পুলিশের ধরপাকড়।—ছবি এএফপি।
অযোধ্যায় রাম মন্দিরের ভূমিপুজোকে ‘স্মরণীয়’ করে রাখতে বাংলা জুড়ে উৎসব পালন করল বিজেপি এবং গেরুয়া শিবির। লকডাউনের পরোয়া না করে মিছিল, পাত পেড়ে খাওয়ানো, গা ঘেঁষাঘেঁষি করে পুজো তো হলই। কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্ত অশান্তি হল, বাধা দিতে গিয়ে পুলিশও আক্রান্ত হল বুধবার। যদিও বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের দাবি, লকডাউনের বিধি মেনেই তাঁদের পুজো চলছিল। পুলিশের বাধার পিছনে ‘বিশেষ উদ্দেশ্য’ আছে। কুমারটুলি, বাগুইআটি দমদম পার্ক-সহ কলকাতার নানা জায়গাতেও রাম-পুজোর আয়োজন হয়েছিল।
উৎসব ঘিরে অশান্তির বড় ঘটনা ঘটেছে দিলীপবাবুর লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে খড়্গপুরে। তালবাগিচা রথতলায় এ দিন বিজেপি কর্মীদের সতর্ক করার পরেও পুজো বন্ধ না হওয়ায় বেশ কয়েক জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ধৃতদের নিয়ে যাওয়ার সময় ইটবৃষ্টি শুরু হয় বলে অভিযোগ। তাতে আহত হন এসডিপিও সুকোমল দাস এবং এক কনস্টেবল। বিজেপির নেতা তুষার মুখোপাধ্যায়ের অভিযোগ, “পুলিশ আমাদের কর্মীদের মারধর করে, গ্রেফতার করেছে।” পুলিশ জানিয়েছে, খড়্গপুর টাউন থানায় ৭০ জন ও গ্রামীণ থানায় ৩০ জনকে গ্রেফতার করা হয়। ধৃতদের মধ্যে বিজেপির খড়্গপুর বিধানসভার পর্যবেক্ষক অভিষেক আগরওয়ালও রয়েছেন। যদিও দিলীপবাবুর অভিযোগ, ‘‘খড়্গপুরে মন্দির থেকে আমাদের কর্মীকে কোথাও পুলিশ তুলে নিয়ে গিয়েছে। কোথাও রাম মন্দিরকে পর্দা দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছে। মানুষ নিয়ম মেনে পুজোপাঠ করলে তাতে যদি বাধা দেয়, তার পরিণাম সহ্য করতে হবেই।’’
উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জায়গায় লকডাউন ভাঙার জন্য পুলিশের সঙ্গে বিজেপির মিছিলে থাকা লোকেদের ধস্তাধস্তি হয়। সন্ধ্যায় ইংরেজবাজার শহরে বিজেপির কার্যালয়ের সামনে জমায়েত করেন কিছু কর্মী সমর্থক। পুলিশ গিয়ে মারধর করে বলে অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ দেখান কর্মী-সমর্থকেরা। হাজির হন সাংসদ খগেন মুর্মু। কিছু সমর্থক উত্তেজিত হয়ে মিছিল শুরু করলে ফের লাঠিচার্জ করে ছত্রভঙ্গ করে দেয় পুলিশ। বহরমপুরের বেশ কয়েকটি এলাকায় ৮-১০ বছরের বালকদের রাম সাজিয়ে স্কুটারে বসিয়ে পাড়ায় ঘোরাতে দেখা গিয়েছে কয়েক জনকে। অভিযোগ, বাচ্চাদের না ছিল ‘মাস্ক’, মানা হয়নি দূরত্ব-বিধি। এর আগে রামনবমীর শোভাযাত্রায় হাতে অস্ত্র দিয়ে বাচ্চাদের শামিল করার অভিযোগ উঠেছিল বিজেপির বিরুদ্ধে।
আরও পড়ুন: রামপুজোর জৌলুস কাঁথি ও নন্দীগ্রামে
বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপবাবু, কেন্দ্রীয় সম্পাদক রাহুল সিংহ, জাতীয় কর্মসমিতির সদস্য মুকুল রায়-সহ দলের সব নেতা-নেত্রী, সাংসদ, বিধায়ক ও অন্যান্য জনপ্রতিনিধি এ দিন নিজের নিজের বাড়িতে রাম মন্দিরের ভূমিপূজো উপলক্ষে উৎসব পালন করেন। বিজেপির নেতা-কর্মীরা দুপুরে বাড়িতে শঙ্খ বা ঘণ্টাধ্বনি করেন, সন্ধ্যায় প্রদীপ জ্বালান। দিলীপবাবুর অভিযোগ, রাজ্য সরকার সমাজের মধ্যে বিভেদ তৈরি করতে এ দিন লকডাউন বহাল রেখেছে। রাম মন্দিরের ভূমিপুজোকে স্মরণীয় করে রাখতে ৫ অগস্ট জাতীয় ছুটি ঘোষণার দাবিও তুলেছেন তিনি।
বিক্ষিপ্ত ভাবে হলে এ দিন কিছু ক্ষেত্রে রামপুজোয় শামিল হয়েছিলেন তৃণমূল নেতারাও। তৃণমূলের সাংসদ সৌগত রায় বলেন, ‘‘রামরাজ্যের কথা বলেছিলেন গাঁধীজি। তার সঙ্গে বিজেপির কোনও সম্পর্ক নেই। যে উত্তরপ্রদেশে রামমন্দির তৈরি হচ্ছে, সেখানে এখনও দাঙ্গা হয়, দলিতদের উপরে অত্যাচার হয়। এই সঙ্কটের সময়েও বিজেপি তার রাজনৈতিক উদ্দেশ্য সিদ্ধ করতে চাইছে।’’
আরও পড়ুন: বৈচিত্রে ঐক্যের বার্তা মমতার, রাজভবনে উৎসব ধনখড়ের
দিলীপবাবুর অবশ্য দাবি, ‘‘পুলিশ বাড়ির মধ্যে ঢুকে পেটাচ্ছে। মহিলাদেরও ছাড়া হয়নি। মন্দিরের মধ্যে পুজো হচ্ছে। সেখান থেকে অপরাধীদের মতো টেনে টেনে বার করা হচ্ছে পূজারী এবং ভক্তদের। এটার কোনও প্রয়োজন ছিল না। সুস্থ পরিবেশকে অসুস্থ করা হল। সরকার ভয় পেলে এবং হতাশ হলে এই ধরনের ব্যবহার করে!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy