন্ন সরকারি সুযোগ সুবিধা তাঁরা পান কি না, কী করে তাঁদের কেন্দ্রীয় সরকারি বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধা দেওয়া যেতে পারে, সে ব্যাপারেও আগামী দিনে উদ্যোগ নেবে গেরুয়া শিবিরের তফসিলি মোর্চা ও উদ্বাস্তু সেল।

অন্য বিষয়গুলি:

BJP Marichjhapi
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy